নোয়াখালীতে যৌতুকের দাবী গৃহবধুকে হত্যা করায় ৭ জনের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা
নোয়াখালী বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুন্যাল নোয়াখালীতে ১১ (ক)/৩০ ধারা ৭ জনের নাম উল্লেখ করে আজ রবিবার সকাল ১১.৩০ টা একটি মামলা করেছে গৃহবধু ইমামা আক্তার ইমুর মা রহিমা বেগম। মামলা সূত্রে জানা যায়, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ইং সালে লক্ষ্মীপুর জেলার সদর উপজেলার সিংহাপুর, সাকিনস্থ বর্তমান নোয়াখালী জেলার সদর উপজেলার ৮নং এওজবালিয়া ইউনিয়নের চর শুল্লুকিয়া গ্রামের (দুলাল বেপারী বাড়ী/ কাউয়াওলা বাড়ীর) নুরুল হুদার ছেলে সুমন (৩৩)-এর সহিত লক্ষ্মীপুর জেলার সদর উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের মৃত লিয়াকত আলীর মেয়ে ইমামা আক্তার ইমুর হাজিরানা মজলিশে শুভ বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়।
বিবাহের পর সুমনের ঔরশে ও ইমামা আক্তার ইমুর গর্ভে সুবর্ণা নাম্নী ও তানহা দুইটি কন্যা জন্মগ্রহণ করে। বিবাহের সময় সুমনের শাশ্বড়ী তার মেয়ের সুখের কথা বিবেচনা করিয়া সুমনের পরিবারে চাহিদা মত নগদ এক লক্ষ টাকা ও তিন ভরী স্বর্ণালংকার ও ফার্ণিচার দিয়াছেন। পরে আরও দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা হাওলাত হিসাবে নিয়াছে সুমনের পরিবার। ইহার পরও যৌতুকের নেশায় দিনের পর দিন বৃদ্ধি হতে থাকে।
সুমনের পরিবারের সকল লোকজন গত ১৬ জানুয়ারী ২০১৫ইং বিকাল আনুমানিক ৩ ঘটিকার সময় ইমামা আক্তার ইমুর স্বামী মোঃ সুমন (৩৩) শশুর নুরুল হুদা (৫৫), দেবর স্বপন (২০), শাশুড়ী ছায়রা খাতুন (৪৮), ননস বিবি নয়ন (৩৬), ননদ লিপি (২৫), শহীদ উল্যাহ (২৮) সহ সুমনের ঘরে একত্রিত হইয়া ইমামা আক্তার ইমুকে বলে তার স্বামী সুমনকে বিদেশে পাঠাইবে তার জন্য দুই লক্ষ টাকা যৌতুক হিসাবে ইমামা আক্তার ইমুকে তার পিতার বাড়ী থেকে আনিয়া দেওয়ার জন্য বলে। বাদীর মেয়ে এক দাম্পত্য জীবনের দিকে চাহিয়া অপেক্ষা করিতে থাকে। স্বামীর পরিবারের লোকজন দুই লক্ষ টাকার আশ্বাস না পাইয়া সুমনের পরিবারের লোকজন থেকে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দমকি অব্যাহত রয়েছে।
১৭ জানুয়ারী সুমনের পরিবারের সকল সদস্যগণ বাদীর কন্যা ভিকটিম ইমামা আক্তার ইমুর নিকট হইতে পুনরায় যৌতুক চাহিয়া তাহা পাইতে ব্যর্থ হইয়া ইমামা আক্তার ইমুর শরীরের গলায়, বুকে , পিঠে, গালে এলোপাতাড়ী বাড়ি মারিয়া ও স্বামী সুমন গামছা দিয়া ইমামা ইমুর গলা পেছাইয়া মুখে কিল, ঘুষি মারিয়া মারাত্মক জখম করে। আসামীগণ একে অপরকে সহযোগীতা এবং প্রত্যক্ষ ভূমিকায় ভিকটিম ইমামা আক্তার ইমুর মুখে জোরপূর্বক বিষ ঢালিয়া দেয় এবং জোরপূর্বক মুখ চিপিয়া ধরে এবং অপরাপর আসামীগণ ভিকটিম ইমুর হাত পা জোরপূর্বক ধরিয়া রাখে। এভাবে মারধর করিয়া জখম করে বিষয় ঢালিয়া দিয়া উক্ত ইমুকে হত্যা করিয়াছে মামলায় জানা যায়।
আরো জানা যায় ইমুর মুখে চারদিকে রক্তা চেঁছড়ানো ও থেতলানো জখম আছে মুখের দ্ইু পাশ দিয়া দুর্গন্ধ যুক্ত ফেনা বাহির হতে থাকে। ১৭ জানুয়ারী দিবাগত রাত ১১.৩০ ঘটিকার সময় ইমুর স্বামী ইমুর মাকে ফোন করে বলে আপনার মেয়ে খুব অসুস্থ্য তাড়াতাড়ি আসি দেখিয়া যান। ১৮ জানুয়ালী দুপুর ১২ ঘটিকার সময় ঘটনারস্থলে বাদীর পার্শ্ববর্তী জাল রজিনা আক্তার, ফাতেমা ও ছেলে ওসমান গণি নিয়া ঘটনারস্থলে ইমুর স্বামীর বাড়ীতে আসে। যৌতুকের দাবীতে যখন বিষ প্রয়োগ করে ইমুকে হত্যার বিষয়ে অবহিত হয় এবং তৎ মর্মে লোকজন বলাবলি করিতেছেন।
কিছু দুঃখজনক বিষয় ইমুর স্বামীর পরিবারের লোকজন ইমুকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতলে ময়না তদন্তে নিয়ে আসলে ও দাফনের সময় কেউ আসে নাই বলে জানান। আজ রবিবার সকাল ১১.৩০ ঘটিকার সময় বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল নোয়াখালীতে একটি মামলা করেন ইমামা ইমুর মা রহিমা বেগম। মামলা নং- ১১৮/১৫ইং ধারা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (ক)/৩০ ধারা আদালত আমলে নিয়া নোয়াখালী জেলার সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত ভার প্রদান করেন।
মন্তব্য চালু নেই