নেতাকর্মীদের ক্লান্তি দূর করলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

আওয়ামী লীগের সম্মেলনে নেতাকর্মীদের ক্লান্তি দূর করতে অনুষ্ঠিত হলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দেশবরেণ্য শিল্পীদের পরিবেশনায় এ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। ২০তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত সংস্কৃতিবিষয়ক উপ-কমিটির আয়োজনে এ পরিবশনা হয়।

শনিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া সম্মেলনে দেশ বরেণ্য শিল্পীদের কণ্ঠে গাওয়া হয় জাতীয় সংগীত। এরপর ছিল ‘উৎসব সংগীত’। এটি লিখেছেন কবি কামাল চৌধুরী এবং সুর করেছেন বাপ্পা মজুমদার। ‘এখন সময় বাংলাদেশের/ এখন সময় আমাদের’ শীর্ষক উৎসব সংগীতটির আবহে পঞ্চাশ জনেরও বেশি শিল্পী নৃত্য পরিবেশন করেন।

এরপর ‘তোরা সব জয়োধ্বনি কর’, ‘মানুষ ভজলে সোনার হবে’ ও ‘সংকুচেরও বিহ্বলতা নিজেরে অপমান’ ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’ ও ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে’ গানের সঙ্গে ছিল নৃত্য।

সারাদিনে আমন্ত্রিত অতিথি ও বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতাদের বক্তব্য শেষ হয় বিকেলে। এরপরই প্রস্তুতি চলতে থাকে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আওয়ামী লীগের আন্দোলন-সংগ্রাম নিয়ে সাজানো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনের।

ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সন্ধ্যায় আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল দলীয় সংগীত। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা সমবেতভাবে দেশের গান পরিবেশন করেন। এ সময় স্ক্রিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরপর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীরা গেয়ে শোনান ‘ধনধান্যে পুষ্পে ভরা’ ও ‘নোঙর তোলো তোলো’। এরপর পরিবেশিত হয় সমবেত নৃত্য।

বাচিকশিল্পী আহ্কামউল্লাহর একক আবৃত্তির পর দ্বৈত কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথের গান পরিবেশন করেন সাজেদ আকবর ও সালমা আকবর। এরপর দেশজ চিন্তার গান নিয়ে মঞ্চে আসেন ঢাকা সাংস্কৃতিক দলের শিল্পীরা।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী তিমির নন্দী, ফকির আলমগীর, মনোরঞ্জন ঘোষাল, শাহীন সামাদ, মনোয়ার হোসেন, বুলবুল মহলানবীশ প্রমুখ শিল্পীরা ‘নোঙর তোল তোল সময় যে হলো হলো’, ‘ধনধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদেরই বসুন্ধরা’ এই দুটি গান পরিবেশন করেন। পৃথক পৃথকভাবে নজরুল ও রবীন্দ্রনাথের গান নিয়ে আসেন যথাক্রমে শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও খায়রুল আনাম শাকিল।

গানের সুর থামতেই নূপুরের ধ্বনি নিয়ে মঞ্চে আসেন মুনমুন আহমেদ ও তার দল। নৃত্য শেষে শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায় ভাওয়াইয়া গান পরিবেশন করেন।

এ আয়োজনে বান্দরবানের বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠীর সম্মিলিত পরিবেশনায় অংশ নেয় বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক একাডেমি। এর পর একক কণ্ঠে আবৃত্তি পরিবেশন করেন ঝর্না সরকার। সদ্য প্রয়াত বহুমাত্রিক লেখক সৈয়দ শামসুল হকের প্রতিশ্রদ্ধা নিবেদনস্বরূপ গণসঙ্গীতশিল্পী ফকির আলমগীর পরিবেশন করেন সৈয়দ শামসুল হকের দুটি গান—‘এ সূর্যের উদয়ের পথ, শহীদের খুনে লাল’ ও মুহাম্মদ সামাদের লেখা ‘মুজিব আমার স্বপ্ন-সাহস, মুজিব আমার পিতা’।

এছাড়া এই আয়োজনে বাউল শফি মন্ডল, জলের গান, মমতাজ, দিনাত জাহান মুন্নী, কনা, সাইমুর মুনীর কোনাল, পারভেজ আহমেদ ও মেহেদী হাসান গান গেয়ে আগত অতিথিদের মাতিয়ে রাখেন।

পুরো আয়োজনের উপস্থাপনায় ছিলেন শমী কায়সার, ডা. নুজহাত চৌধুরী, আসলাম শিহির, মিজানুর রহমান সজল, আনজাম মাসুদ ও শাহাদাৎ হোসেন নিপু।

দলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত সাংস্কৃতিক উপ-কমিটির আহ্বায়ক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘এটা সত্য বলেই বিশ্বাস করি যে, আওয়ামী লীগ এবং এদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে আওয়ামী লীগের যোগসূত্রতা এক ও অবিচ্ছেদ্য। সে কারণেই আমরা দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে নেতাকর্মী ও বিদেশি অতিথিদের সামনে উপস্থাপন করেছি।’



মন্তব্য চালু নেই