নিরাপত্তার জন্য গানম্যান চাইলেন এমপিরা
নিজেদের নিরাপত্তার জন্য গানম্যান প্রোটেকশন চেয়েছেন এমপিরা। তারা বলেন, মন্ত্রী, সংসদীয় কমিটির সভাপতি, সরকারের সচিব, জেলার ডিসি গানম্যান পান। কিন্তু এই সংসদের আড়াইশ এমপির কোনো নিরাপত্তা নেই। কেউ নিরাপত্তা পাবে কেউ পাবে না-তা হবে না। সবাইকে নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে আনতে হবে। এসময় সংসদে উপস্থিত এমপিরা টেবিল চাপড়ে তাদের সমর্থন জানান।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে এমপিদের নিরাপত্তার এ দাবি তোলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ ও জাসদের কার্যকরী সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল।
সংসদে প্রথমে এ নিয়ে বক্তব্য দেন কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনি বলেন, মাননীয় স্পিকার পুলিশের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রের সকল গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তার বিষয়ে সর্তক করা হয়েছে। মন্ত্রী ও মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিরা গানম্যান দেওয়া হয়। রাস্তায় চলাচলের সময় গাড়ি প্রটেকশন পান। বড় বড় ব্যবসায়ীদের প্রোটেকশনের জন্য গানম্যান দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আমরা যারা সংসদ সদস্য, আমাদের নিরাপত্তা কোথায় ? সংসদ সদস্যদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব আপনার। মন্ত্রী এমপি সবাইকে নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে আনতে হবে।
তিনি আরো বলেন, দিনে রাতে আমাদের সব সময় সাধারণ জনগণের কাছে যেতে হয়। আর যারা সন্ত্রাসী তারা দেখবে কোন আক্রমন সহজতর হবে। তারা সেটাই করবে। কিন্তু আমরা জনগণের সেবা করলেও আমরা কোনো গানম্যান পাই না। আমাদের কোন নিরাপত্তা নেই। কাফনের কাপড় পাঠিয়ে, মোবাইলে এসএমেস পাঠিয়ে নানাভাবে আমাদের হুমকি দেওয়া হয়। এসব হুমকিকে আমারা আমলে নেই না। কিন্তু প্রতিনিয়ত যদি এভাবে হুমকির মধ্য দিয়ে যেতে হয়, বিশেষ করে এখন ভিন্ন প্রেক্ষাপট। পুলিশের সবোর্চ্চ পর্যায় থেকে সতর্ক করা হয়েছে। তাই মন্ত্রী এমপি সবাইকে নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে আনতে হবে।
মইন উদ্দীন খান বাদল বলেন, এমপিদের গানম্যান দেওয়া শুধ নিরাপত্তার বিষয় নয় এটা রাষ্ট্রাচার বা ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্টসেরও বিষয়। বঙ্গবন্ধুর আমলের আইন অনুযায়ী জনপ্রতিনিধির ওপর কোন গণকর্মচারী থাকতে পারে না। কিন্তু এখন এরশাদ আমলের প্রিসিডেন্স চলছে। জেলার ডিসিরও গানম্যান আছে। সরকারের সচিবদেরও আছে। এফবিসিসিআইরও নেতা পয়সাওয়ালা ব্যবসায়ীদেরও আছে। কিন্তু ২শ-আড়াইশ এমপিদের কোন প্রোটেকশন নেই। তাদের ঘর-বাড়ির নিরাপত্তা আছে। কিন্তু তারা মসজিদে যাবে না সভা সমাবেশে যাবে না? সেখানে তাদের প্রোটেকশন কোথায়? এমপিদের নিরাপত্তার কি হবে। তারা কি বাজার স্কুল-কলেজে যাবেননা। তাদের নিরাপত্তা কে দেবে? প্রোটেকশন শুধু নিরাপত্তার জন্য এটা রাষ্ট্রাচারেরও প্রশ্ন। তাহলে সবার নিরাপত্তা তুলে দেন। নিরাপত্তা কাউকে দেবেন কাউকে দেবেন না-তা হবে না।
তিনি বলেন, এ জাতীয় সংসদ আছে বলেই সরকার জঙ্গিবাদ বিরোধী কার্যক্রম দৃঢ়তার সাথে মোকবেলা করে চলছে। আমরা বাজেট করি ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার। আর এ সংসদের আড়াইশ এমপির গানম্যান দিতে পারবেন না।
তিনি আরো বলেন, এমন কোন পরিস্থিতি যাতে না হয় শুধু জানাজায়ই পড়ে যাবো। অসম্মানজনক ভাবে মরতে চাইতে না।
মন্তব্য চালু নেই