মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে কৃষিমন্ত্রী

‘নিজেদের ঘর সামলে উপদেশ ভিক্ষা দিতে আসেন’

সম্প্রতি ঢাকার দুই ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, ‘আগে নিজেদের ঘর সামলান, তারপর অন্যদের উপদেশ ভিক্ষা দিতে আসবেন।’

রাজধানীর কাওরানবাজারের টিসিবি মিলনায়তনে শনিবার বিবিসি সংলাপ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বিবিসির করেসপন্ডেট ওয়ালিউর রহমান মিরাজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ওয়ালিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সি আর আবরার।

রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান বলেছেন, ‘জাতিসংঘকে বাংলাদেশের সিটি করেপোরেশন নির্বাচন নিয়ে ভুল ধারণা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে জাতিসংঘ মহাসচিব তার ভুল বুঝতে পেরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফোন করে সরি বলেছেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘকে বলা হয়েছিল সিটি নির্বাচন অনেকটা জাতীয় নির্বাচনের মতোই। কিন্তু আদতে এটি হচ্ছে একটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন।’

অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশে বিশেষ করে থাইল্যান্ডে বাংলাদেশী শ্রমিক পাচারের ঘটনায় সরকার উদ্বিগ্ন। তবে এ ঘটনার জন্য রোহিঙ্গারাই দায়ী। কারণ তারা নিজেদের দেশে যেতে চায় না। তারা অন্য দেশে যেতে চায়। তারাই থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় নতুন রুট তৈরি করেছে। আর এ রুটে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশী অনেক চাকরি প্রার্থী পাড়ি জমাতে গিয়ে মৃত্যুর মুখে পড়ছে।’

মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় আগে শ্রমিক রফতানি বন্ধ ছিল। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই শ্রমবাজার উন্মুক্ত করে দেয়। তারপরও অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিকদের আশানুরূপভাবে বিদেশে পাঠানো যাচ্ছে না। তার ফলে বেকার যুবকদের মধ্যে অনেক সময় হতাশারও সৃষ্টি হতে পারে। আর হতাশা থেকেও অনেকে অতিরিক্ত ঝুঁকি নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধানের সঠিক মূল্য পাচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠছে। কিন্তু সরকার কৃষিতে ভর্তুকি অব্যাহত রেখেছে। তারপরও যদি বড় ধরনের কোনো সমস্যা হয় তাও সরকার ভেবে দেখবে।’

তিনি বলেন, ‘সরকার চাল রফতানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের চিন্তা করছে।’

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সি এস আবরার বলেন, ‘বেকার সমস্যা থেকে যুবকরা ঝূঁকিপূর্ণ জেনেও বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। এক্ষেত্রে আমাদের সমুদ্রে নিয়োজিত কোস্টগার্ডও দায় এড়াতে পারে না।’

তিনি কোস্টগার্ডের পাশাপাশি র‌্যাব ও পুলিশকেও মানব পাচার রোধে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরাধ করেন।’

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সিটি নির্বাচন কোনো নির্বাচনই হয়নি। নির্বাচন কমিশনের আচরণ সরকারের অনুগত আজ্ঞাবহ দাসের মতোই মনে হয়েছে। নির্বাচন কমিশন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়েছে। আগামীতে এই কমিশনের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে না।



মন্তব্য চালু নেই