নাস্তিকদের আস্ফালন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: হেফাজত

ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক-মুরতাদদের আস্ফালন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন সংগ্রাম চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বরের সমাবেশে আসা নিহতদের পরিবার এবং আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন হেফজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও আহ্বায়ক আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী। একইসঙ্গে হেফাজতে ইসলামের সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনারও দাবি জানান তিনি।

সোমাবার দুপুরে রাজধানীর নতুন বাজার জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসায় আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান। ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে নিহতদের স্মরণে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর এই আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।

আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, হেফাজতে ইসলাম যে ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করেছিল তা কোনো শ্রেণী বা গোষ্ঠীর দাবি নয়। এটা সকল ধর্মের, সকল শ্রেণীর মানুষের সার্বভৌমত্বের দাবি। হেফাজতে ইসলাম শান্তি এবং নিরাপত্তায় বিশ্বাস করে। হেফাজতের ১৩ দফা দাবি মেনে না নেওয়ায় আজ জনজীবনে নিরাপত্তা নেই। হত্যা, গুম বেড়ে চলেছে। হেফাজতের ১৩ দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য এ সময় সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সংগঠনের যুগ্ম-সদস্য সচিব মো.ফজলুল করিম কাশেমী বলেন, ভারতের ইশারায় করা হামলায় শহীদদের তালিকা আমাদের কাছে রয়েছে। ১০ হাজার জন এখনও আহত অবস্থায় রয়েছেন। এদের অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। পরিবেশ তৈরি হলে নিহত-আহতদের পরিবারকে সকলের সামনে আনা হবে।

যুগ্ম-সদস্য সচিব মওলানা আহম্মদ আলী বলেন, শাপলা চত্বরে আমরা কাউকে ক্ষমতায় বসাতে বা কাউকে ক্ষমতা চ্যুত করতে যাইনি। আমাদের আন্দোলন সফল হয়েছে। নাস্তিকরা লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে। যাদের হাতে রক্ত লেগেছে তাদের জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। সে কারণেই ৫ জানুয়ারি সৃষ্টি হয়েছে। বাংলার মানুষ যত দিন ৫ মে মনে রাখবে ততদিন এই সরকার প্রত্যাখিত হবে।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন যুগ্ম-আহ্বায়ক মওলানা আব্দুর রহিম সুফি, যুগ্ম-সদস্য সচিব মওলানা শফিক উদ্দিন, অধ্যাপক মওলানা আব্দুল করিম, সদস্য সচিব মো.ওবায়দুল্লাহ ফারুক, সংগঠনের প্রচার সেলের সদস্য মুফতি আব্দুল মালেক প্রমুখ।

এদিকে, রাজধানীতে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের এক বছর পার হতে চললেও ওই ঘটনায় দায়ের করা ৪২টি মামলার একটিরও তদন্ত শেষ করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ বলছে, মামলাগুলো বহুমাত্রিক, তাই দেরি হচ্ছে।

গত বছরের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরের সমাবেশকে ঘিরে হেফাজতে ইসলাম ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। দিনব্যাপী এই তাণ্ডবের সময় হত্যা, গাছকাটা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়। ওইদিন হাজার হাজার হেফাজত কর্মী শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয় এবং পুরো এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়।

এই অবস্থতায় মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থাকায় সবগুলো ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। এরপরেই মধ্যরাতে পুলিশ র‌্যাব এবং বিজিবি যৌথ অভিযান চালিয়ে হেফাজত কর্মীদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। হেফাজত কর্মীদের উচ্ছেদ করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে হাজার হাজার লোক নিহত হয়েছে- এমন অভিযোগ উঠলেও কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।



মন্তব্য চালু নেই