নারায়নগঞ্জ সিটি নির্বাচনে শামীম-আইভী দ্বন্দই বিএনপির পুঁজি!
আসন্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডা: সেলিনা হায়াত আইভী ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমানের দ্বন্দকে পুঁজি করে নির্বাচনের বৈতরণী পার হতে চাইছে বিএনপি।
নাসিক নির্বাচন ইস্যুতে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী দুই নেতার মত বিরোধ ও দ্বন্দের সুযোগ নিয়ে নির্বাচনের মাঠে বজিমাত করার স্বপ্ন দেখছে দলটি। আর তাই আওয়ামী লীগের দুই নেতার মধ্যে বিরোধকে আরো উস্কে দিয়ে ফায়দা হাসিল করতে চাচ্ছে নাসিকে বিএনপি সমর্থকরা।
ঘটনাসূত্রে প্রকাশ, দীর্ঘ দিন যাবত নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের সাথে দ্বন্দ চলছিল নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা: সেলিনা হায়াত আইভীর। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে সম্প্রতি তৃণমূলের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে শামীম ওসমানের সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেনকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড মনোনয়ন না দিয়ে আইভীকে প্রদান করার পর উভয়ের মধ্যে বিরাজমান দ্বন্দ আরো প্রকট হয়ে উঠে।
যে কারণে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে দলীয় মেয়র প্রার্থী আইভীকে নির্বাচিত করতে একত্রে কাজ করার লক্ষ্যে দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শামীম ওসমান, আইভীসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দদের গণভবনে তলব করে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন। এবং শামীম ওসমানসহ মহানগর আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীদের আইভীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন।
এরপর থেকেই আইভীর পক্ষে নির্বাচনে কাজ করতে দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন শামীম ওসমান। এমনকি তিনি নিজেও আইভীকে এসএমএস করেছিলেন সহযোগিতা নেয়ার জন্য। নাসিক নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন ডা. সেলিনা হায়াত আইভীকে পাঠানো খুদে বার্তায় শামীম ওসমান বলেছিলেন, ‘প্রিয় আইভী, আপনার পরিকল্পনা আমাকে জানান। কখন মনোনয়নপত্র জমা দেবেন এবং এই বিষয়ে আমি কোনো সহযোগিতা করতে পারি কি-না বলবেন।’ কিন্তু আইভী এর কোনো জবাব দেননি। তারপরেও শামীম ওসমান দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ শিরোধার্য মেনে নাসিক নির্বাচনে আইভীর পক্ষে কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু আইভী তার প্রয়াত বাবাকে নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে বৈঠককালে আপত্তিকর মন্তব্য করে উল্টো শামীম ওসমানকে ক্ষেপিয়ে তুলেছেন।
শামীম ওসমান ও আইভীর এ দ্বন্দকে কাজে লাগাতে চায় বিএনপি। তারা মনে করছে, আইভীর পপ্রত ক্ষোভের কারণে শামীম ওসমান অনুসারীদের ভোট আইভীর বাক্সে নাও যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ভাগ্য খুলে যেতে পারে বিএনপি’র প্রার্থীর। নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র একাধীক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগে শামীম-আইভী দ্বন্দ যতো বাড়বে, নির্বাচনে বিএনপি’র জয়ের পাল্লাত ভারী হবে। কারন, বিএনপি’র নিজস্ব ভোটের সাথে যদি আইভী ঠেকাতে শামীম পন্থীদের ভোট ধানের শীষের পক্ষে যায়, তবে এড. শাখাওয়াত হোসেন খাঁনের নগর পিতা হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। তাই শামীম-আইভী দ্বন্দকে পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করতে চাচ্ছে দলটি।
মন্তব্য চালু নেই