নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনের বিচারবিভাগীয় তদন্ত চায় বিএনপি

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন নিয়ে বিএনপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের কারচুপি’র অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া যায়না বলে জানিয়েছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এজন্য তিনি ভোটগ্রহণ, গণনা ও ফলাফল ইত্যাদির বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করেছেন।

শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে অবস্থিত বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ দাবি জানান।

তিনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রে আস্থাশীল একটি দল, নির্বাচনে বিশ্বাসী একটি গণভিত্তিক সংগঠন। জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলনকে সম্মান প্রদর্শণ করে বিএনপি। গতকাল নাসিক নির্বাচনে বাহ্যিকভাবে সুষ্ঠু নির্বাচনের বাতাবরণ সৃষ্টি করে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সত্যিকারের গণরায়ের প্রতিফলন ঘটলে আমরা সেটিকে শুভেচ্ছা জানাই। অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের কারচুপি’র অভিযোগকে উড়িয়ে দেওয়া যায়না। তিনি অভিযোগ করেছেন একটি কেন্দ্রে মোট ভোট পড়েছে এক হাজার, অথচ সেখানে ঘোষণা করা হয়েছিল নৌকা প্রতীকের আটশো এবং ধানের শীষের পাঁচশো ভোট। পরে সাংবাদিকরা এ বিষয়টি উল্লেখ করলে প্রিজাইডিং অফিসার ফলাফল পাল্টে দেন। নির্বাচনে সব প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের কাছে কেন্দ্রভিত্তিক লিখিত ফলাফল শিট সরবরাহ করার কথা থাকলেও ১৭৪টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১৪৪টির স্বাক্ষরকৃত ফলাফল শিট বিএনপি’র এজেন্টদেরকে সরবরাহ করা হয়নি।

রিজভী বলেন, নির্বাচনের ৭২ ঘন্টা আগে থেকে এলাকার বাইরের লোকজনদের নির্বাচনী প্রচারণায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ফলে বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, কেন্দ্রীয় ও অন্যান্য জেলার নেতৃবৃন্দ নির্ধারিত নির্বাচনী প্রচারণার শেষ সময়ের দেড় দিন আগে থেকেই এলাকায় প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে পারেননি, যা নজিরবিহীন ও সন্দেহজনক। নির্বাচনী এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন না করায় ভোটারদের মধ্যে ভয় ভীতির পরিবেশ বিদ্যমান ছিল। কোনো কোনো কেন্দ্রে সারাদিন ভোটারদের উপস্থিতি খুবই নগণ্য দেখা গেলেও ফলাফলে দেখা গেছে শতকরা আশি ভাগ ভোট পড়েছে। আবার কোনো কোনো কেন্দ্রে দীর্ঘ লাইন ধরে ভোট দিতে গেলে দেখা গেছে তাদের ভোট আগেই দেওয়া হয়ে গেছে। যে খবরটি আজকের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নজীরবিহীন নিরাপত্তা বিধানের আড়ালে রাতের অন্ধকারে কী ভূমিকা রেখেছে তা নিয়ে জনমনে সংশয় রয়েছে। কারণ, কারফিউয়ের মতো পরিস্থিতিতে কোনো কিছু জনগণের নজরদারিতে থাকার কথা নয়। এ অবস্থায় ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্স, সিল ইত্যাদি তাদের হেফাজতে থাকে। ফলে ভোট জালিয়াতির যথেষ্ট সম্ভাবনাও থাকে। সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হলে কেউই অনিয়ম করতে সাহস পেতো না। তাই গতকাল নাসিক নির্বাচন স্মরণীয় হয়ে থাকতে পারলো না।

তিনি আরও বলেন, ধানের শীষের প্রার্থীর কারচুপির অভিযোগকে আমলে নিয়ে তা খতিয়ে দেখা অত্যন্ত জরুরি। সেজন্য গতকালের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ, গণনা, ফলাফল ইত্যাদির বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য আমি বিএনপি’র পক্ষ থেকে জোর দাবি করছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই