নাটোরের গ্রামে কান্নার রোল, ৩৪ জনকে দাফন

নাটোরের বড়াইগ্রামে স্মরণকালের ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় নিহত ৩৪ জনের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। জানাজা আর দাফনের সময় স্বজন আর জনতার উচ্চস্বরে কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে এলাকার বাতাস।

ইতোমধ্যে ৩৪ জনের মধ্যে ৩৩ জনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে গুরুদাসপুরের সিধুলী গ্রামে এক পরিবারের ছয় ভাইসহ ১৪ জন, শিকারপাড়া ফাজিল মাদরাসার প্রভাষক রেজাউল করিম, বৃ-চাপিলা গ্রামের বাবুল (৪০), আব্দুল আওয়াল (৩০), পাটপাড়া গ্রামের জকের আলী, সোনাবাজু গ্রামের আবু হানিফ, চাঁচকৈড় বাজারের আবুল খায়ের (৬৫) এবং অথৈ পরিবহনের বাসের মালিক ও চালক আলম হোসেন (৪০), পৌর সদরে এলজিইডির একজনের দাফন হয়েছে।

অন্যদিকে বড়াইগ্রাম উপজেলার পিঙ্গইনে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুসের, সংগ্রামপুরে আব্দুর রহমান (৪৫) ও তার স্ত্রী আরিফা বেগমের, বাজিতপুর গ্রামে আয়নাল হক (৩২) ও  কিসমত আলীর (৪৫), জালশুকা গ্রামে মনিরুল ইসলাম ও তার ভাগ্নি সেবা ওরফে মোহনার (৮) এবং তারানগর গ্রামে কলেজ শিক্ষক জামাল হোসেন ও তার মেয়ে জান্নাতী খাতুনের (৬) জানাজা ও দাফন হয়েছে।

দূর্ঘটনায় নিহত এলজিইডির গুরুদাসপুর উপজেলা প্রকৌশলী হাফিজুর রহমানের লাশ রাতেই কুষ্টিয়ায় তার গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়াসমিন আক্তার।

সিধুলী গ্রামে ১৪ জনের দাফন : নাটোরের বড়াইগ্রামে দুই বাসের সংঘর্ষে নিহত ৩৪ জনের মধ্যে ১২ জনের জানাজা মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় এবং অপর দুজনের জানাজা জোহরের নামাজের পর সিধুলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে হয়েছে। স্থানীয় গোরস্থানে একই সঙ্গে ১২টি এবং অন্যপাশে দুটি কবরে তাদেরকে দাফন করা হয়। জানাজার জন্য বাড়ি থেকে লাশগুলো স্কুল মাঠে নেওয়ার সময় পুরো সিধুলী গ্রামে কান্নার রোল পড়ে যায়।

জানাজার আগে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ, গুরুদাসপুর পৌরসভার মেয়র শাহনেওয়াজ মোল্লা। জানাজায় এলাকার সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারন মানুষ অংশ নেন।

এখনো দুজন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছেন গ্রামের মানুষ।
গ্রামে গ্রামে শোক : দূর্ঘটনায় নিহত একই উপজেলার এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী হাফিজুর রহমানের লাশ রাতেই উপজেলা প্রশাসন তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়াতে পাঠিয়েছে আর একই দপ্তরের নিহত অফিস সহকারী রেজাউল করিমের জানাজার নামাজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে গুরুদাসপুর শহীদ শামসুজ্জোহা ডিগ্রি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুসকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার গ্রামের বাড়ি বড়াইগ্রাম উপজেলার পিঙ্গইনে দাফন করা হয়েছে। এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস ও বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ শরিফুননেছা উপস্থিত ছিলেন।

সংগ্রামপুরে দাফন হয়েছে আব্দুর রহমান (৪৫) ও তার স্ত্রী আরিফা বেগমের। একই এলাকার বাজিতপুর গ্রামে আয়নাল হক (৩২) ও  কিসমত আলীর (৪৫) দাফন হয়েছে। একই সময়ে পার্শ্বর্¦বর্তী জালশুকা গ্রামের মনিরুল ইসলাম ও তার ভাগ্নি সেবা ওরফে মোহনার (৮) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সবকটি স্থানে দাফনের সময় স্বজন ও গ্রামবাসীর কান্নায় বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।



মন্তব্য চালু নেই