নাকে খত দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, বিএনপি নাকে খত দিয়ে শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। কোনো টালবাহানা করে লাভ হবে না। আর যদি গতবারের মতো ধ্বংসাত্মক আন্দোলন করেন তাহলে গণপিটুনি খাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। জনগণ এমন গণপিটুনি দেবে পালাবারও সময় পাবেন না। পাকিস্তানেও যেতে পারবেন না।

রোববার জাতীয় সংসদের বৈঠকে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এই আলোচনায় আরও অংশ নেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, টিপু মুন্সী, আব্দুল হাই ও শামসুল হক চৌধুরী এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য জিয়াউল হক মৃধা।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অগ্নি সন্ত্রাসের ঘটনা তুলে ধরে শেখ সেলিম বলেন, এরা সন্ত্রাসী ও জঙ্গি সংগঠন। এদের সঙ্গে কিসের আলোচনা। বিশ্বের কোথাও কেউ সন্ত্রাসী-জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে না। তাদের সঙ্গেও কোন আলোচনা হবে না।

তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া ভেবেছিলেন আলোচনায় না এসে আবার অবরোধ-হরতালের নামে অগ্নিসন্ত্রাস ও মানুষ হত্যা করলে শেখ হাসিনাকে তার কাছে মাথা নত করবে। কিন্তু শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর মেয়ে; কারো কাছে মাথা নত করার মতো নেতা তিনি নন।

কানাডার আদালতে বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল অভিহিত করার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বিশ্ববাসীর মতো দেশবাসীকেও বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানান।

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে এই সরকার দলীয় সদস্য বলেন, গতবার নির্বাচন না করায় সন্ত্রাস ও রাজনীতির ময়দান থেকে আউট হয়েছেন। আর এইবার যদি নির্বাচন না করেন; তাহলে নিবন্ধনও বাতিল হবে, বিএনপিও থাকবে না। ওটা মুসলিম লীগের চেয়েও খারাপ দলে পরিণত হবে। সুতরাং হুমকি-ধামকি দিয়ে কিছু লাভ হবে না।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার করছে। তিনি আবোল-তাবোল বলছেন। তিনি বলছেন পদ্মা সেতু চালুও হওয়ার আগেই ফেটে যাবে। এজন্য তাকে পাবনার হেমায়েতুপুরে (পাবনা) নয়, রাঁচিতে (ভারতের) পাঠাতে হবে।

পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার দাবির পাশাপাশি বিশ্বব্যাংকের কাছে ক্ষতি পূরণ দাবি করেন তিনি। একই সঙ্গে মিথ্যা অপবাদের জন্য শেখ হাসিনার সরকারের কাছে ক্ষমা চাওয়ারও আহ্বান জানান।

সেক্টর কমান্ডার রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিরলসভাবে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, এতে দেশের প্রতিটি সেক্টরে উন্নয়ন ও সাফল্যে অর্জিত হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত জোট গতানুগতিক রাষ্ট্রপরিচালনা করে গেছে, যেখানে কোন স্বপ্ন ছিল না। আর শেখ হাসিনা সুনির্দিষ্ট স্বপ্নকে ধারণ করে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন বলেই সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ পরিণত হয়েছে। পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির কারণে দেশের আর্থীক ক্ষতির পাশাপাশি প্রবৃদ্ধিরও ক্ষতি হয়েছে।

জিয়াউল হক মৃধা বলেন, পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ আন্তর্জাতিক আদালতে নাকচ হওয়ায় বাংলাদেশ কলঙ্কমুক্ত হয়েছে, গোটা বিশ্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়েছে। অত্যন্ত সাবলিল গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের উন্নয়নের ধারা। মামলা নিয়ে এখন উদ্বিগ্ন খালেদা জিয়া। কিন্তু ক্ষমতায় থাকতে সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের কত ডজন মামলা দিয়েছিলেন তা কী উনি ভুলে গেছেন? সেই পাপের ফল তাকে ভুগতে হচ্ছে। সরকার নিজেদের নেতাদের নামে সব মামলা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে অথচ এরশাদের মামলা তোলা হচ্ছে না। এটা সঠিক নয়।

টিপু মুন্সী বলেন, অন্ধকারাচ্ছন্ন দেশের গ্রামও এখন বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত। ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। আমরা নাকি পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি করেছি। কিন্তু কানাডার আদালত বলেছে কোন দুর্নীতি হয়নি। দেশটির ফেডারেল কোর্ট আরেকটি রায় দিয়েছে যে বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। কেন সন্ত্রাসী দলের সঙ্গে আলোচনা করবো? যত কথাই বলুক, নির্বাচনে আসার কোন বিকল্প নেই বিএনপির সামনে।

আওয়ামী লীগের আবদুল হাই বলেন, ৫ জানুয়ারি নির্বাচন না হলে দেশে গণতন্ত্র থাকতো না। বিএনপি নেত্রী আন্দোলনের নামে গণতন্ত্রকেই হত্যা করতে চেয়েছিলেন। তাই বিএনপির মুখে আর যাই হোক গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না। গণতন্ত্রের স্বার্থে বিএনপি-জামায়াতকে বর্জন করতে হবে।



মন্তব্য চালু নেই