পিতা-মাতার পশ্রয়ে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে

ধর্ষনের চেষ্টার মামলায় আসামীর জামিন নামঞ্জুর নোয়াখালী আদালতে

লক্ষ্মীপুর, রামগতি থানাধীন চরমেহার ০১ নং ওয়ার্ড, শাহজাহান মাঝির ছেলে ধর্ষনের চেষ্টার মামলার আসামী মোঃ রাসেল উদ্দিন কে সকাল ১১ টায় নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে জজ মোঃ মাহতাব হোসেন এর আদালতে জামিন চাহিলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন আসামীর পক্ষে এডভোকেট আবুল কাশেম দীর্ঘক্ষণ আদালতে জামিনের পাওয়ার জন্য জেরা করেন ও বাদী ও রাষ্ট্র পক্ষের পিপি হুমায়ুন কবির হিরু, এডভোকেট আজম খাঁন, এডভোকেট জসিম উদ্দিন বাদল জামিনের বিরোধীতা করেন।

আদালতে জজ মোঃ মাহতাব হোসেন উপস্থিত বাদী রাষ্ট্র ও বিবাদীর পক্ষের শুনানী শেষে জামিন নামঞ্জুর করে। এদিকে ভোলা জেলার মনপুরা হইতে আগত আদালতে উপস্থিত বাদী মুনিয়া আক্তার শাহনাজ ও তার মা বিবি রহিমা, মামা নুর উদ্দিন বাদীকে পালক পিতা-শামছু পুলিশ আদালত সূত্রে জানা যায় রামগতি উপজেলার চরমেহার ১নং ওয়ার্ডের শাহাজান মাঝির ছেলে রাসেল উদ্দিন এর বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভানে ধর্ষনের চেষ্টায় করায় নোয়াখালী কোর্টে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ।

জানা যায়, আসামী পরিবারের লোকজনরা বাদী ও তার পরিবারের লোকজনকে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দিচ্ছে। গত ৫ এপ্রিল ইসতিয়াক আহাম্মেদ প্রকাশ রাসেল উদ্দিন (২০) এর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী ওয়ারেন্ট দেন আদালত। ১১ এপ্রিল শনিবার গভীর রতে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি থানা পুলিশ পলাতক আসামী রাসেল উদ্দিন কে গ্রেফতার করে লক্ষ্মীপুর কোর্ট হাজতে প্রেরণ করে।

তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ২৪ জানুয়ারী সকাল ৯ ঘটিকার সময় একই এলাকার আবদুল খালেক প্রঃ হাসেম মিয়ার মেয়ে মুনিয়া আক্তার শাহানাজ (১৮) কে তাহার বাড়ীর সামনে হইতে অস্ত্র ঠেকিয়ে অপহরণ করিয়া নিয়া আসে। আসামী রাসেল উদ্দিন (২০), মুনিয়া আক্তার শাহনাজকে দীর্ঘদিন থেকে প্রেমের প্রস্তাব ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আসিতেছে। মুনিয়া আক্তার শাহনাজ প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় আসামী রাসেল উদ্দিন মুনিয়া আক্তার শাহনাজকে অপহরণ করিয়া নোয়াখালী বেগমগঞ্জ, চৌমুহনী ও সুধারাম থানাধীন এলাকায় বিভিন্ন স্থানে ঘুরাঘুরি করে এবং শাহনাজকে বিবাহ করিবে মর্মে আশা দিতে থাকে। এক পর্যায়ে ২৫ জানুয়ারী সন্ধ্যা আনুমানিক ৬ ঘটিকার সময় আসামী রাসেল উদ্দিন ভিকটিম শাহনাজকে সাথে নিয়া নোয়াখালী বেগমগঞ্জ উপজেলার একটি নির্জন বাগানে কৌশলে নিয়ে যায়।

বর্ণিত আসামী ভিকটিম কে দেওয়া প্রলোভন মতে তাহাকে বিবাহ না করিয়া নতুন কৌশল তৈরি করে যে, রাত্রে আমরা যে কোন হোটেলে উঠবো পরে সকাল হইলে আমরা বিবাহ করে আমাদের গ্রামের বাড়ী চরমেহার চলে যাবো বলে আশ্বাস দেন আসামী রাসেল উদ্দিন, বাদী মুনিয়া আক্তার শাহনাজ আসামীর এই নতুন কৌশলে ফাঁদে না পড়ে মুনিয়া আক্তার শাহনাজ আসামী রাসেল উদ্দিনকে বলে, আগে বিয়ে তারপর হোটেলে উঠবো। আসামী রাসেল উদ্দিন শাহনাজের কথা শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। হোটেলে উঠার আশ্বাস না দেওয়ায় আসামী রাসেলের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বর্ণিত স্থানে ভিকটিম মুনিয়া আক্তার শাহনাজকে তাহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক মুনিয়া আক্তার শাহনাজকে জড়াইয়া দস্তাদস্তি মাটি ফেলে ধর্ষনের চেষ্টা করে।

বর্ণিত আসামী রাসেল অসৎ উদ্দেশ্যে ভিকটিমের বুকে, গলায় সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেয় এবং ধস্তাাধস্তি করে। ভিকটিম সম্মান রক্ষার চেষ্টা করিলে উক্ত আসামী রাসেল উদ্দিন অসহায় ভিকটিমকে কিল, ঘুষি, লাথি মারিয়া ভিকটিমের বুকে, পিঠে, গলায় ফোলা ও বেদনাদায়ক জখম করে। ভিকটিম শাহনাজ ডাক চিৎকার করিলে স্থানীয় লোকজন সহ ঘটনাস্থলে আশেপাশে লোকজনের আগমন দেখিয়া আসামী রাসেল উদ্দিন দ্রুত ঘটনাস্থল হইতে পালিয়ে যায়। উপস্থিত লোকজন ঘটনাস্থলে আসিয়া তাহার নাম ঠিকানা জিজ্ঞাসাবাদ করিলে ভিকটিম শাহনাজ জানান আসামী রাসেল উদ্দিন শাহনাজকে বিবাহ প্রলোভন দিয়া প্রথমে নোয়াখালীর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার ভিতরে জব্বর আলীর ছেলে আসামী রাসেল এর বন্ধু রশিদের বাসায় নিয়া আসে। পরে বেগমগঞ্জ তাহার আরেক বন্ধুর বাসায় নিয়ে যায়। কিন্তু বিবাহ করিবে বলিয়া আশ্বাস দিতে থাকে। বিয়ের করার মত কোন উদ্যোগ না নিয়া রাত্রে হোটেলে থাকতে বলে।

পরে স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করে। ভিকটিম শাহনাজ বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল নোয়াখালীতে একখানা অভিযোগ দায়ের করেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানা এলাকা তদন্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন। বেগমগঞ্জ মডেল থানার এস.আই মোঃ জসিম উদ্দিন ঘটনাস্থলে এসে লোকজনকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ও স্বাক্ষীদের জবানবন্দী কাঃ বিঃ ১৬১ ধারা মোতাবেক লিপিবদ্ধ করে। ভিকটিমের ডাক্তারী সনদ পত্র পর্যালোচনা করে ভিকটিমের ছবি (আলোক চিত্র) সংগ্রহ করে ও আসামীর নাম ঠিকানা যাচাইয়ের জন্য লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি থানায় ই/এস প্রেরণ করে এস.সি.ডি প্রাপ্ত হইয়া পর্যালোচনা করে প্রকাশ্যে ও গোপনে তদন্ত করে।

পরে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে জানা যায়, এই দিকে প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি থানার চরমেহার সাকিনে ০১ নং ওয়ার্ডের শাহজান মাঝির ছেলে আসামী রাসেল উদ্দিন (২০) এর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী)/২০০৩ এর ৭/৯(৪) (খ), অপরাধ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল নোয়াখালী আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ। আরো জানা যায়, আসামী রাসেল উদ্দিন চরমেহার এলাকা সহ বিভিন্ন জায়গায় মেয়েদের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে পরবর্তীতে মেয়েদের ফোনে ফোন করে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার পর অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রস্তাব করে থাকে।

২০১৪ সালে রাসেল কলেজের একটি মেয়ের সাথে অসামাজিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়লে তাকে কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়। ১১ই মার্চের একটি অসামাজিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংবাদ কর্মীদের খারাপ আচরণ করে এবং তাদেরকে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দেয়। রাসেল তার পিতা-মাতার ক্ষমতায় এলাকায় বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। বর্তমানে রাসেল ও তার পিতার বিরুদ্ধে থানায় এবং কোর্টে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে বলে এলাকাবাসী জানায়। এলাকাবাসী আরো জানান তার পিতা-মাতার পশ্রয়ে আসামী রাসেল উদ্দিন এলাকাতে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।



মন্তব্য চালু নেই