দেয়াল রাঙাতে রঙের ভালোমন্দ
ঘরের দেয়াল রাঙাতে বাজার থেকে পছন্দের রঙটি বেছে নিলেই হল। তাতে থাকা উপাদান নিয়ে মাথা ঘামায় না কখনো। কিন্তু অধিকাংশ রঙ মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর উপাদান বহন করে। অনেক রঙে স্থায়িত্বের জন্য ইপক্সি জাতীয় সারফেকটেন্ট ব্যবহৃত হয়। এগুলোতে ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। আবার রঙে যাতে ছত্রাক না জন্মায়, সে জন্য ফরমালডিহাইড ব্যবহার করা হয়। এটিও ক্ষতিকর।
বাসাবাড়ির গ্রিল বা ধাতব জিনিস রাঙাতে যে এনামেল পেইন্ট করা হয়, তাতে ক্ষতিকর উদ্বায়ী জৈবযৌগ ভিওসি থাকে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক গবেষণায় দেখা যায়, সারাক্ষণ রঙের কাজের সংস্পর্শে থাকা মানুষের ফুসফুসের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি ২০ থেকে ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
তবে কিছু সাধারণ সতর্কতা অবলম্বন করলে রঙ ব্যবহার জনিত এসব স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়ানো যেতে পারে। রঙের ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানগুলো কতক্ষণ পর্যন্ত স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে, তা বোঝার অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে এর গন্ধ। রঙের গন্ধ একেবারে দূর হওয়ার পরই সেই ঘরে বসবাস শুরু করুন। প্রশস্ত দরজা-জানালার ব্যবস্থা যেন থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখুন এবং ঘরে আলো-বাতাসের পর্যাপ্ত যাতায়াত নিশ্চিত করুন।
ঘরের রঙ
ঘরের দেয়ালে রঙ ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাসিন্দাদের পছন্দ বা রুচি ও মনস্তাত্ত্বিক দিকগুলো প্রাধান্য পায়। সাধারণত বিভিন্ন ঘরের রঙ আলাদা হলেই ভালো হয়। তবে ঘরের তিন দেয়াল অফ-হোয়াইট কিংবা সাদা রেখে বাকি এক দিকের দেয়ালে রঙের ভিন্নতা আনলে সব দিক থেকেই ভালো। তাই ড্রয়িংরুমের দেয়ালের রঙ হতে পারে লাল। এটি চিত্তাকর্ষক এবং জমজমাট পরিবেশের সঙ্গে মানানসই।
অতিথি এলে সবার আগেই এই ঘরে মানুষের চোখে পড়ে। রুচির পরিচয় অনেকখানি তুলে ধরা যায় অতিথিকক্ষের মাধ্যমে। খাবার ঘরের দেয়ালটিতেও উজ্জ্বল রঙ ব্যবহার করতে পারেন। এ ঘরে সাধারণত হই-হুল্লোড়, আড্ডা খুব বেশি হয়। তাই উজ্জ্বল রঙগুলো সেখানে সুন্দর অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করে।
ছোট শিশুদের ঘরের রঙ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ছেলেদের জন্য নীল আর মেয়েদের জন্য গোলাপি ধাঁচের রঙ ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া একরঙা দেয়ালের পরিবর্তে একটি ফিচার দেয়ালে বিভিন্ন রঙের বৈচিত্র্য রাখা যেতে পারে। শোবারঘরের জন্য বেগুনির মতো রঙ জুতসই। বয়স্ক মানুষেরা বেশি রঙের ব্যবহার অপছন্দ করলে তাঁদের ঘরের জন্য চার দেয়ালেই হালকা বা অফ-হোয়াইট ধরনের রঙ ব্যবহার করতে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিভিন্ন রঙের মিশ্রণ বা ইলিউশন ব্যবহার করলে ফ্লোরাল কিংবা লতাপাতা নকশার ইলিউশনকে প্রাধান্য দেওয়া উচিৎ। পুরো বাড়ির ছাদ ও মেঝেতেও সাদার ব্যবহার থাকলে ভালো। এতে ঘরগুলোকে প্রশস্ত মনে হয়। অফ-হোয়াইট কিংবা সাদার পরিবর্তে চার দেয়ালজুড়ে একই রং ব্যবহার করলে হিজিবিজি ও আবদ্ধ পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
প্রচলিত যত রঙ
আমাদের দেশে বর্তমানে কিছু প্রতিষ্ঠানের প্লাস্টিক পেইন্ট, ডিস্টেম্পার, ইলিউশন ইত্যাদি রঙ পরিবেশবান্ধব উপায়ে বাজারে এসেছে। তাই রঙ কেনার আগে অবশ্যই খেয়াল করে কিনতে হবে, তা পরিবেশবান্ধব কি না। আর দামেরও খুব একটা তারতম্য নেই, সাধ্যের নাগালেই।
মন্তব্য চালু নেই