দেশের বিভিন্ন চরাঞ্চলে অতিথি পাখি নিধনের মহোৎসব

মোঃ ফজলে আলম, ভোলা: ভোলাসহ উপকূলীয় যে সব চরে পাখিদের ব্যাপক অবস্থান রয়েছে । এসব চরের মধ্যে ভোলা সদর উপজেলার মাঝের চর, শিবপুর চর, বাগমারা চর, টেংরার চর, বোরহানউদ্দিন উপজেলার মধ্যবর্তী তেঁতুলিয়া নদীর পাড়ের পাতাবুনিয়ার চর, টেগরা চর, ইউনুছ চর, লালমোহনের কচুয়ার চর, চরফ্যাশনের চর পাতিলা এলাকায় ধানের সঙ্গে বিষ প্রয়োগ করে তা ছিটিয়ে দেয়া হচ্ছে।

ওই খাবার খেয়ে আগত অতিথি পাখি অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তা জাল দিয়ে আটকে নিধন করা হচ্ছে। চরের মধ্যেই পাখি জবাই করে বস্তায় ভরে পরে বিভিন্ন বাজারে বিক্র করা হয়।

বাঘমারা চরে নিধনকৃত পাখি ভেলু মিয়া হয়ে কখনও কখনও জেলা শহরেও বিক্রি করতে আনা হচ্ছে। তাছাড়া ভোলার মনপুরার চর নিজাম, ঢালচর, চরফ্যাশনের চর শাহজালাল, চর শাজাহান, কুকরির পশ্চিম চর, চর পিয়াল, আইলউদ্দিন চর, লালমোহনের কচুয়ার চর, মেঘনার মাঝের চর, শিবপুর চর, হাতিয়ার চর-বারি, নিঝুম দ্বীপ, দমার-চর,টেগরারচর।পাখি নিধন আইনী দ্বন্ডনীয় হলেও গ্রামের প্রভাবশলীদের সেল্টারে একটি চক্র ওই আইন মানছে না।

শীতপ্রধান অঞ্চল থেকে আসা অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর এখন ভোলার উপকূলীয় চরাঞ্চলগুলো।কিন্তু ফাঁদ ও বিষটোপ দিয়ে নির্বিচারে এসব পাখি নিধন করছে শিকারিরা।

আবার বিষাক্ত মাংস বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন হোটেল ও রেস্তোরাঁয়। এতে পাখির সংখ্যা কমার পাশাপাশি হুমকিতে পড়ছে মানবস্বাস্থ্য। তবে পাখি নিধন বন্ধে পুলিশ ও কোস্টগার্ডসহ বনকর্মীরা টহল শুরু করেছে বলে জানান বন বিভাগের কর্মকর্তারা। এ যেন পাখির রাজ্য। হাজার হাজার পাখি কখনো ডানা মেলে উড়ছে, আবার কখনো ভেসে বেড়াচ্ছে মনের আনন্দে। ভোলার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষা অন্তত ৫০০ ডুবোচর এখন মুখরিত অতিথি পাখির কলকাকলিতে।

কিন্তু সাইবেরিয়াসহ শীত প্রধান অঞ্চল থেকে জীবন বাঁচাতে আশ্রয়ের খোঁজে আসা এসব পাখি এ দেশেও নিরাপদ নয়। অসাধু শিকারিরা কারেন্ট জালের ফাঁদ আর বিষটোপ দিয়ে প্রতিদিন পাখি নিধন করছে। এতে দিন দিন অতিথি পাখির সংখ্যা যেমন কমছে, তেমনি হুমকিতে পড়ছে পরিবেশ।

এদিকে,জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার কর্মকার জানান, বিষযুক্ত খাবার দিয়ে পাখি মারা বা নিস্তেজ করা যেমনি অপরাধ তেমনি ওই পাখির মাংস কোন প্রকারে শরীরের জন্য উপযুক্ত নয়। ওই বিষ শরীরেও ছড়াতে পারে।

অপরদিকে ভোলা সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডাঃ ফরিদ আহম্মেদ জানান, এ ধরনের পাখির মাংস খেলে মৃত্যু হতে পারে। ওই ধরনের মাংস না খাওয়ার জন্য তিনি অনুরোধ জানান।

তবে অতিথি পাখি নিধন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মোঃ ফরিদ মিয়া। বার্ড ক্লাবের তথ্য অনুযায়ী, ভোলায় এ বছর ২৮ প্রকার জলচর পাখিসহ ৬০ প্রজাতির অতিথি পাখি এসেছে।

এদিকে জেলা প্রশাসক মোঃ সেলিম উদ্দিন জানান,পাখি নিধনকারী চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদের পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয়ার জন্য তিনি স্থানীয়দের প্রতি অনুরোধ জানান।



মন্তব্য চালু নেই