দেশের বর্তমান অবস্থা চরম ভীতিকর : ড. মিজানুর
দেশের বর্তমান অবস্থা ‘চরম ভীতিকর’ বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, আমরা অনেক আগেই আপত্তি তুলেছি, সাদা পোশাকে যেন কাউকে আটক করা না হয়। এখন অবস্থা যখন ভীতির পর্যায়ে চলে গেল, তখন প্রজ্ঞাপন করে সাদা পোশাকে কোনো অভিযান না চালাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে এই পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়।
শনিবার দুপুরে বরগুনায় মানবাধিকার কর্মী সমাবেশ উদ্বোধনকালে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও ফারিয়া লারা ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে কর্মী সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘কোনো অভিযোগে কাউকে গ্রেফতার বা আটক করতে হলে অবশ্যই পোশাক পরিহিত অবস্থায় এবং সংশ্লিষ্ট বাহিনীর পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) দেখাতে হবে। এটা নিশ্চিত করা হলে দেশে খুন, গুম এবং অপহরণের এই ভয়ানক অবস্থা অনেকাংশে কমে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি অনেক আগে বলেছিলাম, দেশে আটক বাণিজ্য চলছে, এ বাণিজ্য বন্ধ করুন। এসব বক্তব্যের কারণে তখন অন্তত দুজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী আমার সমালোচনা করে বলেছিলেন, আমি নাকি জামায়াত-শিবিরে রূপান্তরিত হয়েছি।’
মিজানুর রহমান আরো বলেন, ‘এই শঙ্কাময় জীবন আমরা চাই না। নাগরিকদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের।’
তিনি বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘একটি দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি দলটি লাল সংকেত (রেড অ্যালার্ট) জারি করে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। ওই দলের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, সারা দেশের মানুষের কথা-নিরাপত্তার কথা না ভেবে কী করে নিজের দলের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে?’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি চাটুকরদের কাছ থেকে দূরে থাকুন এবং দলের যে নেতাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তাঁদের বলুন সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে। অপরাধ নির্মূলে উদ্যোগ নেবেন। আমাদের প্রত্যাশা, আপনি দৃঢ় হবেন।’
প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশ্য করে মিজানুর রহমান বলেন, ‘একে অপরকে দোষারোপ করার মধ্য দিয়ে নাগরিক জীবনকে আরো শঙ্কার মধ্যে ফেলে দেবেন না। বর্তমানে দেশের এ অবস্থার প্রধান দায় বর্তায় রাষ্ট্রের ওপর।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কমিশনের সদস্য কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, কমিশনের সচিব এম এ সালাম, ফারিয়া লারা ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন খান, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক বনশ্রী মিত্র নিয়োগী, বরগুনা জেলা প্রশাসক আবদুল ওহাব ভূইঞা ও পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ।
মন্তব্য চালু নেই