দেব-এর দাবী, ফারুকীর বিকল্প প্রস্তাব (ভিডিও)

শুক্রবার সকালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে দেশের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ওপার বাংলার জনপ্রিয় নায়ক ও সাংসদ দেব দুইবাংলা এক করে দেয়ার আকুতি জানিয়েছেন। এরই প্রেক্ষিতে দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা ফারুকী শনিবার সকালে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে দেবকে এ ব্যাপারে দেশে ফিরে আন্দোলনের পরামর্শ দিয়েছেন।

উক্ত সভায় দেব তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের ভাষাটা (বাংলা) পৃথিবীতে পঞ্চম স্থানে। আমি জানি, আমরা কেউ এটা আমাদের জন্য করছি না। আমাদের জীবনটা খুব ভালো কেটেছে, বা কেটেও যাবে। কিন্তু সমাজে আমরা যে স্থানটাতে আছি, এটা আমাদের দায়িত্ব, এই ভাষাটাকে নিয়ে আমাদের কিছু বলা উচিত। সেই কারণে হয়তো আমরা এখানে এসেছি। আমাদের স্বপ্ন এক, আমাদের ইচ্ছেটাও। সব কিছুই যখন এক, তাহলে আমরা দুই সরকারকে বলি যে প্লিজ, এপার বাংলা, ওপার বাংলাকে এক বাংলা করে দাও।’

একই সভায় পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট নির্মাতা গৌতম ঘোষ বলেন, ‘বাংলার গান, বাংলার সাহিত্য, বাংলার নাটক, বাংলা সিনেমা। সেটা কোন দেশের তা নয়, সেটা সমগ্র বাঙালির। তার কারণ, বাংলা ভাষা হচ্ছে আমাদের গুরু। আমরা এখন থেকে শুধু মনে করি যেন দুই বাংলা সংস্কৃতির দিক দিয়ে একটাই। (তাহলে) আমার মনে হয়, আমরা অনেকটাই এগিয়ে যাব।’

এর প্রেক্ষিতে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘দুই বার্লিন এক হতে পারলে দুই বাংলা নয় কেনো? আশা করছি কোলকাতা ফিরে তারা বাংলাদেশের সাথে যোগ দেয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করবে।আমরা আপনাদের পাশে থাকবো।’

ফারুকী তার বক্তব্যে আরো বলেন, ঐ দিকে মমতা ব্যানার্জির সফর কেন্দ্র করে বাংলাদেশে বেশ উৎসাহ দেখা গিয়েছে। বাংলাদেশে এসে আমাদের পিঠ চাপড়ে, বাংলা আমার মা জাতীয় কথা বলাকে যারা সন্দেহের চোখে দেখছেন তাদেরকে ভুল প্রমাণ করার জন্য কোলকাতা ফিরে উদ্যোগ নেয়ার জন্য মমতা আপাকে আহবান জানাই। আশা করি বাংলাদেশের প্রতি এই প্রেম কোলকাতায় ফিরেও অব্যাহত রাখবেন । আর যেসব নিন্দুকেরা ভাবছেন এই প্রেম কেবল বাংলাদেশের সিনেমা হল দখলে নিয়ে কোলকাতার ‘ইনকিউবিটরে’ থাকা ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচাতে, তাদের মুখ বন্ধ করার জন্য দুই দেশের সরকার একটা দারুণ নীতি করবে। কারণ ভারত আর বাংলাদেশের মধ্যে সিনেমা খাতে কার্যকর সহযোগিতা খুব দরকার, দুই দেশের জন্যই । কেবল কোলকাতার সাথে না, পুরো ভারতের সাথে ।’

চলচ্চিত্র নীতির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে ফারুকী দেশের নীতিনির্ধারকদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, এই নীতি করার জন্যে বাংলাদেশ থেকে কারা কাজ করছে, তাদের পরিচয় কি, ভুমিকা কি, লক্ষ্য কি, যোগ্যতা কি, নতুন সময়ের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে কতটুকু সজাগ তারা – এগুলো আমরা জানতে চাই ।

ঐদিন আর সম্ভবতঃ নাই যে আপনারা কয়েকজন সাংস্কৃতিক হুজুরকে হাত করে যেনো তেনো একটা পলিসি করবেন । বাংলাদেশের হাজার হাজার তরুণ আপনাদের পর্যবেক্ষণ করছে। এরা গুরু মারা বিদ্যায় পারদর্শী । এদের চোখ পরিষ্কার, অংক করার মাথাও পরিষ্কার । মিষ্টি কথায় বিগলিত হওয়ার প্রজন্ম এটা না।

চৌধুরী সাহেব, মনে রাখবেন এই প্রজন্মের সালাম পেতে পারেন, অন্ধ আনুগত্য নয়।’

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে দেশের নির্মাতারা ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানীর বিরুদ্ধে অবস্থান করছেন। তবু ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানীর পক্ষে সরকারের নমনীয় মনোভাবে সম্প্রতি ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শন শুরু হয়েছে। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গে তথা ভারতে দেশের চলচ্চিত্র ও টিভি চ্যানেল প্রচার ও প্রদর্শনে ভারতের অসহযোগী মনোভাবে ক্ষুব্ধ দেশের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের সকলেই। ধারণা করা হচ্ছে এসব ঘটনার প্রেক্ষিতেই ফারুকীর এ কড়া জবাব।

তথ্যসূত্র: এনটিভি



মন্তব্য চালু নেই