দুষ্টুমির ছলে সাগরের পায়ুপথে বাতাস ঢোকায় ৩ শিশু
কাজের শেষে শরীরে লেগে থাকা ময়লা পরিষ্কার করার সময় দুষ্টুমির ছলেই জোবেদা টেক্সটাইল ও স্পিনিং মিলে ১০ বছরের শিশু শ্রমিক সাগর বর্মণের পায়ুপথ ও মুখে বাতাস ঢোকায় তারই তিন সহকর্মী। যাদের বয়স ১২ থেকে ১৩ বছরের মধ্যে। আর ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিল ৯ বছরের আরো এক শিশু। তবে তারা সাগরকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ কাজটি করেনি। পুরো বিষয়টি ছিল নিছক খেলা ও দুষ্টুমি।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন জানান, গতকাল বুধবার রাতে রাকিব (১২), সোহেল (১৩) ও আকাশ (১২) নামে তিন শিশুকে কারখানার ভেতর থেকে আটক করা হয়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গত ২৪ জুলাই দুপুরে কারখানার ভেতরে কাজ শেষে শরীরে লেগে থাকা ময়লা পরিষ্কার করার সময় দুষ্টুমির ছলে ওই তিন শিশু সাগরের মুখে ও পায়ুপথে কম্প্রেসার মেশিনের বাতাস ঢুকিয়ে ফেলে। ওই ঘটনায় ৯ বছরের এক শিশুকে আটক করা হয়েছে যিনি পুরো ঘটনার সাক্ষী। তবে তদন্ত ও নানা কারণে ওই সাক্ষীর নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
শিশু আইনের বাধ্যবাধকতার কারণে আটক ৩ শিশুকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়নি। শিশু আইনেই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে বুধবার মামলার এজাহারভুক্ত গ্রেপ্তারকৃত ২ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। দুইজনের মধ্যে আজাহার ইমাম ওরফে সোহেল (৩৮) জোবেদা টেক্সটাইল ও স্পিনিং মিলের সিনিয়র উৎপাদক কর্মকর্তা। তিনি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। এছাড়া সোহাগ হোসেন হৃদয় (৩৫) লাইনম্যান হিসেবে কর্মরত ছিল। সোহেলকে সোমবার রাতে র্যাব-১১ ও হৃদয়কে মঙ্গলবার সকালে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ জুলাই রোববার কারখানার ভেতরে ১০ বছরের সাগর বর্মণের পায়ুপথে হাওয়া ঢুকিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহতের বাবা রতন বর্মণ বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। সোমবার পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামি নাজমুল হুদাকে গ্রেপ্তার করে তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠায়। শুনানি শেষে আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
এছাড়া সাগর বর্মণ হত্যার ঘটনায় কারখানাটির চেয়ারম্যান আজাহারুল ইসলাম ভূঁইয়া ও এমডি লায়ন মীর আব্দুল আলিমের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান সমূহের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের পরিদর্শক সামিউল আলম কুরশী বাদী হয়ে শ্রম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। এতে শ্রম আইন লঙ্ঘন, নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র না দেয়াসহ নানা অভিযোগ করা হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিপূরণেরও আবেদন করা হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই