দুনিয়ার সবচেয়ে জঘন্য পাঁচটি খাবার! এটা সবার পড়া উচিৎ নয়

পৃথিবীর নানা প্রান্তের নানা মানুষের আছে নানান খাবার খাওয়ার অভ্যাস। আপনার জন্য যা অখাদ্য অন্যের জন্য সেটা সুখাদ্য হতে পারে। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে অখাদ্য ও জঘন্য কিছু খাদ্য যা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে সুখাদ্য হিসাবে খাওয়া হয় এমন পাঁচটি খাবারের তালিকা দিলাম আওয়ার নিউজের পাঠকদের জন্য। এ সমস্ত খাবারের বিবিরন শুনে যাদের বমি আসার সম্ভাবনা তাদের না পড়তে অনুরোধ করছি।

৫ এসকামোল (Escamole)

কোথাকার খাবার: মেক্সিকো

জিনিসটা কি: এসকামোল হচ্ছে বড় কালো লিওমেটোপাম পিপড়ার ডিম। এরা সাধারনত আগাভে গাছের শিকড়ে বাসা বানায় এবং ডিম পাড়ে। ডিমগুলো বের করা খুব ঝামেলার কাজ কারন এরা খুবই বিষাক্ত এবং মানব দেহের সংবেদনশীল গহ্বরগুলোতে কামড়ানোর জন্য এরা অতিউৎসাহী হয়ে থাকে। কালো পিপড়া মানে মুসলমান পিপড়া এই থিওরী এরা জানেনা। আফসোস। ডিমগুলো পনিরের মত নরম হয়ে থাকে এবং সাধারনত টাকো(মেক্সিকান রুটি জাতীয় খাবার) দিয়ে পেচিয়ে এগুলো খাওয়া হয়।

দাঁড়ান আরো ব্যাপার আছে: এসকামোলের স্বাদ অনেকটা মাখনের মত এবং সংগে একটু বাদামের স্বাদও থাকে। মেক্সিকোতে টাকো খেতে বসে যদি ভুলে এই বস্তু খেয়ে ফেলেন তবে স্বাদের কারনে টের পাবার সম্ভাবনা কম তাই সাবধান। বুঝতেও পারবেন না যে আপনি খাচ্ছেন পিপড়ার ডিম!!

বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা: বাংলাদেশে এই জিনিস আসার চান্স কম কিন্তু বুদ্ধিমান বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা মাখনের মধ্যে দেশী পিপড়ার ডিম মিশিয়ে দিতে পারে। রুপচাদার নামে পিরানহাতো খাচ্ছেন অনেকদিন ধরেই।

৪ কাসু মারযু (Casu Marzu)

কোথাকার খাবার: সারডিনিয়া, ইটালী

জিনিসটা কি: এই জিনিষটাকে বোঝাবার একমাত্র ভাষা হচ্ছে “ওয়াক থু”। ভেড়ার দুধ থেকে বানানো পনিরের মাঝে একধরনের মাছি ডিম পারার পর ডিম ফেটে লার্ভা বের হয় এবং এই পচনশীল পনিরের মাঝে কিলবিল করতে থাকে। এই বোটকা গন্ধযুক্ত পচা পনির যখন খাওয়া হয় তখন পোকাগুলো আধাফুট পর্যন্ত লাফিয়ে ওঠে। কাসু মার্যু খেতে বেশ ঝাল ঝাল এবং প্রায়ই লার্ভাগুলো হজম না হয়ে অন্ত্রে বাসা বাধে। তখন এরা সাধারনত অন্ত্র ফুটো করে বের হবার চেষ্টা করে আর খাদকের তীব্র বমি ও রক্তযুক্ত ডায়রিয়া হয়। চমৎকার না?

দাঁড়ান আরো ব্যাপার আছে: এই পচা পনিরকে সারডিনিয়াতে খুব দামী খাবার হিসেবে খাওয়া হয় এবং সরকার এটাকে বেআইনী ঘোষনা করেছে। ঠিকই পড়লেন, এটা খাওয়া বেআইনী। দুনিয়াতে আর কোথাও কেউ এই জঘন্য জিনিষ খেতে চাইবেনা আর যেখানে বেআইনি সেখানে এটা দামী দুর্লভ খাবার। পোকাগুলো লাফ দেয়ার কারন কি সুখ নাকি এই দোযখ থেকে মুক্তি পাবার ইচ্ছা তা বলা মুশকিল।

বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা: বাংলাদেশের পনির গুদামে এই জিনিষ আমদানী হয় না কিন্তু অনেকদিন ধরে পরে থেকে পচে যাওয়া পনিরের এই পরিনতি হতে পারে। পনির খাওয়ার সময় মাঝখান থেকে দুটুকরো করে দেখে নেবেন ভেতরের অবস্হা কি।

৩ লুটফিস্ক (Lutefisk)

কোথাকার খাবার: নরওয়ে

জিনিসটা কি: কড মাছকে বহুদিন ধরে ক্ষারীয় দ্রবনে ডুবিয়ে রাখার পর মাছের মাংস যখন নিজেই ক্ষারে পরিনত হয় তখন তাকে লুটফিস্ক বলে। এটা এত ক্ষয়কারী একটা বস্তুতে পরিনত হয় যে রুপার কাটাচামচ দিয়ে খেতে গিয়ে কাটাচামচ গলে যাবার উদাহরন আছে।

দাঁড়ান আরো ব্যাপার আছে: এই ক্ষারীয় দ্রবন(সোডিয়াম বা পটাসিয়াম হাইড্রক্সাইড) ব্যবহার করা হয় নর্দমা পরিষ্কার, ব্যাটারী ও বায়োডিজেল বানানো, গাছ মারা এই ধরনের কাজে। এর সংস্পর্শে এলে রাসায়নিক পোড়া, অন্ধ হয়ে যাওয়া, স্হায়ী ক্ষত হতে পারে যদি আপনি লুটফিস্ক মুখে না দিয়ে গায়ে ফেলেন।

বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা: এখনো আসে না। কোনদিন যদি আসে তাহলে ধরে নেবেন দেশের অবস্হা খুব খারাপ।

২ বাচ্চা ইদুরের মদ (Baby Mice Wine)

কোথাকার খাবার: চীন ও কোরিয়া

জিনিসটা কি: লুটফিস্ক বা কাসু মার্যু খাবার পর তেষ্টা পেলে কি খাবেন। বাচ্চা ইদুরের মদ খেয়ে নিন! চীন ও কোরিয়াতে এটা স্বাস্হ্য ভালো করার টনিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। চোখ না ফোটা বাচ্চা ইদুরকে জীবিত অবস্হায় ভাত পচানো মদের বোতলে ভরে দেয়া হয়। এরপর গাজন প্রক্রিয়া চলে ডুবে মরা ইদুরসহ মদের।

দাঁড়ান আরো ব্যাপার আছে: বোতলটা ইদুরের বাচ্চাগুলো সহই আসে। নেশার ঘোরে বোতল থেকে ইদুরসহ মদ গ্লাসে ঢেলে ফেলার পর যখন তা মুখে যাবে তখন শরীরের সব ফুটো দিয়ে বমি বেরিয়ে আসার চান্স থাকে। সারা জীবনের জন্য মদ ছেড়ে দেয়ার ইচ্ছাও জাগতে পারে।

বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা: বাংলাদেশে ধেনো আর মহুয়া থাকতে এই মদ আসেনা। তবে বার্মা থেকে নতুন নেশার বস্তু হিসেবে এসে পরতে কতক্ষন? কামড় খেয়ে নেশা করার জন্য পোকার সেট বিক্রি হতে পারলে বা টিকটিকি খেয়ে নেশা করতে পারলে এই জিনিষ আকর্ষনীয় লাগতে পারে।

১ বালুট (Balut)

কোথাকার খাবার: ফিলিপাইন

জিনিসটা কি: নাম এত স্বার্থক হতে খুব কম দেখা যায়। হাঁসের ডিমে তা দিতে দেয়া হয় যতক্ষন না ভেতরের বাচ্চাটার ঠোট, পালক, হাড় সব গজিয়ে যায়। তারপর সেটাকে সেদ্ধ করে খাওয়া হয়। হাড়গোড়সহ কুড়মুড়িয়ে খাওয়ার অপার আনন্দ উপভোগ করেন খাদক।কাম্বোডিয়া, ফিলিপাইন এবং হাবিয়া দোযখে এই খাবার বিক্রি হয়। বিক্রেতারা গরম বালিভর্তি বালতিতে করে এই বাল বিক্রি করেন। বিক্রেতাদের জ্বলন্ত কয়লার মত চোখ, মুলার মত দাত এবং মাথায় শিং থাকার গুজব শোনা যায়।

দাঁড়ান আরো ব্যাপার আছে: ডিমের একপাশে একটা ছোট ফুটো করে প্রথমে সুড়ুত করে চুমুক দিয়ে রস খেয়ে ফেলার নিয়ম। তারপর হাড়গোড়সহ কুড়মুড়িয়ে খাবেন বাকীটা। পালক বাছার নিয়ম নেই। আর ঘটনার দরকার আছে?

বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা: বাংলাদেশে আসেনা। তবে মাঝেমধ্যে হোটেলে সেদ্ধ ডিমের মাঝে মুরগীর বাচ্চা পাবার ঘটনা শোনা যায়। বাচ্চার দাম চাইতে পারে এই ভয়ে সেটাও খেয়ে নেয়ার একটা পুরোন কৌতুক আছে। তবে এরপর আপনার সংগে এই ঘটনা ঘটলে বাবুর্চির বাড়ী ফিলিপাইন না হাবিয়া দোযখ তা চেক করতে ভুলবেন না।



মন্তব্য চালু নেই