দুই খাদ্য উপাদানে কোলন ক্যান্সারের কার্যকর চিকিৎসা

কোলন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ দুটো খাবার। ‘জার্নাল অব ক্যান্সার’-এ প্রকাশিত গবেষণাপত্র বলা হয়, কিউকারমিন ও সিলিমারিন নামের দুটো খাদ্য উপাদান কোলন ক্যান্সার মুক্তিতে থেরাপি হিসাবে কাজ করে।

গবেষণায় বলা হয়, কিউকারমিন ও সিলিমারিন কোলন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। হলুদের অন্যতম একটি উপাদান কিউকারমিন। প্রদাহবিরোধী উপাদান হিসাবে সমধিক পরিচিত। অন্যদিকে, মিল্ক থিস্টেল নামের এক উদ্ভিদে মেলে সিলিমারিন। এই উপাদানট লিভারের রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

আমেরিকার সেইন্ট-লুইস ইউনিভার্সিটির গবেষকরা জানান, এই দুটো প্রাকৃতিক উপাদানের প্রয়োগ ঘটালে কোলন ক্যান্সারের ছড়িয়ে পড়া থেমে যায়। ক্যান্সারে আক্রান্ত কোষগুলোরও দ্রুত মৃত্যু ঘটে কিউকারমিন ও সিলিমারিনের যৌথ প্রয়োগে। অন্তত গবেষণাগারের পরীক্ষাই এমনটাই দেখা গেছে।

কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত কোষের কালচার পরীক্ষায় কিউকারমিন দেওয়া হলেতার পলিফেনোল এবং পরে সিলিমারিন একযোগে প্রতিরোধীর ভূমিকায় অবর্তীর্ণ হয়। পলিফেনোল হলুদের সেই উপাদান যা তরকারিতে অদ্ভুত হলুদ রং প্রদান করে। এক কোষ থেকে অন্য কোষে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ার হার এই দুই উপাদানের প্রয়োগে কমে আসে। এ ছাড়া আক্রান্ত কোষের মৃত্যু হারও বৃদ্ধি পায়।

এর আগেও কয়েকটি গবেষণায় কিউকারমিনের নানা উপকারী কার্যকারিতার প্রমাণ মিলেছে। প্রদাহ কমাতে দক্ষ কিউকারমিন। এ ছাড়া মস্তিষ্কের কগনিটিভ স্বাস্থ্য রক্ষায় এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বৃদ্ধিতে কাজ করে উপাদানটি। এটি পারকিনসন্স এবং আলঝেইমার্স রোগের চিকিৎসায় উপকারী।

মিল্ক থিস্টের উদ্ভিদের একটি উপাদান সিলিমারিন। অ্যাস্টেরাসিয়া পরিবারের অন্তর্ভুক্ত একটি উদ্ভিদ। ১৯৮৯ সালে ইউরোপিয়ান কমিশন সিলিমারিনের ৭০-৮০ শতাংশ স্ট্যান্ডরাইজড কনসেনট্রেশনের ব্যবহারে লিভারের বিষাক্ত উপাদান দূরীকরণের চিকিৎসা করা হয়। ২০০২ সালে ক্রনিক ইনফ্লেমেটরি লিভার ডিজিস এবং হেপটিক সিরোসিসের চিকিৎসাতেও সিলিমারিন পার্শ্ব ওষুধ হিসাবে প্রয়োগ হতে থাকে। এর ব্যবহারে মত দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বিশেষজ্ঞরা ওই দুটো উপাদের যৌথ ব্যবহারে কোলন ক্যান্সার দূরীকরণের উপায় খুঁজে পান। এ ছাড়া বিষাক্ত উপাদান দূর করাসহ বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সামলাতেও এদের গুণাগুণ সম্পর্কে জেনেছেন তারা।

এ গবেষণা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। প্রাণীর দেহে এর প্রয়োগ ঘটিয়ে গবেষণা চালিয়ে যেতে হবে। তবে কিউকারমিন ও সিলিমারিনের এলোমেলো মিশ্রণ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে বলেই জানান বিজ্ঞানীরা। সূত্র : ডিএনএ ইন্ডিয়



মন্তব্য চালু নেই