অনিয়ম ও সমন্বয়হীনতায় দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা দেশের ১৪০টি রেলস্টেশন আবারও চালু করছে সরকার। এর মধ্যে ৬০টি স্টেশন আজ বৃহস্পতিবার প্রথম ধাপে চালু হচ্ছে।

এসব বন্ধ স্টেশন চালু হলে পূর্ব ও পশ্চিমের সব রেলের ‘রানিং টাইম’ কমে আসবে। ট্রেনগুলো দ্রুত ক্রসিং নেওয়ার সুবিধা পাবে। নরসিংদীর ঘোড়াশাল স্টেশন থেকে বেলা ১১টায় ৬০টি বন্ধ স্টেশন চালু কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন রেলমন্ত্রী। এ সময় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাকি ৫৯টি স্টেশন চালু করা হবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কমল কৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য রাইজিংবিডিকে বলেন, নতুন নিয়োগ পাওয়া ২৫৭ জন সহকারী স্টেশন মাস্টারের মধ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১৪০ জনকে বন্ধ স্টেশনগুলোতে পদায়ন করে এগুলো খুলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

তিনি বলেন, ঢাকা বিভাগের ২১টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২টি, পাকশী ২৩টি ও লালমনিরহাটের চারটি স্টেশন একযোগে চালু হবে। রেলওয়ের ক্যাটাগরি অনুযায়ী স্টেশনগুলো ‘বি’ শ্রেণির বলেও জানান এই অতিরিক্ত সচিব।

মন্ত্রণালয়ের হাতে থাকা তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে মোট ৪৬০টি রেলস্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে ১৮৮টি স্টেশন দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ। যার মধ্যে রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি। রেলওয়ের লালমনিরহাট ও পাকশী বিভাগে শতাধিক স্টেশন দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে প্রায় ৬০টি স্টেশন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে দীর্ঘ ৫ থেকে ৭ বছর । এ ছাড়া আংশিক ও শিফটিং করে বন্ধ রয়েছে ১০ থেকে ২০টি স্টেশন।

রেলভবন সূত্র জানায়, ঢাকা বিভাগে যে ২১টি স্টেশন চালু হচ্ছে সেগুলো হলো টঙ্গী-ভৈরব সেকশনের ঘোড়াশাল, আমীরগঞ্জ, শ্রীনিধি। টঙ্গী-ময়মনসিংহ সেকশনের ভাওয়াল গাজীপুর, সাতখামাইর, ধলা, উমেদনগর। ময়মনসিংহ, জামালপুর সেকশনের পিয়ারপুর। জামালপুর-ময়মনসিংহ সেকশনের কেন্দুয়াবাজার, ভূঞাপুর। ময়মনসিংহ-ভৈরব বাজার সেকশনের মধ্যে বিসকা, সোহাগী, নান্দাইল রোড, কালিকাপ্রসাদ। শ্যামগঞ্জ-মোহনগঞ্জ সেকশনের ঠাকুরকোনা, বারহাট্টা। আখাউড়া-শায়েস্তাগঞ্জ সেকশনের মধ্যে শাহাজীবাজার, মুকুন্দপুর। শায়েস্তাগঞ্জ-সিলেট সেকশনের মধ্যে সাতগাঁও, লংলা ও বরমচাল স্টেশন।

চট্টগ্রাম বিভাগের যে ১২টি স্টেশন চালু হচ্ছে সেগুলো হলো, চট্টগ্রাম-লাকসাম সেকশনের মুহুরীগঞ্জ, ফাজিলপুর, শর্শদী, নাওটী। লাকসাম-আখাউড়া সেকশনের মধ্যে ময়নামতি। লাকসাম নোয়াখালী সেকশনের মধ্যে দৌলতগঞ্জ, খিলা, নাথেরপেটুয়া, বজরা। লাকসাম-চাঁদপুর সেকশনের মধ্যে শাহাতলী। চট্টগ্রাম-নাজিরহাট সেকশনের মধ্যে সরকারহাট ও ঝউতলা।

পাকশী বিভাগের যে ২৩টি স্টেশন চালু হচ্ছে সেগুলো হলো, খুলনা-দর্শনা সেকশনের ফুলতলা, রূপদিয়া, মেহেরুল্লানগর, সফদারপুর ও আনসারবাড়ীয়া। দর্শনা-ঈশ্বরদী সেকশনের মধ্যে মিরপুর ও পাকশী। ঈশ্বরদী-সান্তাহার সেকশনের মধ্যে আজিমনগর, মাধনগর ও রানীনগর। সান্তাহার-পার্বতীপুর সেকশনের মধ্যে হিলি ও ভবানীপুর। পার্বতীপুর-চিলাহাটি সেকশনের মধ্যে ডোমার রেলস্টেশন। আব্দুলপুর-চাঁপাই সেকশনে কাঁকনহাট।

আমনুরা-রহনপুর সেকশনে নাচোল। যশোর-বেনাপোল সেকশনের মধ্যে বেনাপোল। পোড়াদহ-গোয়ালন্দঘাট সেকশনের মধ্যে কুমারখালী, খোকসা, পাংশা ও পাঁচুরিয়া জংশন। পাঁচুরিয়া-ফরিদপুর সেকশনের মধ্যে আমিরাবাদ ও ফরিদপুর। কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া সেকশনের মধ্যে মধুখালী জংশন।

রেলওয়ে লালমনিরহাট বিভাগের যে চারটি স্টেশন চালু হচ্ছে সেগুলো হলো সান্তাহার-বোনারপাড়া সেকশনের মধ্যে আলতাফনগর, ভেলুরপাড়া ও মহিমাগঞ্জ। এ ছাড়া লালমনিরহাট-বুড়িমারী সেকশনের মধ্যে আদিতমারী অন্নদানগর।