দিনাজপুরে ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইনে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক

জাতীয় সংসদে ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৪ পাস হওয়ার পর সারা দেশের মতো বৃহত্তর দিনাজপুর অঞ্চলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জানা যায়, বৃহত্তর দিনাজপুর অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণ লিচু, আম, কাঁঠাল, তরমুজ, কলাসহ বিভিন্ন জাতের ফল-ফলাদি উৎপন্ন হয়। আর এসব ফল-ফলাদি বৃহত্তর দিনাজপুর অঞ্চলের মানুষের চাহিদা পূরণ করে রাজধানীসহ সারাদেশে সরবরাহ করে। আর এসব ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের আশা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ফরমালিন বিষ ফল-ফলাদি পাকাতে ও রং পরিবর্তন করতে স্প্রের মাধ্যমে ব্যবহার করতো।
এদিকে, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়সহ মোট ২৩ উপজেলার আম, লিচু, কাঁঠাল, আনারস, কলা, তরমুজ, আপেল, ডালিম, আনার ব্যবসায়ীরা ফরমালিন ব্যবহার করে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দেদারছে ব্যবসা চালিয়ে আসছে।
অপরদিকে, হাট বাজারের মাছ-মাংস, কাঁচা শাক-সবজিতে ব্যবসায়ীরা ফরমালিনসহ নানা ধরনের বিষাক্ত কেমিকেল মিশ্রিত করে চড়া দামে মানুষের কাছে বিক্রি করছে।
বৃহত্তর দিনাজপুর অঞ্চল বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত দ্বারা বেষ্টিত। দিনাজপুর বিরল উপজেলা, সদরের খানপুর, কমলপুর, মোহনপুর, হিলি (হাকিমপুর) উপজেলা, ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী, হরিপুর উপজেলা, পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্ধ জিরো পয়েন্টসহ অসংখ্য সীমান্ত দিয়ে চোরাকারবারীরা ফরমালিনসহ নানা ধরনের বিষাক্ত কেমিকেল নিয়ে আসে।
অবৈধ ফরমালিন ব্যবহার প্রতিরোধকল্পে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার জাতীয় সংসদে যে আইন পাশ করেছেন তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইনে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ লাখ টাকা জড়িমানাসহ আরো যে আইনের বিধি-বিধান করেছেন তা প্রশংসার দাবিদার। সমগ্র জাতি ও সমাজের মানুষ সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
অপরদিকে, শুধু আইন করে চুপ থাকলে বিশেষ করে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী তারা তাদের অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাবে। তাই ফরমালিন ব্যবহার প্রতিরোধে প্রশাসনিকভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে গণমাধ্যম কর্মী, মসজিদ-মাদরাসার ইমাম-খতিব, শিক্ষকসহ সচেতন মানুষকে ফরমালিন প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে হবে।
বিশেষ করে দৈনিক কাঁচা বাজারের মাছ-মাংস, শাক-সবজি ব্যবসায়ী, আড়তদার, মজুদদারসহ ফল বিক্রেতা ও সরবরাহকারীদের ওপর করা নজর রাখতে হবে। কারণ নিজের ও দেশের মানুষের শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইনের কোনো বিকল্প নেই।
এছাড়াও কৃষি জমিতে উৎপাদিত শাকসবজি, ফল-ফলাদি ক্ষেত থেকে উঠার আগেই ওইসব জমিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করতে পারলে ফরমালিন ব্যবহার অনেক কমে যাবে। এভাবে বিশেষ নজরদারির মাধ্যমে ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন- ২০১৪ সফল হবে এবং দেশের মানুষ সুস্থ, সবল ও ভালো থাকবে ও বিষক্রিয়া থেকে রেহাই পাবে।



মন্তব্য চালু নেই