দিনাজপুরের খবর (১৭/৬/১৪)

মাহমুদুল হক মানিক, দিনাজপুর প্রতিনিধি:
## দিনাজপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত
দিনাজপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুর-রংপুর সড়কের রামডুবি নামক স্থানে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী একই পরিবারের ৩ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় দেড় ঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল ৭ টার দিকে দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দর এলাকার শমসের আলীর ছেলে মোক্তার হোসেন (৬০), মোক্তার হোসেনের স্ত্রী জাহানারা বেগম (৫০) ও মোক্তার হোসেনের ভাই রেজাউল করিম (৪২) মোটরসাইকেল যোগে দিনাজপুরে আসছিল। পথিমধ্যে রামডুবি নামক স্থানে ঢাকা থেকে আসা হানিফ পরিবহনের একটি বাস তাদেরকে পিছন দিক থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই রেজাউল করিম নিহত হয়। পরে আহতাবস্থায় জাহানারা বেগম ও মোক্তার হোসেনকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সকাল ৯ টার দিকে তারাও মারা যায়।
দূর্ঘটনার ঘটনায় সকাল ৭ টা থেকে দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়ককে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় স্থানীয় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনলে সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে যানচলাচল শুরু হয়। কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) হিপজুল আলম মুন্সি জানান, নিহতের পরিবারের দাবি দাওয়া না থাকায় ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কোন মামলাও দায়ের করা হয়নি।

## বিরামপুরে ইউপি সদস্য ও পরিবারের বিরুদ্ধে থানায় জিডি
দিনাজপুর প্রতিনিধি: বিরামপুরের কাটলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য মকছেদ আলী মন্ডল ও পরিবারের বিরুদ্ধে থানায় জিডি হয়েছে। খিয়ারমামুদপুর গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে এনামুল হকের অভিযোগপত্রটি দিনাজপুরের বিরামপুর থানা পুলিশ ১২ জুন রেকড করেছে (জিডি নং ৪৬৭)।
থানার লিখিত অভিযোগ সূত্র, বিজিবি ২ দিনের অভিযানে চোরাকারবারীদের ধাওয়া করে ১০ কেজি চান্দি উদ্ধার করে। ইউপি সদস্য মকছেদ আলী মন্ডল(৩২), তার ভাই তালেবুল ইসলাম (২৮), পিতা মকবুল হোসেন (৫১), বিজিবির চান্দি উদ্ধারের বিষয়ে চোরাকারবারীদের পক্ষ নিয়ে অভিযোগকারী এনামুল হককে দায়ী করে বিভিন্ন ভাষায় হুমকী দেয়। এতে তিনি প্রাণনাশ ও আশু শান্তি ভংগের আশংকায় থানায় অভিযোগটি দিয়েছে।
বিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই।
অভিযুক্ত ইউপি মকছেদ আলী মন্ডল বলেন, এনামুল হক মাদক ব্যবসায় জড়িত, এ বিষয়ে ৯ জুন তিনি থানায় অভিযোগ দেয়ায় এনামুল তার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছে।

## ফরমালিন, কীটনাশক ও বিষাক্ত হরমন মিশ্রিত আম-লিচু বাজারে
দিনাজপুর প্রতিনিধি: ফরমালিন, কীটনাশক ও বিষাক্ত হরমন মিশ্রিত আম-লিচু দিনাজপুর বাজার সয়লাব। না জেনে সাধারন মানুষ বিষ খাচ্ছে। নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ সর্বস্তরের মানুষ। প্রতিরোধে কোন উদ্যোগ নেই প্রশাসনের।
স্বাস্থ্য বিভাগ নিরব দর্শক! রাজধানীতে ফরমালিন প্রতিরোধে যুদ্ধ ঘোষনা করলেও জেলা শহর গুলোতে কোন তৎপরতা নাই। সাধারন মানুষ এখন ফল-মুল ও মাছ মাংসে আর বিষ খেতে রাজী নয়। তারাও এখন ফরমালিন প্রতিরোধে প্রমাসনের পাশে থাকলেও প্রশাসন নিরব ভুমিকা পালন করছে। দিনাজপুর শহরের বাহাদুর বাজারহ (এনএ মার্কেট) এলাকায় ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা সম্মিলিত ভাবে ফরমালিন নিরিক্ষন মেশিন বসিয়েছে।
মৌসুমী আম-লিচুর প্রচুর ফলন হয়েছে এবার দিনাজপুরে। এবার বৃষ্টি সময় মত না হওয়ায় আম-লিচুর আকার হয়েছে অত্যন্ত ছোট। এছাড়াও অনাবৃষ্টির কারনে লিচু শুকিয়ে ঝোড়ে পড়ে যাচ্ছিল। ঝড়ে পড়ে যাওয়ার হাত থেকে লিচু রক্ষা করার জন্য এক যাতীয় বিষাক্ত হরমন ব্যবহার করেছে লিচুর বাগান মালিকরা। ফলে লিচু বাজারে আসলেও আকার অত্যন্ত ছোট এবং টক। এক কীট নাশক বিশেষজ্ঞ জানান, অকালে লিচু নষ্ট হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য এবং রং হওয়ার জন্য এক জাতিয় কীট নাশক ও হরমন ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলে লিচু ঝোড়ে পড়েনি এবং অকালে রং হয়েছে মাত্র। এটা আসল পাকা লিচু নয়। এসব লিচু এবং আম খাওয়ার অর্থই হচ্ছে বিষ খাওয়া। সাধারন মানুষের চোখে ধুলো দিয়ে বাজারে এসব বিষাক্ত লিচু বিক্রি করা হচ্ছে অবাধে। অকালে কীপ নাশক দিয়ে পাকানোর ফলে শুধু মাত্র রং হয়েছে কিন্তু মিষ্টি হয়নি। এসব লিচু বাজারে ১৫০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা শ দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব বিষাক্ত লিচু খেয়ে মানুষ জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুরা বেশী জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ওই কীট নাশক বিশেষজ্ঞের মতে এসব ফল খেয়ে শিশুরা মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে। এর ভয়াবহতা কত ভয়ানক তা একজন চিকিৎসক বিশেষজ্ঞ ও কীট নাশক বিশেষজ্ঞ ছাড়া কারো পক্ষে নির্নয় করা বা বুঝা সম্ভব নয়। রাজধানীতে ফরমালিন প্রতিরোধ জোরদার করায় দিনাজপুরে বিক্রি হচ্ছে ফরমালিন যুক্ত ফল-মুল। দামেও এখন অনেক কম। কারন জেলার বাইরে ফল-মুল পাঠাতে পারছে না। বিষাক্ত আম,লিচু, জাম রাস্তা ঘাটে অবাধে বিক্রি হচ্ছে। একই ভাবে পাকানো হচ্ছে বিভিন্ন জাতের আম। বেশ কিছু জাতের আম বাজারে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু এসব আম খেয়ে কোন সাধ পাওয়া যায়না বলে ক্রেতাদের অভিযোগ। কারন ওই একই ফরমুলায় কীট নাশক দিয়ে পাকানো হয়েছে। সাধারন মানুষকে মৃত্যুর হাত থেকে এবং জটিল রোগ থেকে বাচাঁতে দ্রুত প্রশাসনিক উদ্যোগ গ্রহনের দাবী সাধারন মানুষের। এছাড়াও স্বাস্থ্য বিভাগের গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব তাকলেও স্বাস্থ্য বিভাগ নিরব দর্শকের ভুমিকা পালন করছে। অসাধু ফল ব্যবসায়ীরা মানুষকে বিষ কাইয়ে মোটা অংকের মুনাফ লুটে নিচ্ছে। দিনাজপুরের ফল খাওয়া নিয়ে সাধারন মানুষ প্রচন্ড ঝুকির মধ্যে পড়েছে। এসব বিষাক্ত ফল দিনাজপুর থেকে রাজধানী ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। ফলে সারা দেশের মানুষ এসব বিষাক্ত মৌসুমী ফল খেয়ে বিপদগ্রস্থ হচ্ছে। সাধারন মানুষের প্রশ্ন কে রক্ষা করবে এসব বিষাক্ত ফলের হাত থেকে?

## পার্বতীপুরে আশ্রয়ন প্রকল্পের টাকা আতœসাতসহ দূর্নীতির অভিযোগ তদন্ত
দিনাজপুর প্রতিনিধি: পার্বতীপুর উপজেলার চন্ডিপুর কালিকাবাড়ী আশ্রয়ন প্রকল্পের বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি কর্তৃক টাকা আতসাতসহ ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগে তদন্ত সম্পূর্ন। সমিতির সাবেক সভাপতি সাদেকুল ইসলামের কাছ থেকে টাকা আদায় যোগ্য বলে উলে¬খ্য করা হয়েছে।
জানা যায়,এলাকার ভূমিহীন ও আশ্রয়হীন পরিবারের বাসস্থান ও কর্মস্থানের লক্ষে সরকার কর্তৃক ২০০০ সালে উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের ঝাড়–য়ারডাঙ্গা এলাকায় কালিকাবাড়ী আশ্রয়ন-১ প্রকল্পের ৬০ পরিবারের জন্য ৬০টি বাড়ী নির্মান করে তা বরাদ্ধ দেয়া হয়। পরিবারগুলোর কর্মস্থানের জন্য ৩ একর ৮৮ শতক ও ১ একর ১৬ শতক দুইটি পুকুর বরাদ্ধ দিয়ে ২০০১ সালে উপজেলা সমবায় অফিসারের মাধ্যমে কালিকাবাড়ী আশ্রয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতির নামে ৬০ পরিবারের ১২০ জন সদস্য করে মুক্তিযোদ্ধা ছলিমুদ্দিনকে কমিটির সভাপতি করে ৭ সদস্য কমিটি গঠন করে।
কমিটি ২০০৬ সাল পর্যন্ত চালার পর তৎকালীন উপজেলা সমবায় অফিসার হেলালুর রহমান স্বাক্ষারীত গত ২৮/১২/১০ তদন্ত প্রতিবেদন, উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আবু দাইয়ান কর্তৃক গত ২০/০৬/১১ সালে তদন্ত প্রতিবেদন উলে¬খ করেন, সাদেকুল ইসলামকে এ্যাডহক কমিটির প্রধান করে দায়ীত্ব পাওয়ার পার থেকে সমিতির টাকা অতœসাতসহ ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতি করেছে বলে সমিতির অন্যান্য সদস্যরা অভিযোগ করেন। সাবেক সভাপতি সাদেকুল ইসলাম তৎকালীন সমবায় অফিসারের সাথে লিয়াজু করে ২০০৯ সাল পযুন্ত সমিতি পরিচালনা করে। এর মধ্যে সাদেকুল বাদী হয়ে সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ছলিমুদ্দিনকে আসামী করে সমিতির পুকুর ইজারা ও মাছ বিত্রি“র ১ লাখ ৮১ হাজার টাকা আতœাসাত দেখিয়ে মামলা দায়ের করেন। এ ছাড়াও সমিতি থেকে ৬ পরিবার ১২জন সদস্যকে সমিতির সকল কার্যত্র“ম থেকে বঞ্চিত করেন। গত ০৩/০৬/১১ তারিখে সাদেকুলে নেতৃতে সাবেক সভাপতি সহ ৫/৬ জনকে বেধড়ক মারডাং করে। সাদেকুল সমিতির সভাপতি হওয়ার পর থেকে অদ্যবধি কোন হিসেব দেয়নি বলে বর্তমান উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আ.স.ম আব্দুর রশিদ বলেন।
সদস্যদের অভিযোগ সাদেকুল সমিতির সভাপতি থেকে সে ৭ লাখ ২০ হাজার ১০ টাকা আতœসাতে করেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারে ৪৭, ৬১, ২৭৭৭, ০০০, ২৭, ০০৭, ১২ স্বারকে পার্বতীপুর উপজেলা সমবায় দপ্তরের সহকারী পরিদর্শক এস এম কামরুজ্জামানকে সভাপতি করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি অন্তবর্তী ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করে পত্র দেয়। সাদেকুল পত্র পাওয়ার পরও ক্ষমতা হস্তান্তর না করে জেলা সমবায় অফিসে যোগাযোগ করে। মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে নিজের পদ ঠিক রেখে ঘটনাটি ধামা চাপা দেয়ার চেষ্টা করে। সমিতির চার্জ হস্তান্তরে গড়িমশির কারনে গত ২৬/০৮/১৩ সমিতির সদস্যরা এ নিয়ে আবারও লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
এ নিয়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকেলে সমিতির প্রায় ৪০ জন সদস্য পার্বতীপুর উপজেলা সমবায় অফিসে গিয়ে কর্মকর্তার সাথে বাক-বিতান্ডের একপর্যয়ে ৭দিনের মধ্যেই সমিতির সভাপতির কাছ থেকে ক্ষমতা হস্তান্তর করে অন্তবর্তী ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর অঙ্গিকার করলে সমিতির সদস্যরা বাড়ী ফিরে যায়।
পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারে ৪৭. ৬১. ২৭৭৭. ০০০. ২৭. ০০১. ১২. ২৩৭ স্বারক কালিকাবাড়ী আশ্রয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর পুকুর থেকে মাছ বিত্রি“র ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা আতœসাতের অভিযোগে উপজেলা সমবায় আফিসার আ.স.ম আব্দুর রশিদ এক তদন্ত প্রতিবেদনে উলে¬খ করেন, ২০১০,২০১১.২০১২ ও ২০১৩ বছরে মাছ বিত্রি“ পুকুর ইজরা ও সঞ্চয় আদায় থেকে ৭ লাখ ৩০ হাজার ১৫১ টাকা থেকে সভাপতি বিভিন্ন ব্যয় করেন ৫ লাখ ৬ হাজার ৯০৪ টাকা। বাকি অবশিষ্ট ২ লাখ ২৩ হাজার ২৪৭ টাকা সমিতির সাবেক সভাপতি সাদেকুল ইসলামের কাছ থেকে আদায় যোগ্য বলে উলে¬খ্য করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই