দিনাজপুরের খবর

মাহমুদুল হক মানিক, দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি :

## অপহরনের ৪দিন পর স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার ॥ আটক ৫

দিনাজপুরে অপহরনের ৪দিন পর স্কুল ছাত্র সাইয়েদুল মুরসালিন’র লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার ভোরে তার বাড়ীর পার্শ¦বর্তী রাস্তার পাশ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত মুরসালিন সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রামের দলিল লেখক মোকসেদুল ইসলামের ছেলে ও চেরাডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্র। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে অপহরণ করে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করেছিল বলে জানায় তার স্বজনরা।
নিহতের স্বজন ও প্রতিবেশীরা জানায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়ীর পাশে আম গাছ থেকে আম পারছিল। এসময় সঙ্গে থাকা তার চাচাত ভাই মোফাজ্জল হোসেন বাড়ীর ভিতরে ডালি আনতে গিয়ে ফিরে এসে দেখে মুরসালিন নেই। তার প্রতিবেশী রিক্সাচালক ওবায়দুর রহমানের ছেলে রশিদুল ইসলাম তাকে ডেকে নিয়ে যায়। রশিদুল জানায়, আম খাওয়ার জন্য তাকে ডেকেছিল। তারপর মুরসালিন বাড়ীর পশ্চিম পাশে চলে যায়, তবে কোথায় গেছে তা জানে না বলে জানায় রশিদুল।
নিহত মুরসালিনের পিতা মোকসেদুল ইসলাম জানান, ওই দিন বিকেল ৪টার দিকে আমার মোবাইলে ০১৯৫১৩৫৩২৮৬ নম্বর থেকে ফোন আসে। ফোনে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মুরসালিনকে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। তাই ৫০ লাখ টাকা দিতে হবে অন্যথায় তার লাশও পাওয়া যাবে না বলে জানায় অপহরণকারী। অপহরণকারীরা এসব কথা পুলিশকে জানালে আরো তি হবে বলে জানায়। তবে নিহত মুরসালিনের পিতা জমি নিয়ে কারো সাথে কোন বিরোধ নেই বলে জানান।
দিনাজপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলতাফ হোসেন জানান, অপহরণকারীরা সুরসালিনকে হত্যা করে বাড়ীর পাশে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে একই গ্রামের ওবায়দুর রহমান (৫৫), তার স্ত্রী রওশন আরা (৪২), মেয়ে ওয়াসিয়া (১২), ওবায়দুর রহমানের শ্বাশুড়ী মালেকা বেগম (৬৫) ও শরিফুলসহ ৫জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য দিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই অপহরন ও খুনের ঘটনা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক ােভের সৃষ্টি হয়েছে এবং চরম আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী অভিযোগ, অপহরনের পর কোতয়ালী থানার ওসি বলেছিলেন অপহরনকারীদেও মোবাইল টেকিং করা হয়েছে এবং তাদেও অবস্থা জানা গেছে। এর পরেও কেন পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে পারেনি এটা অনেকের কাছেই প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। তাহলে কি অপহরনকারীরা কোন প্রভাবশালী বা মতাসীন দলের লোক?

## ফরমালিন-কীটনাশক-ক্যালশিয়াম কার্বইড ও বিষাক্ত হরমন মিশ্রিত আম-লিচু বাজারে

বিষাক্ত ক্যালশিয়াম কার্বইড, ফরমালিন, কীটনাশক ও বিষাক্ত হরমন মিশ্রিত আম-লিচু দিনাজপুর বাজার সয়লাব। না জেনে সাধারন মানুষ বিষ খাচ্ছে। নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ সর্বস্তরের মানুষ। প্রতিরোধে কোন উদ্যোগ নেই প্রশাসনের। স্বাস্থ্য বিভাগ নিরব দর্শক!
মৌসুমী আম-লিচুর প্রচুর ফলন হয় দিনাজপুরে। এবার বৃষ্টি সময় মত না হওয়ায় আম-লিচুর আকার হয়েছে অত্যন্ত ছোট। এছাড়াও অনাবৃষ্টির কারনে লিচু শুকিয়ে ঝোড়ে পড়ে যাচ্ছিল। জোড়ে পড়ে যাওয়ার হাত থেকে লিচু রক্ষা করার জন্য এক যাতীয় বিষাক্ত হরমন ব্যবহার করেছে লিচুর বাগান মালিকরা। ফলে লিচু বাজারে আসলেও আকার অত্যন্ত ছোট এবং টক। এক কীট নাশক বিশেষজ্ঞ জানান, অকালে লিচু নষ্ট হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য এবং রং হওয়ার জন্য এক জাতিয় কীট নাশক ও হরমন ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলে লিচু ঝোড়ে পড়েনি এবং অকালে রং হয়েছে মাত্র। এটা আসল পাকা লিচু নয়। এসব লিচু এবং আম খাওয়ার অর্থই হচ্ছে বিষ খাওয়া। সাধারন মানুষের চোখে ধুলো দিয়ে বাজারে এসব বিষাক্ত লিচু বিক্রি করা হচ্ছে অবাধে। অকালে কীপ নাশক দিয়ে পাকানোর ফলে শুধু মাত্র রং হয়েছে কিন্তু মিষ্টি হয়নি। এসব লিচু বাজারে ১৫০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা শ দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব বিষাক্ত লিচু খেয়ে মানুষ জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুরা বেশী জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ওই কীট নাশক বিশেষজ্ঞের মতে এসব ফল খেয়ে শিশুরা মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে। এর ভয়াবহতা কত ভয়ানক তা একজন চিকিৎসক বিশেষজ্ঞ ও কীট নাশক বিশেষজ্ঞ ছাড়া কারো পক্ষে নির্নয় করা বা বুঝা সম্ভব নয়। একই ভাবে পাকানো হচ্ছে বিভিন্ন জাতের আম। বেশ কিছু জাতের আম বাজারে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু এসব আম খেয়ে কোন সাধ পাওয়া যায়না বলে ক্রেতাদের অভিযোগ। কারন ওই একই ফরমুলায় কীট নাশক দিয়ে পাকানো হয়েছে। বিশেষ কওে ক্যালশিয়াম কার্বাইড পরিমানে বেশী দিয়ে লিচুকে লাল করলেও ভিতরে ফ্যাকাসে থাকে এবং মিষ্টি হয় না। এটি অত্যন্ত ভয়ানক বিষাক্ত পদার্থ। যা মানুষকে তিলে তিলে মৃত্রুর দিকে ঠেলে দেয়। সাধারন মানুষকে মৃত্যুর হাত থেকে এবং জটিল রোগ থেকে বাচাঁতে দ্রুত প্রশাসনিক উদ্যোগ গ্রহনের দাবী সাধারন মানুষের। এছাড়াও স্বাস্থ্য বিভাগের গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব তাকলেও স্বাস্থ্য বিভাগ নিরব দর্শকের ভুমিকা পালন করছে। অসাধু ফল ব্যবসায়ীরা মানুষকে বিষ কাইয়ে মোটা অংকের মুনাফ লুটে নিচ্ছে। দিনাজপুরের ফল খাওয়া নিয়ে সাধারন মানুষ প্রচন্ড ঝুকির মধ্যে পড়েছে। এসব বিষাক্ত ফল দিনাজপুর থেকে রাজধানী ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। ফলে সারা দেশের মানুষ এসব বিষাক্ত মৌসুমী ফল খেয়ে বিপদগ্রস্থ হচ্ছে। সাধারন মানুষের প্রশ্ন কে রক্ষা করবে এসব বিষাক্ত ফলের হাত থেকে?

## দিনাজপুরে বিএনপির মিছিল

দিনাজপুরে বিএনপির বিােভ মিছিল করেছে। দেশব্যাপী গুম, খুন, হত্যা, নির্যাতন, মামলা-হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে এই মিছিল করে।
রবিবার সন্ধ্যায় জেল রোডস্থ দলীয় কার্যালয় হতে মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদণি শেষে পুনরায় দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে জেলা বিএনপির লুৎফর রহমান মিন্টু, সহ-সভাপতি এ্যাড. আনিসুর রহমান চৌধুরী, পৌর বিএনপির সভাপতি সোলায়মান মোলা, সাধারণ সম্পদক সৈয়দ জাকির হোসেন বাবু, সহ-সভাপতি সিরাজ আলী সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মান্নান সরকার, কোতয়ালী বিএনপির সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক মুরাদ আহম্মেদ, সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান এ্যাড. মোফাজ্জল হোসেন দুলাল, ভাইস চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেনসহ বিএনপি ও সকল অঙ্গ-সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মী অংশগ্রহন করে।
মিছিল শেষে সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারের পায়ের নীচের মাটি সরে গেছে। দেশের মানুষের নিরাপত্তা দিতে সরকার সম্পুর্ন ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। গুন-খুন-অপহরন-মামলা-নির্যাতন নিত্য দিনের ঘটনা। সারা দেশের মানুষ আজ আতংকের মধ্যে বাস করছে। দেশ এখন আতংক পুরিতে পরিনত হয়েছে।

## ৬ দফা দাবীতে উত্তরের ১৬ জেলায় পরিবহন ধর্মঘট চলছে

সড়কে অবৈধ যানবাহন ও চাঁদাবাজি বন্ধসহ ছয় দফা দাবিতে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ১৬ জেলায় অনিদিষ্ট কালের পরিবহন ধর্মঘট চলছে। ধর্মঘটের সমর্থনে ১৬ জেলায় পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের অবস্থান নিয়েছে। মহাসড়কে বাস চলাচল না করলেও শত শত পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়ে আছে।
‘বাস-ট্রাক মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের’ ডাকে ২৫ মে রোববার সকাল থেকে শুরু হওয়া অনির্দিষ্টকালের এ কর্মসূচির কারণে ওই অঞ্চলে কোথাও বাস, ট্রাক, ট্যাঙ্কলরি ও কাভার্ড ভ্যান চলাচল করছে না। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
ঐক্য পরিষদের ছয় দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- নসিমন, করিমন, ভটভটি, পাওয়ারটিলার, ট্রাক্টরসহ অবৈধ যান চলাচল বন্ধ, সিএনজি, মাহেন্দ্র, থ্রি হুইলার, ইমা রুট পারমিট বহির্ভূত এলাকায় চলাচল বন্ধ ও রুট পারমিট প্রদান বন্ধ, লিজকৃত বিআরটিসি ও দ্বিতল বাস উপজেলা ভিত্তিক চলাচল বন্ধ, স্কেলের নামে অবৈধ চাঁদাবাজি বন্ধ, বিআরটিএর ট্যাক্স টোকেন ও ফিটনেসের বর্ধিত ফি প্রত্যাহার এবং সকল প্রকার পুলিশি হয়রানি বন্ধ করা।
রাজশাহী বিভাগীয় আন্দোলন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কামাল হোসেন রবি বলেন, প্রথমে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় ধর্মঘটের ডাক দেন। পরে তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে রংপুর বিভাগের আট জেলাতেও একই কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয় মালিক-শ্রমিক সংগঠন গুলো।
দিনাজপুর কালিতলাস্থ কোচ স্টান্ডে রফি নামে এক যাত্রী বলেন, জরুরী প্রয়োজনে ঢাকায় যেতে হবে। কোন বাস চলছে না, অথচ আজকের মধ্যে ঢাকায় যেতে না পারলে অনেক বড় ধরনের তি হয়ে যাবে।
বগুড়া জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সদস্য আমিনুল ইসলাম বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
ধর্মঘটের সমর্থনে দুপুরে বগুড়া কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে সমাবেশ হয়েছে। বগুড়া জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি ও রাজশাহী বিভাগীয় পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক আকতারুজ্জামান ডিউকের সভাপতিত্বে সমাবেশে বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল লতিফ ম-ল, জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সদস্য আমিনুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
বগুড়ার পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক জানান, পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে তারা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। রাতে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে হয়তো একটা ফলাফল আসতে পারে।

## সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা পুরস্কার ও সনদপত্র বিতরণ

সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা-২০১৪ পুরস্কার ও সনদপত্র বিতরণ রবিবার বিরামপুর উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এস.এম.জিন্নাহ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম.মনিরুজ্জামান আল মাসউদ।
উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার রাশেদ আল মাহমুদ এর পরিচালনায় অন্ষ্ঠুানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম.মনিরুজ্জামান আল মাসউদ, সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ ইমার উদ্দিন কায়েস, বিরামপুর মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ শিশির কুমার সরকার, বিরামপুর পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আরমান হোসেন, আমানুল্লাহ আদর্শ বিদ্যা নিকেতনের ছাত্রী অনন্যা সরকার । ১২ জন মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতায় পুরস্কার ও সনদপত্র পায়।



মন্তব্য চালু নেই