সুপারিশে রয়েছে আরও ১০

দশ বছরে নিষিদ্ধ ৬ জঙ্গী সংগঠন

গতকাল ২৫ মে সোমবার দেশের সন্ত্রাস বিরোধী আইনের বলে স্বারষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অন্যতম শীর্ষ জঙ্গী সংগঠ হিসেবে পরিচিত আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এর আগে সর্বশেষ নিষিদ্ধ করা হয় আরেকটি জঙ্গী সংগঠন হিযবুত তাহরীকে, ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর।

সর্বপ্রথম ২০০৩ সালে ৯ ফেব্রুয়ারি তত্ত্বাবধায়তক সরকারের আমলে শাহাদৎ-ই-আল-হিকমা নামের একটি অখ্যাত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত গত প্রায় দশ বছরে ৬টি আলোচিত জঙ্গী সঙগঠনকে নিষিদ্ধ করা বিভিন্ন সময়ে।

২০০৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ- জেএমবিকে এরপর বাংলাদেশ (জেএমজেবি) জাগ্রত মুসলিম জনতা ও হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী (হুজি) নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তৎকালীন সরকার।

সর্বশেষ গতকাল ২৫ মে নিষিদ্ধ করা হলো আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে। ২০১৩ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি ব্লগার রাজীব হায়দারকে হত্যা, এ বছরের ২৬শে ফেব্রুয়ারি মুক্তমনা লেখক অভিজিৎ রায়, পৃথক অপর একটি ঘটনায় ওয়াশিকুর রহমান এবং সম্প্রতি সিলেটের ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশকে হত্যার দায় স্বীকার করে আলোচনায় আসে সংগঠনটি।

এছাড়া, গত ২০শে মে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ঢাবির জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অসীম সরকার, ড. জাফর ইকবাল ও গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারসহ ১০ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে হত্যার হুমকি দেয় আনসারুল্লাহ বাংলা টিম।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শীর্ষ জেএমবির ৬ জঙ্গির ফাঁসি কার্যকরের পরেও দেশে অব্যাহত রয়েছে এদের কর্মকান্ড। আরও ১০ জঙ্গী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে ইতিমধ্যে সুপারিশ করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। সংগঠনগুলো হচ্ছে- হিজবুত তাওহীদ, আল্লাহর দল, কালেমা-ই-জামাত, হিযবুল মাহাদী, জামায়েতুল মুসলেমিন, দাওয়াতি ইসলাম বাংলাদেশ, জমিয়তে আহলে হাদিস বাংলাদেশ, ইসলামী গণআন্দোলন, কালেমার দাওয়াত ও ইসলামী দাওয়াতী কাফেলা।

স্বাধীনতার আগে পাকিস্তানের ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িকতা চর্চাই বর্তমান বাংলাদেশে জঙ্গী উত্থান ও উগ্র মৌলবাদের মূল কারণ। তাছাড়া স্বাধীনতার ৪২ বছরেও দেশবিরোধীদের বিচার না হওয়ায় তাদের ঔদ্ধত্য বেড়েছে। সঙ্কীর্ণ স্বার্থে ধর্মের অপব্যবহার করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করাই তাদের মূল লক্ষ্য।

সম্প্রতি এক গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রকাশ্য ও গোপন জঙ্গী সংগঠনের ১২৫-এর বেশি চিহ্নিত গ্রুপের সক্রিয় অবস্থান বাংলাদেশে। এর মধ্যে আত্মঘাতী গ্রুপের সংখ্যা চারটির বেশি। গ্রুপের সদস্যের অনেকেই দেশে-বিদেশে অস্ত্র পরিচালনায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।

জঙ্গী ও মৌলবাদী কর্মকান্ড প্রতিরোধে বিভিন্ন সময়ে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, সাম্প্রদায়িক জঙ্গিত্ব এখনই নির্মূল করা সম্ভব নয়। কারণ যে ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে তা কয়েকদিনে ভেঙ্গে ফেলা যাবে না। বাস্তবে যা সম্ভব তা হলো- ক্ষতি হ্রাসের কৌশল দ্রুত বাস্তবায়ন করা। স্বল্পমেয়াদী কৌশলসমূহের মধ্যে রয়েছে, ১৯৭১ সালে যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ বা যুদ্ধাপরাধ করেছেন, যারাই মৌলবাদী জঙ্গীদের গডফাদার তাদের বিচার দ্রুত সম্পন্ন ও কার্যকর করা।



মন্তব্য চালু নেই