দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত

পৌরসভা নির্বাচনের পর এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও দলীয় প্রতীকে অংশগ্রহণ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের বিদ্যমান আইনেই এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে থেকে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।

বৈঠকে দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম পৌর নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মতো এত বড় একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের যে পরিমাণ বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করেছিলাম, সেটা হয়নি। তবে তারপরও যারা দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদেরও আমাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই। এ জন্য দলীয় প্রতীকেই ইউনিয়ন নির্বাচনে যাওয়া যেতে পারে। এটা আমাদের জন্য একটি পরীক্ষাও।

এ সময় দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘দলের সাধারণ সম্পাদক যেভাবে কথা বললেন, আমাদের সেই পদ্ধতিতেই এগোতে হবে।’

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র আরও জানায়, পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রশ্রয় দেয়া সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও জেলার নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আগে অভিযুক্তদের ব্যাপারে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

দলের সাত সাংগঠনিক সম্পাদককে এ তদন্তের দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে যারাই দোষী প্রমাণিত হবেন তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। তার আগে কেন্দ্র থেকে তিন সপ্তাহ সময় বেধে দিয়ে অভিযুক্তদের কাছে শো-কজ নোটিস পাঠানো হবে। তবে অভিযুক্তরা কারণ দর্শানোর সুযোগ পাবেন।

সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘যারা বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল তাদের বিরুদ্ধে আমরা দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে তাদেরকে যেসব এমপি-মন্ত্রী ও জেলার নেতারা প্রশ্রয় দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আগে অভিযোগ তদন্ত হওয়া দরকার।’

এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা সাংগঠনিক সম্পাদকদের অভিযুক্তদের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেন। এ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক তোলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উকিল নোটিশ পাঠানো আইনজীবীকে দলের পক্ষ থেকে আইনি সহায়তা দিতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ও আইনজীবী নেতা মমতাজ উদ্দিন মেহেদীকে দায়িত্ব দেয়া হয়।

আগামী ২৮ মার্চ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। শনিবার সন্ধ্যায় দলের কার্যনির্বাহী বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২০তম জাতীয় সম্মেলন ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে।

বৈঠক সূত্র জানায়, ২৮ মার্চ সম্মেলন সফল ৯টি উপ-কমিটি গঠন করে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে জমা দিতে সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

আওয়ামী লীগের ১৯তম জাতীয় সম্মেলন হয়েছিল ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর। ওই কমিটির মেয়াদ গত ২৯ ডিসেম্বর শেষ হয়।



মন্তব্য চালু নেই