দরিদ্র খামারীর ১১৫ হাঁস জবাই করে খেলেন সাপাহারের নির্বাহী অফিসার!

নওগাঁর সাপাহার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জবই বিলের পানিতে হাঁস নামার অপরাধে নিরীহ ও দরিদ্র তিন হাঁস খামারীর ১১৫টি হাঁস ধরে এনে রাতেই জবাই করে খেয়ে ফেলেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফাহাদ পারভেজ বসুনিয়া। অসহায় খামারীর হাঁস খাওয়ার ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে সাপাহার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সরকারী বাসভবনে।

জানা গেছে, অতীতের ন্যায় উপজেলার বিল এলাকার কয়েকজন হাঁস খামারীর হাঁসগুলি বিলের পানিতে চরে বেড়ালে হঠাৎ করে বিলে মৎস্যচাষ প্রকল্পের লোকজন এলাকায় মাইকিং করে বিলে হাঁস চরানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর পর থেকে খামারীরা তাদের হাঁসগুলি বিলের পানি থেকে কয়েশ’ গজ দুরে রেখে লালন পালন করতে থাকে। হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার বিকেলে অসাবধানতা বশতঃ কিছু হাঁস বিলে নামলে বিলের পাহারাদার নুরুল ইসলাম, সুলতান, দেলোয়ার হোসেনসহ কতিপয় লোক পাহাড়ী পুকুর গ্রামের খামারী আব্দুল গফুরের ৩৩টি, মুংরইল গ্রামের কাওসার আলীর ৩২টি ও গৌরীপুর গ্রামের নাদের আলীর ৫০টি ডিমপাড়া হাঁসসহ মোট ১১৫টি হাঁস ধরে এনে ইউএনওর বাসভবনের নিকট বেধে রাখে। সন্ধ্যায় দরিদ্র হাঁস খামারী আব্দুল গফুর তার হাঁসগুলি ছাড়াতে ইউএনওর কাছে গেলে ইউএনও তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে তাড়িয়ে দেয়। পুলিশের ভয়ে অসহায় খামারী সেখান থেকে বাড়ি ফিরে যায়। এদিকে ইউএনও খামারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে রাতেই অফিসের লোকজন দিয়ে হাঁসগুলি জবাই করে উপজেলার কয়েকজন অফিসারকে কিছু জবাই করা হাঁস পাঠিয়ে অবশিষ্ট হাঁসগুলি ইউএনও ফ্রিজজাত করে রাখেন।

প্রতিদিন ডিম পাড়া হাঁসগুলো হারানো খামারীরা বলেন, সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে তারা এলাকার দাদন ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋন করে তাদের খামারগুলি প্রতিষ্ঠিত করেছিল। ডিমপাড়া হাঁসগুলি হারিয়ে তারা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। ঘটনাটি ন্যাক্কারজনক বলে স্থানীয়রা বলাবলি করছে।

এ বিষয়ে শুক্রবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফাহাদ পারভেজ বসুনিয়ার বক্তব্য নেয়ার জন্য তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার রিং দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। এব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. মো. আমিনুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে জানান। সেই সঙ্গে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন।-জনকণ্ঠ



মন্তব্য চালু নেই