দরকষাকষির ২০ বছরেও হচ্ছে না তিস্তা চুক্তি?
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের ভারত সফরেও তিস্তা চুক্তি হওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে গুরুত্বপূর্ণ এ চুক্তি নিয়ে দরকষাকষি চললেও শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরেও তা আলোর মুখ দেখবে না বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় কয়েকজন কর্মকর্তা শেখ হাসিনার ভারত সফরকে ‘পানিবিহীন একটি সফর’ হতে চলেছে বলে মন্তব্য করেছেন। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দরকষাকষি চললেও শেখ হাসিনার তিনদিনের ভারত সফরে চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এ চুক্তিতে এখনও বাগড়া দেয়ায় এ শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বুধবার পশ্চিমবঙ্গের এই মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, তিস্তা নদীর পানি সঙ্কট রয়েছে। মহানন্দার মতো তিস্তার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। কল্পনা করুন সেখানে গ্রীষ্মকালে কী ঘটবে।
ভারত বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যে ৫০টিরও বেশি নদী প্রবাহমান আছে তিস্তা তার মধ্যে একটি। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সময়ই তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তির সর্বশেষ খসড়া প্রস্তুত করা হয়। এতে ভারত-বাংলাদেশের মাঝে সমভাবে তিস্তার পানি বণ্টনের কথা বলা হয়। সিকিমে উৎপত্তি তিস্তা পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
২০১১ সালে মনমোহনের ঢাকা সফরে এ চুক্তি স্বাক্ষর চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছালেও একেবারে শেষ মুহূর্তে তা বাতিল হয়ে যায়। মমতা ব্যানার্জি এ সফরে আসার কথা থাকলেও ঢাকা সফর থেকে বিরত থাকেন তিনি। এ সময় মমতা বলেন, তিস্তা চুক্তির যে শর্ত আছে তা রাজ্যের জন্য ক্ষতিকর।
ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার ওই খসড়ার পর্যালোচনা করেনি। এর মাঝেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের দ্বিতীয় দিন (শনিবার) এক নৈশভোজে মমতা ব্যানার্জিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ সময় কলকাতা ও বাংলাদেশের মধ্যে দুটি ট্রেন ও একটি বাস সেবার উদ্বোধন করা হবে।
ক্ষমতার সাত বছরে এই প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। তিস্তা চুক্তি এখনও আলোর মুখ না দেখায় দেশের ভেতরে সমালোচনার মুখে রয়েছেন তিনি।
শেখ হাসিনার ভারত সফরে দুই দেশের মাঝে ৩৫টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার কথা। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক ও বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা এবং বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতাসহ দুই দেশের সীমান্ত নিরাপত্তার বিষয়গুলো থাকবে চুক্তিতে।
এশিয়ার দেশগুলোতে চীনের প্রভাব ঠেকাতে রেলওয়ে, সড়ক ও জলপথের মতো বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পে বাংলাদেশকে নয়াদিল্লি ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণসহায়তা দিতে যাচ্ছে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। গত বছর চীনের কাছ থেকে দুটি সাবমেরিন ক্রয় করে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার এ সফরে ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তিও স্বাক্ষরের কথা রয়েছে।
সূত্র : এনডিটিভি।
মন্তব্য চালু নেই