দগ্ধদের ছবি তোলা নিয়ে বাড়ছে সমালোচনার ঝড়
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রাজনৈতিক সহিংসতায় দগ্ধ রোগীদের খবর সংগ্রহ এবং ছবি তোলা নিয়ে বিতর্ক-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। একজন আলোকচিত্রী হাসপাতালে ঢুকে একজন দগ্ধ ব্যক্তিকে মডেলের মত নানা ভঙ্গিমায় দাঁড় করিয়ে ছবি তুলছেন- এরকম একটি পত্রিকা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে। এমনকি কিছুদিন আগে দগ্ধ রোগীদের নিয়ে একটি মিউজিক ভিডিওর স্যুটিংও হয়েছে বার্ন ইউনিটে।
সামাজিক মাধ্যমগুলোকে লোকজন যেমন এসব চিত্রগ্রাহকদের বিবেকবোধ এবং সংবেদনশীলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, তেমনি কর্তৃপক্ষের শৈথিল্য নিয়েও বিস্তর সমালোচনা হচ্ছে।
অবশ্য অভিযুক্ত ওই আলোকচিত্রী আহত ব্যক্তিটিকে ছবির জন্য পোজ দেয়াতে বাধ্য করবার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরেই বার্ন ইউনিটে সেখানে রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ে একটি প্রামান্যচিত্রের ছবি তুলছেন তিনি। ব্যাকগ্রাউন্ডে কালো কাপড় ব্যাবহার করার কারণ শৈল্পিক এবং আহতদের বিরক্ত না করে এবং অনুমতি নিয়েই কাজ করছেন তিনি।
কিন্তু গত পাঁচই জানুয়ারির পর থেকে রাজনৈতিক সহিংসতার ব্যাপকতা বোঝানোর জন্য রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকরা যেভাবে বার্ন ইউনিটকে ব্যবহার করেছেন, যেভাবে স্পর্শকাতর রোগীদের চিকিৎসা দেবার এই কেন্দ্রটিতে সদলবলে বারবার সেখানে গেছেন, তাতে একদিকে যেমনি তাদের মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তেমনি রোগীদের জন্য নিরব পরিবেশ বজায় রাখতে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতাও পরিলক্ষিত হচ্ছে।
সমালোচিত ওই আলোকচিত্রী বলেন, তিনি যখন এই ছবিটি তোলেন, তখন ওই ওয়ার্ডটিতে অন্তত কুড়িজন ফটোসাংবাদিক ও ভিডিও চিত্রগ্রাহক উপস্থিত ছিলেন। তিনি কারো পরনেই অ্যাপ্রণ কিংবা সংক্রমণবিরোধী কোনও পোশাক, দস্তানা, মুখোশ ইত্যাদি দেখতে পাননি।
এমনকি সম্প্রতি বার্ণ ইউনিটে একটি গানের চিত্রায়ণের খবর সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিস্তর বিতর্ক হয়। এরকম প্রেক্ষাপটে রোগিদের সেবাদান নির্বিঘ্ন করতে কর্তৃপক্ষের শৈথিল্যের ব্যাপারটি সামনে চলে এসেছে। বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডক্তার পার্থ শংকর পাল বলেন, ব্যাপারটি অমানবিক, কিন্তু এখানে সবসময়ই এত সাংবাদিক-ফটোগ্রাফারের ভিড় যে তারা চেষ্টা করলেও সব সময় এটা সামাল দিতে পারছেন না।
উল্লেখ্য, গত ৫ই জানুয়ারির পর থেকে এই বার্ণ ইউনিটে এখন পর্যন্ত ১২৫ জন অগ্নিদগ্ধ মানুষকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত আট জনের মৃত্যু হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
মন্তব্য চালু নেই