থার্টিফাষ্ট নাইটকে সামনে রেখে পর্যটকের মুখরিত উখিয়ার ইনানী বীচ
থার্টিফাষ্ট নাইটকে সামনে রেখে দেশী বিদেশী পর্যটকের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে দেশের দীর্ঘতম ইনানী সৈকত। আগাম বুকিং দেয়া হোটেল মোটেল, কটেজ, গেষ্ট হাউস গুলোতে জায়গা না পেয়ে অসংখ্য পর্যটক কক্সবাজার থেকে আসা যাওয়া করে ইনানীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে দেখা গেছে। অন্যান্য বারের মতো এবারের থার্টিফাষ্ট নাইটের আগে ও পরে রাজনৈতিক দলগুলোর কোন বৃহত্তর কর্মসূচী না থাকায় পর্যটকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে প্রাণচাঞ্চল্য।
কক্সবাজার থেকে দেিণ মাত্র আধা ঘন্টার রাস্তা মেরিন ড্রাইভ হয়ে সাগরের অপরূপ দৃশ্য অবলোকন করে ইনানীতে আসার সুযোগ হয়ে উঠায় ইনানী বীচ এখন পর্যটকদের আকর্ষণীয় দৃশ্যমান স্থানে পরিণত হয়েছে। একদিকে সাগর অপর দিকে সু-উচ্চ পাহাড় মাঝখানে ঝাউবাগানের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মেরিন ড্রাইভ সড়ক ইনানীকে পর্যটন খাতে আরো একধাপ এগিয়ে নিয়েছে। পাটুয়ার টেক পাথরের স্তুপ, নীলাভ জলরাশির সাথে পাথর খন্ডের লুকোচুরি খেলা পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সম হচ্ছে বিধায় প্রাকৃতিক উপায়ে সৃষ্ট পাথর খন্ডের উপর দাঁড়িয়ে শত শত নারী পুরুষ পর্যটক সাগরের উত্তাল তরঙ্গমালার দৃশ্য উপভোগ করছে। ইনানী বীচ থেকে ১ কিলোমিটার অদূরে সু-উচ্চ পাহাড়ের মাঝখানে কানারাজা গুহা এখনো কালের সাী হিসেবে প্রতিয়মান রয়েছে। পাশেই বিদ্যামান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক ফইল্লা চাকমার মাচাং ঘর দেখার জন্য অহরহ পর্যটক নারী পুরুষ ভিড় জমাতে দেখা গেছে। গতকাল শনিবার ইনানী বীচ ঘুরে দেখা যায়, কন কন শীতের আমেজের মাঝেও পর্যটক শিশু কিশোরেরা ছুটাছুটি করে আনন্দ উপভোগ করছে।
সিলেটের হবিগঞ্জ থেকে আসা ব্যাংকার সাইদুল ইসলাম(৩৮) জানান, স্ব-পরিবারে আসছিলাম ইনানীতে রাত যাপনের মনমানসিকতা নিয়ে। এখানে হোটেল না পাওয়ার কারণে কক্সবাজার থেকে আসা যাওয়া করতে হচ্ছে। ফেনী থেকে আসা ঠিকাদার অসীম রায় চৌধুরী(৪২) জানান, পর্যটন স্পট হিসেবে ইনানীর কোন তুলনা হয়না। কিন্তু এখানে পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং থাকা খাওয়াসহ বিনোদনের প্রচুর অভাব রয়েছে। ঢাকা থেকে আসা ব্যবসায়ী আরিফুর রহমান(২৮) জানান, এবার রাজনৈতিক দলগুলো বৃহত্তর কোন কর্মসূচী না থাকায় ইনানী দেখার প্রবল আগ্রহ নিয়ে কক্সবাজার ছুটে এসেছি। তিনি এখানে এসে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন বলে সাংবাদিকদের জানান। এভাবে একাধিক পর্যটক বিভিন্ন সমস্যা, সংকট ও দূর্ভোগের কথা বলতে দেখা গেছে। প্যাবেল স্টোনের পরিচালক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী জানান, তার হোটেলের সমস্ত ক ১৫ দিন আগে থেকে বুকিং দেয়া রয়েছে। প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক হোটেল চেয়ে ফেরত যাচ্ছে। তিনি বলেন, অন্যান্য বারের তুলনায় এবার পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আলা উদ্দিন জানান, পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ট্যুরিষ্ট পুলিশের পাশাপাশি তাদেরকেও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
স্থানীয় চেয়ারম্যান আনোয়ার হোছাইন চৌধুরী জানান, ইনানীর ঝাউবাগান গুলোতে বসবাসরত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলে পর্যটন পরিবেশের আরো উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। এব্যাপারে আলাপ করে জানতে চাওয়া হলে ইনানী ইনানী বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, ইনানী বীচকে পর্যটক বান্ধব হিসেবে গড়ে তোলার ল্েয সরকার ব্যাপক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
সরকার দরিদ্র জনগোষ্টির স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করেছে- এমপি বদি
কক্সবাজারের উখিয়ায় ইউনিয়ন কমিউনিটি কিনিকের উদ্যোগে ব্যতিক্রমধর্মী এক সভা রাজাপালং ইউনিয়নের ডিগলিয়া পালং গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় ককসবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আবদুর রহমান বদি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। গতকাল শনিবার সাড়ে ১১ টায় ডিগলিয়াপালং কমিউনিটি কিনিকের সভাপতি শাহাদত হোসেন সোহেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডঃ আহমদ হোছাইন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হামিদুল হক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খান, পিএইচডির প্রকল্প পরিচালক সাখাওয়াত হোছন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রবিউল রহমান, পিএইচডি সমন্বয়ক শীলানন্দ বড়–য়া, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হানিফ ছিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক রাসেল উদ্দিন সুজন, সহ-সভাপতি ইদ্রিস মিয়াজীসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথি এমপি বদি বলেন, সরকার দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে বহুমূখী পদপে হাতে নিয়ে তা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। গ্রামীণ জনপদে কমিউনিটি কিনিক চালুর মাধ্যমে মানুষের দৌড়গোড়ায় এ কাংখিত সেবা পৌঁছে দিয়েছে। এসময় গর্ভবর্তী মা ও নবজাতক শিশুর সেবা বঞ্চিত জনগোষ্টিকে পিএইচডি এনজিও কর্তৃক নারীদের সেবার আওতায় আনার ল্েয গ্রামীণ জনপদে অবহেলিত নারীদের পে কাজ করে যাচ্ছে। যার সুফল এতদাঞ্চলের জনগোষ্টি ভোগ করতে চলছে।
দেশীয় চাউলের বাজার লাঠে উঠেছে
আমনের বাম্পার ফলন ঘরে তুলেও কৃষকের হা-হুতাশ থেমে নেই। বিদেশী চালে বাজার সয়লাব হয়ে উঠায় এখানকার আমন চাষীরা ন্যায্যমূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকায় কৃষকেরা এ দুশ্চিন্তায় ভোগছে। ভারতীয় ও মিয়ানমার থেকে চাল আমদানীর ফলে দেশীয় চালের বাজার লাঠে উঠার উপক্রম হয়েছে। স্থানীয় আমন চাষী কৃষকদের উৎপাদিত ধানের চাল বাজার স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে সরকারকে এসব চাল আমদানী বন্ধের উদ্যেগ নিতে হবে বলে প্রান্তিক চাষীরা ােভ ও আশংকার কথা জানিয়েছেন। কৃষকদের উৎপাদিত বিভিন্ন পন্য এভাবে একের পর এক বাজারের মারখেতে থাকলে ভবিষ্যতে কৃষকরা পন্য উৎপাদনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলতে পারে।
চালের বাজার সয়লাব হওয়ায় উখিয়ার কৃষকরা ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। প্রতি মন নতুন ধান ৫ হাজার ৮ শ টাকা থেকে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে এখানকার কৃষকরা তাদের চাষাবাদের খরচ টুকুও পোষাতে পারছেনা।
কক্সবাজারের উখিয়ায় গত আমন চাষ মওসুমে ৮ হাজার ৬ শ ৫০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছি। প্রায় ১৩ হাজার কৃষক তাদের শ্রম-ঘাম অর্থ বিনিয়োগ করেছিল বুকে অনেক আশা নিয়ে। কিন্তু দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর ঘরে ঘরে আমনের ধান উঠার আগে স্থানীয় বাজারে ভারতীয় ও মিয়ানমারের নিম্মমানের কমমূল্যের চাল বাজারে সয়লাব হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় কৃষক তাদের কষ্টার্জিত ফসল বিনিয়োগের সঠিক মূল্য পাচ্ছে না।
উখিয়া বাজারের চাল আড়তদার আলা উদ্দিন সিকদার, ছয়তারা অটো রাইচ মিলের হাজী কবির আহমদ সওদাগর বলেন, ভারতীয় চাল কম মূল্যে বাজার ছেয়ে গেছে। ৫০ কেজির ভারতীয় চালের বস্তা ১৪ শ থেকে ১৬ শ টাকায় প্রতিটি চালের বস্তার মুল্য পড়ছে। এছাড়া মিয়ানমারের চালও একই মূল্যে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। ফলে এ অবস্থায় স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত আমনের মৌসুমে নতুন চাল বাজারে ছাড়া হলেও তা সহজে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এখানকার গ্রামীন জনপদের প্রান্তিক আমন চাষী কৃষকদের বিস্তর তির সম্মুখিন হতে হচ্ছে বলে কুতুপালং গ্রামের কৃষক আবুল হোছন জানান।
উখিয়ার ডেইলপাড়ার কৃষক সোনা আলী, মালভিটার কৃষক মোঃ ইদ্রিস, ছৈয়দ আলম, মোঃ হোছন মাতু, ভালুকিয়ার কৃষক সন্তোষ বড়–য়া সহ অনেকেই জানান, চাষ-বাস ধরে রাখা বোধয় বেশি দিন সম্ভব হবে না। কারণ সরকারের মুক্ত বাজার অর্থনীতির সুযোগে দেদারছে বিদেশী খাদ্য শষ্য অবাধে স্থানীয় চাউলের বাজার দখল করে নিচ্ছে। চাষাবাদের জমি লাগিয়তি, মজুর, বীজ, কীটনাশক ও অন্যান্য সরঞ্জাম- উপাদান ব্যয় ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতি মন ধান উৎপাদনে সর্বনিম্ম ১০-১৫ হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে। অথচ স্থানীয় বাজারে এসব উৎপাদিত নতুন ধান বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্ছ প্রতিমন ৬ শ থেকে ৭ শ টাকায়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগোপযোগী আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি মাঠ পর্যায়ে কৃষকের হাতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কৃষকরা চাষাবাদ করায় ল্যমাত্রার চাইতে স্থানীয় ভাবে বেশী ফলন উৎপাদিত হচ্ছে। ফলে দেশে আর খাদ্য ঘাটতি নেই।উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শাহজাহান জানান, দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ। স্থানীয় ভাবে কৃষকদেরকে যথাযথ প্রশিণ ও কৃষি উপকরণ বিতরণের মাধ্যমে চাষাবাদে উৎসাহিত করা হচ্ছে। উখিয়া কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, স্বভাবতই আমনের বাম্পার ফলন ও সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দামের েেত্র কিছুটা নিম্মমূখী বৈকি।
উখিয়ায় মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলায় স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে বক্তারা
গণহত্যাকারীদের বিচার আগামী প্রজন্মের জন্য সু-সংবাদ
কক্সবাজারের উখিয়ায় মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলায় স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান মেলা কমিটির চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা আদিল উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৭ টায় কোটবাজার পালং উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তারা বলেন, দেশ স্বাধীনের ৪৩ বছর পরও রাজাকার, আলবদর-আলশামস ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের বাংলার মাটিতে বিচার হওয়ায় জাতি একটি কলংকজনক অধ্যায় থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। যা এদেশের তরুণ ও আগামী প্রজন্মের নিকট ইতিহাস হয়ে থাকবে। বাঙ্গালী জাতির এ উৎসবকে ঘিরে একটি ষড়যন্ত্রকারী মহল মেলার বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে তাদের ব্যাপারে সকল জনগণকে সজাগ ও সর্তক থাকার আহবান জানান বক্তারা। উক্ত স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা নূরুল হুদা, রতœাপালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আসহাব উদ্দিন মেম্বার, রতœাপালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ আলমগীর, উখিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মুজিবুল হক আজাদ, সাধারণ সম্পাদক ও মেলা কমিটি যুগ্ম মহাসচিব ইমাম হোসেন, বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক ও সার্বিক ব্যবস্থাপক সমাজ সেবক এস কামাল। উক্ত বিজয় মেলার স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন মেলা কমিটির মহাসচিব ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার পরিমল বড়–য়া।
মন্তব্য চালু নেই