তেল সংগ্রহের হিড়িক, ৩০ টাকায় কিনছে পদ্মা অয়েল

সুন্দরবনের শেলা নদীসহ আশপাশের বিস্তৃীর্ণ এলাকাজুড়ে এখন কালো তেলের আস্তরণ। সুন্দরবনকে বাঁচাতে ভাসমান এসব তেল সংগ্রহে স্থানীয়দের মাঝে এক রকম প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। তাদের উৎসাহিত করতে মাইকিং করছে পদ্মা অয়েল কোম্পানি। তেল সংগ্রহে কয়েকটি কেন্দ্রও খুলেছে কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়দের কাছ থেকে প্রতি লিটার তেল ৩০ টাকা দরে কিনছে তারা।

শুক্রবার সকাল থেকেই অসংখ্য নারী-পুরুষ ও শিশুরা নেট জাল এবং ফোম দিয়ে তেল সংগ্রহের এ প্রতিযোগিতায় নামে।

তেলবাহী ট্যাঙ্কার ওটি সাউদার্ন স্টার-৭ ডুবে শ্যালা নদীসহ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় তেল ছড়িয়ে পড়েছে। তেলের কারণে নদীতে মাছের দেখা নেই। জাল নষ্ট হয়ে যাওয়া ও মাছ না থাকায় জেলেরা এখন বেকার। তবে অলস সময় না কাটিয়ে বেকার জেলেরা সুন্দরবন রক্ষায় নেমে পড়েছে তেল সংগ্রহে।

সেখানকার অসংখ্য নারী-পুরুষ ও শিশুরাও নেট জাল এবং ফোম দিয়ে তেল সংগ্রহ করছে। আর এ কাজে তাদের উৎসাহিত করতে তেল কেনার জন্য পদ্মা অয়েল কয়েকটি কেন্দ্র খুলেছে। এসব কেন্দ্র থেকে প্রতি লিটার তেল ৩০ টাকা দরে কেনা হচ্ছে।

এদিকে, শুক্রবার বিকেলে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, বন বিভাগ এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের ৯ সদসের তদন্ত কমিটি সুন্দরবনের শেলা নদী পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শন শেষে কমিটির প্রধান বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) মো. নুরুল করিম বাংলামেইলকে জানান, গবেষণা করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে এবং ১৮ ডিসেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।

এছাড়া তেল নষ্ট করতে আসা জাহাজ কাণ্ডারি থেকে যে তরল রাসায়নিক পদার্থ ছিটানো হবে তাতে পরিবেশের ক্ষতি হবে কিনা যাচাইয়ে বুয়েটে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

নৌরুট বন্ধ ও নৌযান চলাচল না করতে পারায় মংলা বন্দরে যে সমস্যা হচ্ছে সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারি সিদ্ধান্তে এ রুট বন্ধ আছে। সবদিক বিবেচনা করে চালুর সিদ্ধান্ত হবে।’

এর আগে, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাত সদস্যের অপর একটি কমিটি সুন্দরবন এলাকা পরিদর্শন করেছে।

এদিকে, শেলা নদীতে নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় এর প্রভাব পড়েছে মংলা বন্দরে। কার্গো, কোস্টার সঙ্কটে বন্দরের পণ্যবোঝই ও খালাস ব্যাহত হচ্ছে। মংলার সঙ্গে সারাদেশের নৌ যোগাযোগও ব্যাহত হচ্ছে। শেলা নদীর শরণখোলা এলাকায় আটকে পড়েছে পণ্যবাহী নৌযান। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছে বন্দর ব্যবহারকারীরা। তাদের দাবি, দ্রুত এ নৌরুটটি চালু করা হোক।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ভোরে শ্যালা নদীর মৃগামারী (মংলা) এলাকায় তলা ফেটে একটি তেলবাহী ট্যাঙ্কার ডুবে যায়। এতে জাহাজ থেকে তেল ছড়িয়ে পড়ায় বিলুপ্ত প্রায় ইরাবতী ডলফিনসহ ছয় প্রজাতির ডলফিন ও সুন্দরবনের জীববৈচিত্র চরম হুমকির মুখে পড়ে।



মন্তব্য চালু নেই