তেল কিনতেই টাকা শেষ আবার কিস্তি আছে !

প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। সব সময় সমান তালে ভিড়। মানুষের কমতি নেই। নৌকা চালিয়ে প্রতিদিন ৭শ থেকে ৮শ টাকা আয় হতো। এর মধ্যে খরচ বাদ দিয়ে ৩শ থেকে ৪শ টাকা থাকে। কিন্তু হরতাল-অবরোধের কারণে ব্যবসা একদম শেষ।

মানুষই চোখে পড়ে না। আবার যা আয় হয়, তা দিয়ে খরচই উঠে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে একমাত্র পুঁজি নৌকাটি বিক্রি করে ঘরে বসে খেতে হবে। সামান্য পুঁজি যা আছে তাও শেষ। এভাবে চললে থাকলে পরিবার নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে।

লাগাতার হরতাল-অবরোধে খাঁ খাঁ করছে রাজশাহীর এ বিনোদন কেন্দ্র। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এসব স্থানে মৌসুম লাগেনা। সব সময় সমান তালে ব্যবসা চলে। নদীর পানি বেশি থাকলে ব্যবসা একটু ভালো হয়। কিন্তু পানি কম থাকলে লোকজন যে কম হয় তা কিন্তু নয়।

রাজশাহী মহানগরীর অন্যতম বিনোদন স্পট বড়কুঠি পদ্মার পাড় এলাকার নৌকার মাঝি এনামুল। তিনি বলেন, আমার বড় ভাই এই নৌকা চালাত, তার পরে আমি এখন এই নৌকা চালাই। বাড়ির কিছু টাকা ও ৭০ হাজার টাকা কিস্তি তুলে মোট ১লাখ ২০হাজার টাকা দিয়ে নৌকা কেনা হয়। এ উপার্জনের টাকা দিয়ে সংসার ও কিস্তি চালাতে হয়।

এনামুল আরও বলেন, আামার প্রতি সপ্তাহে ১ হাজার ৭৫টাকা কিস্তি লাগে। এ নৌকাই এক মাত্র উপার্জনের মাধ্যাম। হেলপারকে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২শ টাকা দিতে হয়। ৭০ টাকা লিটার তেল, কি করবো তেল কেনার টাকা উঠেনা। আমি কি নেব আর আমার হেলপারকে কি দেব। ধার দেনা করে সংসার ও কিস্তি চালাচ্ছি।

এখন নৌকা থেকে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ টাকা মাত্র আয় হয়। কাজ না থাকার কারণে হেলপার চলে গেছে। ও এখন চরের ওপারে মানুষের জমিতে কাজ করছে।

হরতাল-অবরোধ তো আমাকে খেতে দেবে না। আর কিস্তির লোকরা তো আর মানবেনা যে কাজ কাম নাই।

বেড়াতে আসা শ্যামলী বেগম বলেন, হরতাল-অবরোধের নাশকতার আতঙ্কে আসতে ভয় লাগে। রাস্তায় কেমন যেন আতঙ্ক কাজ করে, তার পরেও এসেছি বেড়াতে, অফিস থেকে আসার পরে বাড়িতে থাকতে ভালো লাগে না। তাই পরিবারকে নিয়ে চলে আসলাম আগের মত। একটু চটপটি, ফুচকা বাদাম খেয়ে চলে যাব।



মন্তব্য চালু নেই