তারেককে ফেরাতে সহায়তা করবে না যুক্তরাজ্য

বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বর্তমানে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল এবং যুক্তরাজ্য সরকারের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তবে তারেক রহমানকে বাংলাদেশ সরকারের হাতে ফিরিয়ে দিতে সহায়তা করবে না যুক্তরাজ্য সরকার।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের একাধিক কূটনীতিক এবং বাংলাদেশের একাধিক সাবেক পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আলাপ করে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের পক্ষে কেউই প্রকাশ্য মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তারেক রহমানকে ফিরিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট ডব্লিউ গিবসনের কাছে বুধবার জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এর আগে গত বছর যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এলান ডানকান ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক সংসদীয় আন্ডার সেক্রেটারি লিন ফেদারস্টোন এমপি বাংলাদেশ সফর করেন। ওই সময়ে গণমাধ্যমকর্মীরা তাদের কাছে তারেক রহমানকে বাংলাদেশ সরকারের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে কেউই কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এদিকে তারেক রহমানকে ফিরিয়ে দেওয়ার সহায়তা চেয়ে গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ডকে চিঠি লিখেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ডকে লেখা চিঠির এখনো কোনো জবাব পাননি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

জানা গেছে, আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ‘রেড এ্যালার্ট’ জারি করেছে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা ও হত্যার অভিযোগে এই ‘রেড এ্যালার্ট’ জারি করা হয়।

২১ আগস্ট মামলার সরকার পক্ষের বিশেষ আইনজীবী মো. মোশাররফ হোসেন কাজল এ বিষয়ে  বলেন, ‘ইন্টারপোল তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রেড এ্যালার্ট জারি করেছে। তবে যুক্তরাজ্য থেকে তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার কাজটা সহজ হবে না। কেননা, যুক্তরাজ্য সরকার সবার আগে মানবাধিকার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে থাকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাজ্য সরকারের মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে যথাযথভাবে সকল প্রকার নথিপত্র উপস্থাপন এবং সফল কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে পারলেই তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনা যাবে।’

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘কূটনীতিক শিষ্টাচার অনুযায়ী বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাজ্য সরকারের সহায়তা পাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। বরং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া ওই চিঠি এবং ইন্টারপোলের নোটিশের কারণে তারেক রহমানের যুক্তরাজ্যে বসবাস করার প্রক্রিয়া আরও শক্ত হল।’

ইতিহাস থেকে জানা গেছে, ৮০-এর দশকে যখন কর্নেল (অব.) এম এ তাহেরকে ফাঁসি দেওয়া হয়, তখন নিরাপত্তার অভাবে জাসদ নেতা আ স ম রব জার্মানীতে আশ্রয় নেন। শুধু আ স ম রবই নন জাসদের অনেক নেতাই তখন নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে জার্মান সরকারের আশ্রয় লাভ করেন। ওই সময়ে বাংলাদেশ সরকারও তাদের ফেরত আনতে জার্মানীর সহায়তা চেয়েছিল। কিন্তু ওই সময়ে দেশে রাজনৈতিক নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত না থাকায় জার্মানী বাংলাদেশ সরকারকে কোনো সহায়তা করেনি।দ্য রিপোর্ট



মন্তব্য চালু নেই