তরুণীদের দেহ ব্যবসায় আনতে সুদর্শন তরুণ ফাঁদ!

এতোদিন সুন্দরী নারীদের দিয়ে মোবাইলের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে স্বচ্ছল পুরুষদের সঙ্গে চলতো প্রতারণা। সেই প্রতারণার ধরন পাল্টে গেছে। এখন সেই চক্র সুদর্শন তরুণদের দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তরুণীদের দেহ ব্যবসায় জড়াতে বাধ্য করা হচ্ছে। মূলত শহর কিংবা গ্রাম থেকে আসা সহজ সরল মেয়েদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ও প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাদের দিয়ে এ অনৈতিক কাজ করানো হয়।

কখনো কখনো আবার ব্যাঙের ছাতার মতো গজে ওঠা কিছু প্রডাকশন হাউজও দেহ ব্যবসার ফাঁদ। মিডিয়ামুখি কিশোরী এবং তরুণীরাই প্রডাকশন হাউজগুলোর প্রধান টার্গেট। হাউজগুলো আকর্ষণীয় পোস্টারিং ও চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে দৃষ্টি কাড়ে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গামী তরুণীদের। মিডিয়াতে সুপারস্টার বানানোর কথা বলে, ফটো সেশনের সময় গোপন ক্যামেরায় পোশাক পরিবর্তনের দৃশ্য ধারণ করে তাদেরকে ব্ল্যাকমেইল করা হয়। এছাড়াও এক শ্রেণীর যুবকদের সাহায্যে মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে কিছু অশ্লীল দৃশ্য ধারণ করার পর জিম্মী করা হচ্ছে তাদের। পরবর্তীতে তাদেরকে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হচ্ছে এবং মাদকপাচারসহ নানা অবৈধ কাজে ব্যবহার করছে বেশ কয়েকটি চক্র।

বুধবার রাতে এমনই এক চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নগরীর চান্দগাঁও থানার ফরিদা পাড়া এলাকার বদিউল আলম (৩৫) ও তার স্ত্রী মণি বেগম (৩২), বদিউলের সহযোগী বেবি আক্তার (৩০), ওমর ফারুক (২৫), আরিফুল ইসলাম (১৯), আবু তালেব (৪৫) ও মো.আলমাস (৩০)।

এর মধ্যে ওমর ফারুক, আরিফুল এবং আবু তালেব মিলে বিভিন্ন বয়সের নিরীহ নারীদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বদিউলের কাছে তুলে দিতেন। বদিউল তার স্ত্রী ও বেবি এবং কর্মচারী আলমাসের মাধ্যমে তাদের নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া করা বাসায় রেখে অসামাজিক কাজে বাধ্য করতো।

বাকলিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন জানান, গত ২৬ জুলাই বাকলিয়া থেকে এক তরুণীকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে জিম্মি করে বদিউলের লোকজন। পরে তাকে নগরীর চান্দগাঁও থানার ফরিদাপাড়ার একটি বাসায় রেখে অসামাজিক কাজকর্মে বাধ্য করানো হচ্ছিল। বদিউলের আস্তানা থেকে পালিয়ে আসা এক তরুণী ঘটনাটি ওই তরুণীর ভাইকে জানিয়ে দেন। তরুণীর ভাই বাকলিয়া থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ করলে পুলিশ অভিযানে নামে।

বুধবার রাতে পুলিশ ফরিদা পাড়া থেকে বদিউলকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তার দেয়া তথ্যমতে বাকি ছয়জনকে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর ওই তরুণীকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই