তরুণীকে রক্ষা করতে গিয়ে ছাত্রলীগের মার খেল সাংবাদিক

জাবি : অপহৃত তরুণীকে রক্ষা করতে গিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর মারধরে গুরুতর জখম হয়েছেন এক সাংবাদিক।

ওই সাংবাদিককে পিটিয়ে জখম করেন শাখা ছাত্রলীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মহিতোষ রায় টিটু ও তার অনুসারীরা।

বুধবার (৮ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি গেটে এক তরুণীকে অপহরণকারীর কাছ থেকে রক্ষা করতে গিয়ে এ মারধরের শিকার হন বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকমের জাবি প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম।

নিরাপত্তা কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গোলাম সরোয়ার নামের এক যুবক এক তরুণীকে অপহরণ করে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসে। এ সময় বিডিনিউজের সাংবাদিক সেখানে উপস্থিত হয়ে নিরাপত্তাকর্মীকে ফোন দিয়ে তাদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটক ডেইরি গেটে অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সময় জাবি ছাত্রলীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মহিতোষ রায় টিটু সেখানে এসে অপহরণকারীকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে।

এতে বাধা দিলে সে শফিকের ওপর চড়াও হয়ে তার অনুসারীদের ফোন দিয়ে ডেকে এনে তাকে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে মারধর করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকরা তাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। অবস্থার অবনতি দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে।

তবে হামলার বিষয়ে মুঠোফোনে অভিযুক্ত মহিতোষ রায় টিটুর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান জনি ও রাজিব আহমেদ রাসেল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ছাত্রলীগ নেতাকে সাংগঠনিকভাবে সাময়িক বহিষ্কার করার কথা জানানো হয়েছে।

আহত শফিককে দেখতে এসে তারা বলেন, ‘এ হামলা দুঃখজনক। আমরা আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত করে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষী প্রমানিণিত হলে তাকে ছাত্রলীগ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে।’

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, ‘আমি বিষয়টি জেনেছি। তোমরা লিখিত অভিযোগ দাও। অভিযোগ পেলেই দ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেব।’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা এ হামলার নিন্দা জানিয়ে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার ও দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। বুধবার রাতে সংগঠনের সভাপতি লাকী আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক এ জি এম জিলানী এক যৌথ বিবৃতিতে হামলায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।



মন্তব্য চালু নেই