তবুও পাকিস্তানের কষ্টার্জিত জয়

শোয়েব মালিকের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি আর আজহার আলী, মোহাম্মদ হাফিজ ও হারিস সোহেলের হাফ সেঞ্চুরি মিলে রানের পাহাড় গড়ে পাকিস্তান। নির্ধারিত ৫০ ওভারে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৭৫ রান। কিন্তু এই রান নিয়েও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে স্বাগতিকদের বেশ ঘাম ঝরাতে হয়েছে। মঙ্গলবার সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তান পেয়েছে ৪১ রানের কষ্টার্জিত জয়!

এদিকে ৩৭৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়ে খেলেছে বেশ সাবলীলভাবেই। তবে পাকিস্তানের আকাশছোঁয়া সংগ্রহের বিপরীতে জয় পাওয়াটা যে বড্ড কঠিনই ছিল, শেষ পর্যন্ত প্রমাণিত হলো সেটাই। ৯.৪ ওভারে ৫৬ রান তুলে জিম্বাবুয়ের শুভ সূচনা এনে দেন সিকান্দার রাজা ও ভুসিমুজি সিবান্দা। কিন্তু ওয়াহাব রিয়াজের আঘাতে জিম্বাবুয়ে শিবিরে খানিকটা ছন্দপতন ঘটে। পাকিস্তানি এই বোলারের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন সিকান্দার রাজা (৩৬)। এরপর অবশ্য রাজার পথ অনুসরণ করেন সিবান্দাও। আনোয়ার আলীর বলে মোহাম্মদ হাফিজের তালুবন্দি হওয়ার আগে ৩৬ বলে ২৩ রান করেন জিম্বাবুয়ের ওপেনার।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১২৪ রান তুলে জিম্বাবুয়েকে জয়ের স্বপ্নই দেখিয়েছিলেন অধিনায়ক এলটন চিগুম্বুরা ও হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। দলীয় ১৮৯ রানে শোয়েব মালিকের বলে মাসাকাদজা আউট হয়ে গেলে রানের গতি কিছুটা থমকে দাঁড়ায়। চতুর্থ উইকেটে শন উইলিয়ামসকে নিয়ে ফের ৭৪ রানের জুটি গড়েন চিগুম্বুরা। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক। তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিও। ৯৫ বলে ১০ চার ও ৪ ছক্কায় ১১৭ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন চিগুম্বুরা। তাকে সরাসরি বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান ওয়াহাব রিয়াজ। আর তাতে জিম্বাবুয়ের স্বপ্নটাও যেন ধূলিসাৎ হয়ে যায়!

দুর্দান্ত ফর্মে থাকা শন উইলিয়ামসকে (৩৬) বেশি দূর এগোতে দেননি রিয়াজ। মুতাওয়াম্বি ও প্রসপার উৎসেয়া দুজনেই ২১ রানে অপরাজিত ছিলেন। কাক্ষিত জয় না পেলেও জিম্বাবুয়ে গর্ব করতেই পারে! কেননা বিশাল লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে কড়া জবাব দিয়েছে তারা।

এর আগে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস নামক ভাগ্য পরীক্ষায় জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তানের অধিনায়ক আজহার আলী। তার সিদ্ধান্ত যথার্থ ছিল বলে প্রমাণ করেছেন দলের ব্যাটসম্যানরা। কেননা দলের দুই ওপেনার ২৬ ওভারে ১৭০ রানের জুটি গড়েন। ৮৩ বলে ৮৬ রান করে প্রসপার উৎসেয়ার বলে সরাসরি বোল্ড হন মোহাম্মদ হাফিজ। পাকিস্তানি ওপেনারের মূল্যবান এ ইনিংসে ছিল আট চার ও চারটি ছক্কার মার। আজহার আলী করেছেন ৭৯ রান। ৭৬ বলে নয় চার ও দুটি ছক্কা হাঁকান তিনি। পাকিস্তানের অধিনায়ককেও প্যাভিলিয়নে ফেরান উৎসেয়া।

এরপর শোয়েব মালিক ও হারিস সোহেল ক্রিজে এসে জিম্বাবুয়ে বোলারদের তুলোধুনো করেছেন। তৃতীয় উইকেটে ২০১ রানের জুটি গড়েন তারা। ইনিংসের শেষ বলে টিনাশে পানিয়াঙ্গারার শিকারে পরিণত হন মালিক। বিদায়ের আগে ৭৬ বলে ১১২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। ১২ চার ও দুই ছক্কায় অনবদ্য এ ইনিংসে দীর্ঘ দিন পর জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তনটা স্মরণীয় করে রাখলেন শোয়েব মালিক। সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ফের নিজের জাত চেনালেন পাকিস্তানি এই অলরাউন্ডার।

শোয়েব সাজঘরে ফিরলেও অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছেন হারিস সোহেল। মাত্র ৬৬ বলে ছয় চার ও দুই ছক্কায় ৮৯ রান করেছেন সোহেল। জিম্বাবুয়ের হয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন প্রসপার উৎসেয়া। বাকি উইকেটটি গেছে টিনাশে পানিয়াঙ্গারার দখলে।



মন্তব্য চালু নেই