তনু ধর্ষণ: তারা এই এলাকার, বয়স ২১ থেকে ২৫ (অডিও)

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী নিহত সোহাগী জাহান তনুর বাবা ইয়ার হোসেন দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘বাইরে থেকে লোক আসবে কীভাবে, আমি সেনাবাহিনীর টহল গাড়ি দেখেছি, আর ওখানে কোনও রাস্তাও নেই, যা ঘটেছে ক্যান্টনমেন্ট এলাকার ভেতরেই ঘটেছে।’

তিনি বলেন, ‘আর আমি যে তিনজনকে দৌড়ে যেতে দেখেছি, তাদের বয়স ২১ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি দেখেছি আর আল্লাহ জানেন। আমার কোনওভাবেই মনে হয়নি যে ক্যান্টনমেন্ট এলাকার বাইরে কোনও কিছু হয়েছে, যা হওয়ার এখানেই হয়েছে।’ তনু হত্যাকাণ্ডের ১১ দিন পর বৃহস্পতিবার বিকেলে তনুর বাবা এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।

ইয়ার হোসেন বলেন, ‘২০ মার্চ রাতে যখন আমি মেয়ের খোঁজে বের হই, তখন আমার সঙ্গে একজন শিক্ষকও ছিলেন। আমি সেনবাহিনীর টহল গাড়ি দেখে তাদের কাছে আমার মেয়েকে দেখেছে কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘আমরা জানি না।’ এর পর আমি ঘটনাস্থল-সংলগ্ন চারতলা ভবনের কাছ থেকে তিনজন লোককে দৌড়ে যেতে দেখি। তাদের বয়স ২১ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে হবে। তারা প্যান্ট শার্ট পরা ছিল। পায়ে কী ছিল তা দেখিনি। আমি জওয়ান মতো একজনকে জিজ্ঞেস করি, এরা কারা? তিনি বলেন, ‘এরা এই এলাকারই’। তবে পরিচয় নিশ্চিত হতে পারিনি। তখন সব জায়গায় আলো ছিল না। তবে সংলগ্ন ভবনের পাশে আলো ছিল।’

তখন রাত কয়টা হবে? তিনি জানান, রাত সাড়ে ১০টা বা তার একটু বেশি।

তনুতিনি বলেন, ‘এরপর আমি ব্রিজের নিচে তনুর স্যান্ডেল এবং কাছেই জঙ্গলে লাশ পাই। তার মাথা থেঁতলানো ছিল, পাশে পড়ে ছিল চুলের গোছা, কাপড়চোপড়। আশপাশে মানুষের পায়ের ছাপ ছিল অনেক। সবকিছু দেখে মনে হয়েছে, আমার মেয়েকে ক্যান্টনমেন্ট এলাকার ভেতরেই হত্যা করা হয়েছে। ওই এলাকায়ই হত্যা করা হয়েছে।’

আপনি কেন এমন ভাবছেন?

লাশ পাওয়া গেছে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরেই। সেখানে বাইরে থেকে ঢোকার তো কোনও রাস্তা নেই। পাশে কাঁটাতারের বেড়ার কাজ চলছে। ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে বাইরের কোনও লোক আসার সুযোগ নেই। টহল আছে। আমি যখন আমার মেয়েকে খুঁজতে বের হই, তখনও ক্যান্টনমেন্টের টহল টিম ছিল।

তনুকে কী অচেতন অবস্থায় সিএমএইচে নেওয়া হয়?

আমিতো ডাক্তার নই। নেওয়ার পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসক পরীক্ষা করে বলেন, মেয়ে বেঁচে নেই। এরপর লাশ কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

হত্যাকাণ্ডের জন্য কাউকে সন্দেহ করছেন?

সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে সন্দেহ করতে পারছি না। তনু আমাকে কখনও বলেনি যে কেউ তাকে উত্যক্ত করেছে বা তার সঙ্গে ঝামেলা করছে। তবে যা হয়েছে ক্যান্টনমেন্ট এলাকার ভেতরেই হয়েছে। আমি যা দেখেছি, যা বুঝেছি তাই বলছি।

তনুর বাবা বলেন, ‘আমি এখন বিচার চাই। আমি আল্লাহর কাছে বিচার চাই।’

প্রসঙ্গত, তনুর বাবা ইয়ার হোসেন কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে সিভিল চাকরি করেন। ২০ মার্চ রাতে তনু তাদের ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে ক্যান্টমেন্টের ভেতরেই আরেকটি বাসায় ছাত্র পড়াতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পরে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়ই তার লাশ পাওয়া যায়।–বাংলা ট্রিবিউন।

অডিও:



মন্তব্য চালু নেই