ঢামেকে বৃক্ষকন্যার সফল অস্ত্রোপচার
শরীরে গাছের মতো শিকড় গজিয়ে ওঠা বিরল রোগে আক্রান্ত ১০ বছরের শিশু সাহানা খাতুনের সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়।
বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, মেয়েটির অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। সে এখন ভালো আছে। আশা করি ভবিষ্যতে তার আর কোনো অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হবে না।
এর আগে বৃক্ষমানব বলে পরিচিত খুলনা জেলার পাইকগাছার আবুল বাজানদার একই ধরনের উপসর্গ নিয়ে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার পর নেত্রকোনা জেলার একটি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সাহানা খাতুনের থুতনি, নাক, দুই কানের লতিতে শিকড় নিয়ে এ হাসপাতালে ভর্তি হয়।
সামন্ত লাল বলেন, সাহানা যখন হাসপাতালে ভর্তি হয় তখন তার চোখে-মুখে এক ধরনের ভীতি ছিল। সে কারো সঙ্গে শিশুসুলভ আচরণ করত না। নিজেকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করত। কারো সঙ্গে কথা বলত না। তবে অস্ত্রোপচারের পর তার মধ্যে শিশুসুলভ চঞ্চলতা ফিরে আসবে বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, দেশে আবুল বাজানদার, সাহানা খাতুনসহ মোট পাঁচজন এ ধরনের রোগে আক্রান্ত বলে আমরা শনাক্ত করেছি। যেহেতু এ ধরনের রোগী পাওয়া যাচ্ছে, তাই এর প্রকোপ ও প্রবণতা কমিয়ে আনতে দেশে এই রোগ নিয়ে গবেষণার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।
তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে আবুল বাজানদারের রক্তের নমুনা বিদেশে পাঠনো হয়েছে। সাহানার রক্ত ও টিস্যু ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডাব্লিউএইচও) মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হবে। আবুল বাজানদারের স্যাম্পল নিয়ে যিনি গবেষণা করছেন তার কছে সাহানারও স্যাম্পল পাঠানো হবে। তিনি দুটি আলাদা স্যাম্পল ম্যাচ দেখলে বুঝতে পারবেন রোগের উৎপত্তিটা কোথা থেকে।
আগামী দুই সপ্তাহ পর সাহানা বাড়ি যেতে পারবে বলেও জানান সামন্ত লাল।
উল্লেখ্য, দেশে প্রথম বৃক্ষমানব হিসেবে পরিচিতি পান আবুল বাজানদার। তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই চিকিৎসা নিয়েছেন। তার হাতে ও পায়ে গাছের শিকড়ের মতো যা গজিয়েছিল, পরে তা কয়েক দফা অস্ত্রোপচার করে ফেলে দেওয়া হয়।
মন্তব্য চালু নেই