ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ১৭ একর জায়গায় কি হবে?

ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরের পর বর্তমান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ১৭ একর জায়গায় কি হবে? সুবিশাল এ জায়গা নিয়ে সরকারের ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে দেশের মানুষ বিশেষ করে পুরান ঢাকার বাসিন্দাদের মধ্যে বিরাজ করছে ব্যাপক আগ্রহ ও কৌতূহল।

কারা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের রাজনীতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রত্মতত্ত্বের স্মৃতি ধরে রেখে কিভাবে জমির সঠিক ব্যবহার করা যায় সে সম্পর্কে পরিকল্পনা প্রণয়নে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক ও কারা অধিদফতরের আইজিকে (প্রিজন) সদস্য সচিবসহ একজন ইতিহাসবিদ, একজন স্থাপত্যবিদ ও একজন প্রত্মতত্ত্ববিদ রয়েছেন। পাঁচ সদস্যের এ কমিটি তাদের পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা প্রস্তাব আকারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেবেন।

কারা অধিদফতরের এআইজি (প্রশাসন) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, এক কালের মোগল দূর্গ ও পরবর্তীতে ১৯শ’ শতকের শুরুর দিকে সংস্কারের মাধ্যমে জেলখানায় রূপান্তরিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার বহুল স্মৃতিবিজড়িত। রাজনীতি, ইতিহাস ঐতিহ্য ও প্রত্মতত্ত্বসমূহকে ধরে রেখে কিভাবে জমির সদ্বব্যবহার করা যায় সে ব্যাপারে জোর চিন্তা ভাবনা চলছে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন পরিকল্পনার মধ্যে বৃটিশ আমলে নির্মিত দুটি ভবন স্মৃতি হিসেবে সংরক্ষণ, বঙ্গবন্ধু, চার নেতা ও কারা স্মৃতি জাদুঘর জনগণের জন্য উন্মুক্ত, সুন্দর একটি বিনোদন পার্ক নির্মাণ, কারা অধিদফতরাধীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের জন্য একটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট নির্মাণ রয়েছে। এছাড়া কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কল্যাণ ফান্ড থেকে অর্থ ব্যয়ে বহুতল বিশিষ্ট শপিং কমপ্লেক্স নির্মিত হবে। যেখানে সুইমিং পুল, কনভেনশন সেন্টার ও জিমনেশিয়ামের সুযোগ-সুবিধা থাকবে।

মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন আরো বলেন, তবে এখনও সব কিছু পরিকল্পনা পর্যায়ে রয়েছে। ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, ১৮৩৬ সালের আগে পর্যন্ত এটি কোতোয়ালী পুলিশ স্টেশন হিসেবে ব্যবহৃত হতো। বৃটিশ শাসনের আগে এটি মোগলদের দূর্গ ছিল এবং পরবর্তীতে ১৯শ’ শতকের শুরুর দিকে দূর্গ সংস্কার করে জেলখানায় রূপান্তরিত করা হয়।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এক সময় রাজনৈতিক বন্দিদের আটক রাখার জেল হিসেবে সর্বমহলে সুপরিচিত ছিল। বিশেষ করে ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন ও পরবর্তীতে ১৯৭১ এ রাজনৈতিক বন্দিদের এখানে রাখা হয়। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয় এই জেলখানাতেই।

এদিকে, বর্তমানে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ধারণ ক্ষমতা তিন সহ্রসাধিক কিন্তু বন্দি সংখ্যা সাড়ে সাত হাজারেরও বেশি। ফলে কেরানীগঞ্জে নতুন কারাগার নির্মাণ করা হয়। প্রায় ১৯৪ একর জায়গার উপর নির্মিত এশিয়ার সর্বাধুনিক ও বৃহত্তম এ কারাগারের ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৫ হাজার। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন এ কেন্দ্রীয় কারাগার উদ্বোধন করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই