‘ঢাকায় উড়ছে অবৈধ ৩০০ কোটি টাকা’
ঢাকা শহরের বাতাসে উড়ে বেড়ায় অবৈধ ৩০০ কোটি টাকা। শহরের জুয়ার আসরে তিনশো কোটি টাকা কোথা থেকে আসে? বৈধ টাকা দিয়ে কেউ জুয়া খেলে না।সুতরাং নিজেরা সর্তক হন। সময় এসেছে আর কাউকে ছাড় দেয়ার সময় নেই। অবৈধ আয় যাতে কেউ করতে না পারে সেজন্য এনবিআরের সহযোগিতা চাই, উদ্যোগ চাই।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডর সম্মেলন কক্ষে ‘শুদ্ধাচার ও নৈতিকতা’ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এ সব কথা বলেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতির জন্য সময়টা ভালো নয়। সময় এসেছে সতর্কতার সাথে দেশ সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা করার ও নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর। এনবিআর রাষ্ট্রের ব্লাড সঞ্চালন করে। কিন্তু দুর্ভাগ্য ও দুর্বলতা হল যতটুকু ব্লাড সরবরাহের প্রয়োজন তা করতে পারে না।
তিনি বলেন, ব্লাড সরবরাহ না করতে পারার পেছনে ব্যক্তি পর্যায় ও সামগ্রিক পদ্ধতি কাজ করে। ব্যক্তি পর্যায়ে দুদক বা এনবিআর কর্মকর্তারা দায়িত্ব ও দর্শন কি তা নিজেরাই জানে না। এগুলো কর্মকর্তারা নিজেকে কখনো জিজ্ঞাসা করেন কিনা আমার জানা নেই।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, দেশে ধনী দরিদ্রের পার্থক্য থাকবে। তবে আশার কথা ভারত ও চীন থেকে আমরা অনেক এগিয়ে আছি। সম্পদের সুষম বন্টনের মাধ্যমে এ পার্থক্য দূর করার দায়িত্ব এনবিআরের।
করদাতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা এদেশের মালিক হবেন না তা হতে পারে না। মালিক হবেন তখনই যখন সরকারের খাতায় আপনার নাম থাকবে। শুধু আইডি কার্ড থাকলে এদেশের মালিক হবেন না। দেশে শেয়ার থাকতে হবে। সে শেয়ার হচ্ছে ট্যাক্স।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, সরকার বারবার সম্পত্তির হিসাব নিতে বলছে। কিন্তু এনবিআর কর্মকর্তাদের কারণে সম্পত্তির হিসাব নিতে পারছি না।সুতরাং অবৈধ আয় যাতে কেউ করতে না পারে সেজন্য এনবিআরের সহযোগিতা চাই, উদ্যোগ চাই, কর্মদক্ষতার উন্নয়ন চাই।
কর্মকর্তাদের প্রশ্ন করে তিনি বলেন, সমস্ত কালো টাকা জমি ক্রয়ে চলে যাচ্ছে। গুলশানে ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি দুই কোটি টাকায় রেজিস্ট্রেশন হয়। কালো টাকা একবার ঢুকে গেলে তা বের করা সম্ভব হয় না।
তিনি বলেন, প্রত্যেক নাগরিক এনবিআরে সঠিকভাবে ট্যাক্স ফাইল জমা দিলে সম্পত্তি ও অর্থের উৎস জানতে পারবো। এখন তো জিজ্ঞাসা করতে পারি না, কারণ দুদকের সেই সক্ষমতা নেই। এনবিআর জিজ্ঞাসা করতে পারে। দুদক ট্যাক্স চাই না, সম্পত্তির হিসাব চাই।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদক ও এনবিআরের আইন দুইটা দুই রকম। এক দেশে দুই আইন হতে পারে না। ট্যাক্স বিভাগ যখন একজনকে সনদ দিয়ে দেয় দুদক তখন কিছু বলতে পারে না। এটা নৈতিকতার প্রশ্ন। সম্পত্তির পরিমাণ দেখে সনদ দেয়া হয় না।
দুর্নীতি নির্মূলে কর্মকর্তাদের দুদককে সহায়তার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা গত একবছর ধরে দেখেছেন অফিস থেকে কর্মকর্তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে আমরা বুঝানোর চেষ্টা করেছি, দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। দুর্নীতি করবেন, ঘুষ নেবেন এদেশের মানুষ সেটি আর গ্রহণ করবে না। অবৈধ আয় হল নেশা, এ নেশা বন্ধ হওয়ার দরকার।
মন্তব্য চালু নেই