ঢাকার ৮০ শতাংশ মুরগীর বাজারে বার্ড ফ্লু!

শাহীন সরদার, বাকৃবি প্রতিনিধি : ঢাকার ৮০ শতাংশ পর্যন্ত পোল্ট্রি ও দেশী মুরগীর বাজারে বার্ড ফ্লু বা এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা নামক ভাইরাস পাওয়া গেছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। তারা সম্মিলিতভাবে ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন বাজারে জরিপ চালিয়ে এ তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছেন এফএও এর ন্যাশনাল টেকনিক্যাল উপদেষ্টা মো. জাকিউল হাসান। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ‘প্রাণির রোগ নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুতি’ শীর্ষক দুই দিন ব্যাপি বৈজ্ঞানিক সম্মেলন এবিষয়ে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তিনি।

এবিষয়ে মো. জাকিউল বলেন, ঢাকায় ছোট-বড় প্রায় ৬৫৯ টি মুরগীর মার্কেট রয়েছে। যেখানে কমপক্ষে একটি মুরগীর দোকান আছে সেটিকে আমরা মার্কেট বলছি। আমরা একটি মার্কেটের ১৮টি বিভিন্ন দিক যেমন ছুরি, খাঁচি ইত্যাদি থেকে (মূলত এনভায়রনমেন্টাল নমুনা) নমুনা সংগ্রহ করেছি। নমুনা সংগ্রহের পর আমরা এখন পর্যন্ত ১০৬টি বাজারের নমুনা বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা রেফারেন্স ল্যাবে টেস্ট করে এ তথ্য পেয়েছি।

তিনি আরো বলেন, তিন ধরণের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মধ্যে এইচ৫এন১ টাইপের এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস মুরগীর শ্বাসতন্ত্রে জটিল রোগ সৃষ্টি করে। জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসে বার্ড ফ্লু ভাইরাসে আক্রান্তের হার ৬০ থেকে ৮০ শতাংশের মধ্যে বিদ্যমান। এপ্রিল মাসে এ মাত্রা সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ পাওয়া গেছে। তবে জুন থেকে আগস্ট এ সময়টাতে এ ভাইরাসে আক্রমণের মাত্রা তুলনামূলকভাবে কমে যায়।

বার্ড ফ্লু ভাইরাসটি মুরগীতে আছে কিনা জানতে চাইলে জাকিউল বলেন, আমরা এখনো মুরগী থেকে নমুনা সংগ্রহ করিনি। তবে বাজারে পাওয়ার অর্থ হল মুরগীতেও আছে। তবে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মানুষের ক্ষেত্রে প্রায়শই এ রোগটি হয়ে থাকে। তবে রোগটি ছোঁয়াচে নয়। মানুষের ক্ষেত্রে এ রোগে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হার প্রায় ৬০ শতাংশ। তবে এ রোগে পোল্ট্রি মুরগীর মৃত্যুহার আগের থেকে কমেছে। বার্ড ফ্লু ভাইরাসে আক্রান্ত কোন জীবিত বা মৃত মুরগীর কিংবা পরিবেশের সংস্পর্শে এলে মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করে খেলে এ রোগের জীবাণু মারা যায়।



মন্তব্য চালু নেই