ডেঙ্গু জ্বরে অতিরিক্ত পানি পান করলে বিপদ

চিকিৎেসকের চেম্বারে ১১ বছরের আদ্রিকাকে নিয়ে এসেছেন বাবা-মা। হাত পা ফুলে ঢোল। চিকিৎসকের তো মাথায় হাত। পরে জানা গেলো, সপ্তাহখানেক আগে মেয়ের জ্বর এসেছিল, তখন এলাকার এক চিকিৎসকের কথা মতো প্রচুর পানি পান করানো হয়েছে আদ্রিকাকে। আর সেই থেকেই ঘটেছে বিপত্তি।

হাত পা সাদা হয়ে গিয়েছে সাত বছরের অভির। মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না। সঙ্গে সঙ্গে রক্তের নমুনা নিলেন চিকিৎসক। রক্তে ‘প্যাক্ড সেল ভলিউম’ অর্থাৎ লোহিত কণিকার শতকরা পরিমাণ অনেকটাই কমে গিয়েছে। জ্বরের পরে ছেলেটিকে অত্যধিক পানি পান করানোয় এমনটা হয়েছে।

ইদানিং আশেপাশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। জ্বর হলে গলা ‍শুকিয়ে আসে এবং শরীরে আর্দ্রতা ধরে রাখতে পানি খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তবে এতে হিতে-বিপরীত হচ্ছে।

চিকিৎসকদের মতে, গলা যাতে শুকিয়ে না যায়, জিভ যাতে টেনে না ধরে, সেজন্য যেটুকু পানি খাওয়ার প্রয়োজন, সেটুকু পানি খেতে হবে। সারা দিনে ঘণ্টায় ঘণ্টায় লিটার লিটার পানি খেতে হবে, তার কোনও মানে নেই। পর্যাপ্ত পানি, অর্থাৎ শরীরের চাহিদামতো পানি।

এছাড়া, জ্বরে শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে শরবত বা ফ্রুট জুস একেবারে দেওয়া যাবে না। ঘরে তৈরি স্যুপ চলতে পারে। ফোটানো পানিই এ ক্ষেত্রে সব থেকে ভাল।

পরজীবী বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গুর সময়ে ফুসফুস, পেটের ভিতরে চামড়ার নিচে পানি জমে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। ওই পানির জন্য সংক্রমণের তীব্রতাও বাড়ে। শরীরে পানির ভারসাম্যটা যথাযথ রাখাটাই মূল লক্ষ্য।

এছাড়া ডেঙ্গু বা ভাইরাল জ্বরে নিয়মিত রক্তের প্যাক্ড সেল ভলিউম পরিমাপের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। প্যাক্ড ভলিউম কমে গেলে তবেই শরীরের অতিরিক্ত পানির প্রয়োজন হয়।



মন্তব্য চালু নেই