ডিম খাওয়ার কারণে শরীরে যে ১০টি পরিবর্তন হয়ে থাকে

প্রোটিনের অন্যতম একটি উৎস ডিম। পুষ্টিগুণের কারণে একে সুপার ফুড বলা হয়। এতে প্রোটিন, অ্যামিনো অ্যাসিড, আয়রন এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যা শরীরে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে পেশী গঠন করে থাকে। কিন্তু প্রতিদিন ডিম খাওয়া কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর? ডিমে কোলেস্টেরল থাকার কারণে অনেকেই বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিরা যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল সমস্যা আছে তারা মনে করেন প্রতিদিন ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নয়। একটি ডিমে ৮৫% ক্যালরি এবং ৭% প্রোটিন রয়েছে, যার মধ্যে কুসুমে ৯৫% ক্যালসিয়াম এবং আয়রন এবং সাদা অংশে বাকী ক্যালসিয়াম এবং আয়রন থাকে। ডিম খেলে আসলে আপনার শরীরে কী কী পরিবর্তন হবে আসুন তা জেনে নেওয়া যাক।

১। ডিম বাঁচিয়ে দেবে আপনাকে

মানব দেহ ১১ ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড উৎপাদন করে। মানুষের দেহে নয় বা তার থেকে বেশি পরিমাণ অ্যামিনো অ্যাসিডের প্রয়োজন পড়ে। ডিম সেই নয়টি অ্যাসিড প্রদান করে। অ্যামিনো অ্যাসিডের অভাবে দুর্বলতা, অবসাদ, ক্লান্তিবোধ অনুভূত হয়।

২। হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে

দুই রকমের কোলেস্টেরল আছে ভাল কোলেস্টেরল (এইচডিএল), খারাপ কোলেস্টেরল( এলডিএল)। খারাপ কোলেস্টেরল ধমণী ব্লক করে হৃদ্ররোগ সৃষ্টি করে থাকে। আর ভাল কোলেস্টেরল ধমনী থেকে চর্বি অপসারণ করে হার্ট সুস্থ রাখে। ডিম বড় এলডিএলকে ছোট এলডিএলে রূপান্তরিত করে কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

৩। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

প্রতিদিন একটি বা দুটি ডিম ইনফেকশন, ভাইরাস রোধ করে। ডিমে রয়েছে ২২% সেলেনিয়াম যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং থাইরয়েড হরমোন সুস্থ রাখে। সেলেনিয়ামের অভাবে শিশুদের কেশান (Keshan) এবং কাশিন বেক (kashin-Beck) রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৪। স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে

Harvard University এর ২০০৩ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রতিদিন একটি ডিম তরুণীদের স্তন ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করে। আরেক সমীক্ষায় দেখা গেছে যেসব মহিলারা প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ৬টি ডিম খান তাদের শতকরা ৪৪ ভাগ ব্রেস্ট ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয় যারা দুই বা এরচেয়ে কম ডিম খেয়ে থাকেন।

৫। স্ট্রেস হ্রাস করতে

আপনার যদি অ্যামিনো ৯ অ্যাসিডের ঘাটতি থাকে তবে তা আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের প্রভাব ফেলবে। ২০০৪ সালে এক জার্নালে দেখা গিয়েছে যে খাবারের সাথে স্ট্রেস, দুশ্চিন্তার সম্পর্ক আছে। কিছু খাবার আছে যা আপনার স্ট্রেস কমিয়ে দেয়। ডিম তাদের মধ্যে অন্যতম।

৬। ওজন হ্রাস করতে সাহায্য করে

আপনি কি জানেন ডিম ওজন হ্রাস করতে সাহায্য করে? অনেকে ধারণা ডিমের ফ্যাট শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে দেয়। Rochester Center for Obesity Research গবেষণায় দেখেছেন প্রতিদিন সকালের নাস্তায় একটি ডিম সারাদিনে ক্ষুধার পরিমাণ কমিয়ে দেয়, বেশি খেয়ে ফেলার প্রবণতা কমায়। রোজ ডিম খেয়ে তিন পাউন্ড বা এর বেশি ওজন এক মাসে আপনি কমিয়ে ফেলতে পারেন।

৭। দৃষ্টিশক্তি উন্নত করা

ডিমের কুসুমে লুটেইন এবং জিয়াজ্যানথিন উপাদান রয়েছে যা ম্যাকুলার ডিজেনারেশন এবং কাটার‍্যাটসের ঝুঁকি হ্রাস করে। আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিকাল নিউট্রিশনের মতে, ডিমের কুসুম ১১৪% থেকে ১৪২% জিয়াজ্যান্থিন এবং ২৮% থেকে ৫০% পর্যন্ত লুটেইন বৃদ্ধি করে শরীরে।

৮। ত্বক এবং চুলে পুষ্টি যোগায়

স্বাস্থ্যকর চুল, ত্বক, চোখ এবং লিভারের জন্য ভিটামিন বি কমপ্লেক্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের নার্ভ সিস্টেমকে সচল রাখতে সাহায্য করে।

৯। শক্তি বৃদ্ধি করে

ভিটামিন বি১২ বা রিবোফ্লোভিন এবং অন্যান্য ভিটামিন বি সারাদিনের শক্তি যোগানের জন্য যথেষ্ট। একটি ডিম সারাদিনের ভিটামিন বি২ এর চাহিদা পূরণ করে থাকে।

০। দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে

উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার রুচিতে প্রভাব ফেলে থাকে। দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে ওজন হ্রাস করতে সাহায্য করে।

সূত্র: নেচারাল কিউর এন্ড হোম রিমিডিস



মন্তব্য চালু নেই