ডিভোর্সের পর দ্বিতীয় বিয়ে, অবশ্যই মনে রাখবেন যে ৭টি বিষয়

নানা কারণেই দ্বিতীয় বিয়ে করতে হয় মানুষকে। কেউ ইচ্ছা করে করেন, কেউ বাধ্য হয়ে। আমাদের সমাজে অনেক পুরুষেরই আছে একাধিক স্ত্রী। নারীদের ক্ষেত্রে বিধবা না হলে দ্বিতীয় বিয়ে খুব একটা দেখা যেত না। তবে আজকাল যেহেতু ডিভোর্সের সংখ্যা অনেক বেশি বেড়েছে, তাই স্বভাবত ডিভোর্সের পর দ্বিতীয় বিয়ের ব্যাপারটা চলেই আসে। প্রথম স্বামী বা স্ত্রীর মৃত্যুর পর যে দ্বিতীয় বিয়ে, সেটার ব্যাপার সম্পূর্ণ আলাদা। কিন্তু বিবাহ বিচ্ছেদের পর নতুন করে আবার বিয়ে করার বিষয়টি কিন্তু একেবারেই অন্যরকম। এক্ষেত্রে জড়িয়ে থাকে নানা ধরণের তর্ক-বিতর্ক, অভিযোগ-অনুযোগ, অতীত স্মৃতি ইত্যাদি আরও কত কি। আর তাই খুব বেশি সাবধানতা অবলম্বন না করলে কাঁচের মত গুঁড়িয়ে যেতে পারে আপনার এই সম্পর্কটিও!

অতীতকে ভোলার চেষ্টা করবেন না, তবে…

অতীতকে আসলে চাইলেও ভুলে যাওয়া যায় না, কিছু সময়ের জন্য হয়তো কেবল ভুলে থাকা চায়। তাই অযথা অতীত ভুলে যাবার জন্য মনকে জোর দেবেন না। বরং হ্যাঁ, অতীতের ভুলগুলোকে মনে রাখুন। জীবনে যে বিপর্যয়ের দিন পার করে এসেছেন, সেগুলোকেও মনে রাখুন। কিন্তু সেই মনে রাখাকে রাখুন একান্তই নিজের মাঝে। কখনোই নিজের অতীতের ছাপ বর্তমান জীবনে পড়তে দেবেন না।

মনে রাখবেন, এক হাতে তালি বাজে না

ডিভোর্স ব্যাপারটা কখনোই এক তরফা হয় না। দুজনেরই দোষ থাকে। দোষ না থাকলেও নিদেন পক্ষে কাহিনী এটাই হয় যে দুজনের বনিবনা হচ্ছে না। তাই কাউকেই এক তরফা দোষ না দিয়ে নিজের দোষ-ত্রুটি গুলোও ভেবে বের করুন। ভাবুন যে কেন আপনার প্রথম বিয়ে সফল হলো না। এবং পরের বিয়েতে যে কোন মূল্যে সেই ভুলগুলোকে এড়িয়ে চলবেন।

যে কোন সম্পর্কেই চাই সমঝোতা

ভাবছেন যে দ্বিতীয় বিয়ে বলেই সমঝোতা করতে হবে কেবল? আসলে যে কোন সম্পর্ক ধরে রাখতেই প্রয়োজন পড়ে একটু খানি সমঝোতার। তাই এই বিষয়টি নিয়ে মন খারাপ করবেন না মোটেও। তবে হ্যাঁ, ডিভোর্সের পর দ্বিতীয় বিয়েতে হয়তো একটু বেশি সমঝোতা করতে হতেই পারে। সেই মানসিক প্রস্তুতি থাকা খুব জরুরী।

জীবনের কিছু অধ্যায়কে চিরতরে বন্ধ করে ফেলুন

জীবনে কোন কিছুই সারা জীবন থাকে না, থাকতে পারে না। কখনো না কখনো সবকিছুকেই ছেড়ে দিতে হয়। হয়তো আগের শ্বশুরবাড়িতে অনেকের সাথে আপনার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। আছে অনেক সুখ স্মৃতি, অনেক ভালো লাগার অনুভূতি। তবে যত যাই থাকুক না কেন, অতীত সম্পর্কের বিষয়টিকে জীবনের একটি হারিয়ে যাওয়া অধ্যায় হতে দিন। যত সহজে কাজটা পারবেন, তত ভালো থাকবেন জীবনে।

না চাইলেই কিছু ব্যাপারের মুখোমুখি হতেই হয়

কেউই শুনতে চান না কটু কথা কিংবা সমালোচনা। কিন্তু ডিভোর্সের পর দ্বিতীয় বিয়েতে নানা রকমের কথা আপনাকে শুনতেই হবে। কী হলো আর কেন হলো, কীভাবে হলো এইসব প্রশ্ন তো আসবেই। একই সাথে আসবে নানান রকমের দোষারোপ। আর বর্তমান স্বামী বা স্ত্রী যদি অববাহিত হন, কিংবা আপনার যদি সন্তান থাকে তাহলে হবে আরও অপ্রীতিকর অবস্থা। এসব ক্ষেত্রে কষ্ট পেলেও ঘাবড়ে যাবেন না যেন।

সকলকে খুশি করা সম্ভব না

এই এক জীবনে সকলকে খুশি করতে পারবেন না। সেটা নিজের বাবার বাড়ি হোক, আত্মীয় মহল হোক, কিংবা নতুন শ্বশুরবাড়ি- একেবারে সবাই যে আপনাকে নিয়ে ১০০ ভাগ খুশি হবে বিষয়টা মোটেও তেমন নয়। আর তাই সেই চেষ্টাও করবেন না কিংবা বিষয়টি নিয়ে মন খারাপ করবেন না।

একটাই জীবন, ভুলে যাবেন না কখনোই

ছোট্ট এই জীবনে কষ্টের খাতার পাতাগুলো ভরা আমাদের সবারই। কিন্তু তাই বলে কি সারাক্ষণ কাঁদতে হবে? এই কষ্টে ভরা জীবন থেকেই খুঁজে নিতে হবে সুখ, আহরণ করে নিতে হবে বেঁচে থাকার আনন্দ। অতীতে কী হয়েছিল আর ভবিষ্যতে কী হবে এসব নিয়ে না ভেবে বর্তমানে বাঁচুন। যেটুকু সময় আনন্দের পাচ্ছেন, পুরোটা উপভোগ করে নিন। ভালো থাকুন।

সূত্র-
কজমোপলিটন, হাফিংটন পোষ্ট ও এলিট ডেইলিতে প্রকাশিত প্রবন্ধ অবলম্বনে



মন্তব্য চালু নেই