ডাক্তার হতে চায় এই নেকড়ে কিশোরী

মুখসহ সারা শরীরে চুলের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি | জন্ম থেকে এই জিনগত ত্রুটির জন্য ১৭ বছরের কিশোরীর পরিচয় ‘মাঙ্কি ফেস’ বা ‘উল্ফ গার্ল’ | থাইল্যান্ডের এই কিশোরী বিশ্বের ‘মোস্ট হেয়ারিয়েস্ট গার্ল’|

তবু জীবনের সব প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে ডাক্তার হতে চায় এই ‘নেকড়ে কন্যা’ | স্বপ্ন দেখার ইচ্ছেটা অবশ্য এত মসৃণ ছিল না | জীবনের শুরু থেকে সহ্য করতে হয়েছে তীক্ষ্ণ টিকা টিপ্পনি | বাবা, মা আর দিদি সুকন্যার কাছে আদরের হলেও স্কুলে সবাই হেনস্থা করত সুপাত্রাকে |

ক্রমে নিজের সহজাত মিষ্টি ক্ষমতা দিয়ে সবার মন জয় করে নিয়েছে সে | এখন স্কুলে ভাল ছাত্রী তো বটেই | তার বন্ধুও অনেক | অন্য কিশোরীর মতোই সুপাত্রা ভালবাসে বন্ধুদের সঙ্গে মিলে নাচ-গান করতে | পছন্দ করে সাঁতার কাটতে | আর ভালোবাসে নিজের ছোট্ট ঘরে বসে টিভিতে কার্টুন দেখতে |

বিরল ‘Ambras Syndrome’-এ আক্রান্ত সুপাত্রা সসুফন | এখন সারা বিশ্বে মাত্র ৫০ জনের এই ক্রোমোজম ঘটিত সমস্যা আছে | লেজার ট্রিটমেন্ট করেও লাভ হয়নি | আবার গজিয়ে গেছে চুল | যত বড় হচ্ছে সুপাত্রা, তত মোটা আর ঘন হচ্ছে এই চুল | তার মা নিয়মিত চুল কেটে বেবি শ্যাম্পু দিয়ে স্নান করিয়ে দেয় সুপাত্রাকে |

মধ্যযুগ থেকে পৃথিবীতে এই বিরল লক্ষণের কথা জানা যায় | তখন আক্রান্তদের ‘werewolf’ বলে একঘরে করে রাখা হত | সেই কুসংস্কার এখনও কাটেনি | সুপাত্রার মা যখন সদ্যোজাত মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন, প্রতিবেশীরা বলেছিল, এই শিশু তার বাবা-মায়ের পাপের ফল | ধীরে ধীরে সেই প্রতিবেশীদেরও মন জয় করেছে সুপাত্রা| তার নরম আর মিষ্টি স্বভাব দিয়ে |

এখনও অবধি দু বার অস্ত্রোপচার হয়েছে সুপাত্রার | শ্বাসকষ্ট আর ক্ষীণ দৃষ্টি শক্তির জন্য | পূর্ণ সুস্থতা না এলেও ভাটা পড়েনি তার মনোবলে | নিজেকে আর পাঁচটা মানুষের মতোই ভাবে সুপাত্রা | মেয়ের দিকে সবরকম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তার বাবা-মা’ও | তাঁরা পাশে থাকায় সুপাত্রার বিশ্বাস, একদিন সে সুস্থ হয়ে উঠবে | সেই বিশ্বাস আর অদম্য সাহস নিয়েই ডাক্তার হওয়ার দিকে এগোচ্ছে সে |



মন্তব্য চালু নেই