ঠাকুরগাঁওয়ে ভুট্টার বাম্পার ফলনে দাম পাচ্ছেনা চাষীরা
শরিফুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ॥ অল্প পরিশ্রমে অতিরিক্ত লাভবান হওয়ায় ঠাকুরগাঁও জেলায় এ বছর ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। ভুট্টা ওঠার শুরুতে চাষিরা ভালো দাম পেলেও বর্তমানে ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে কম দামে। বিক্রি হলেও টাকা পাচ্ছেন না হাতে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৯ হাজার ৮শ ৮৯ হেক্টর। গত বছর আবাদ হয়েছিল ১৮ হাজার ৮শ’ হেক্টর। অর্থাৎ চলতি মৌসুমে অনেক বেশি জমিতে বেশি ভুট্টার আবাদ হয়েছে। বোরো ধানের লোকসান পুষিয়ে নিতে এবার অনেক কৃষক ভুট্টার আবাদ করেছেন। এদিকে প্রতি বিঘা জমিতে ৪০ মণ থেকে ৪৫ মণ হারে ভুট্টার ফলন হলেও বাজারে গত বছরের তুলনায় কম দামে ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে।
গত বছর প্রতিমণ ভুট্টা ১১শ’ টাকা থেকে ১২শ’ টাকায় বিক্রয় হলেও বর্তমানে বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রতিমণ ভুট্টা ৮শ’ টাকা থেকে সাড়ে ৯শ’ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
ভুট্টাচাষে প্রতি বিঘা জমিতে ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। লিজ নিয়ে ভুট্টা চাষিদের ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। অনেকেই ৫-৬ হাজার টাকা বিঘা জমি লিজ নিয়ে ভুট্টার চাষ করে দাম না থাকায় বিপাকে পড়েছেন। সে কারণে অধিকাংশ কৃষকই জমি থেকে ভুট্টা তুলছেন না।
আউলিয়াপুর ইউনিয়নের লাউথুতি গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল হক জানান, বোরো ধানের লোকসান পুষিয়ে নিতে এবছর তিনি ৩ একর জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন। কিন্তু বাজারে ভুট্টার দাম না থাকায় বিপাকে পড়েছেন। গড়েয়া ইউনিয়নের চকহলদি গ্রামের ভুট্টা চাষি আবুল হোসেন জানান, এ বছর সরকারিভাবে গম ও বোরো ধান সংগ্রহ নিয়ে টালবাহানায় কৃষকেরা গম ও বোরো চাষ করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বর্তমান বাজারে যে দামে ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে এতে কৃষকরা লাভবান না হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ভুট্টা চাষি নজরুল ইসলাম জানান, গতবারের তুলনায় বর্তমানে অনেকটা কম দামে ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে ভুট্টা পাকার পরও বাজারে দাম না থাকায় জমিতেই রেখেদিয়েছেন তার সাথে অনেকেই। পাকা ভুট্টা জমিতে বেশিদিন রাখা যায় না। কিন্তু বাধ্য হয়েই জমিতে ভুট্টা ফেলে রেখেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আরশেদ আলী জানান, এ বছর জেলায় ১ লাখ ১৯ হাজার ৮শ মেট্রিক টন ভুট্টার ফলন হয়েছে। এই এলাকাতে বেশ কিছু মুরগী র্ফাম গড়ে ওঠার কারণে ধান আবাদের চেয়ে ভুট্টা চাষ বেশি হচ্ছে। কিন্তু বর্তমান বাজার দর নিয়ে কৃষকরা হতাশায় দিন পার করছেন।
মন্তব্য চালু নেই