ঠাকুরগাঁওয়ে গমক্রয়ে দুর্নীতি বন্ধের দাবীতে কৃষক সমিতির বিক্ষোভ স্মারকলিপি

“কৃষক বাচাও, কৃষি বাচাও, দেশ বাচাও” স্লোগান নিয়ে পীরগঞ্জ খাদ্যগুদামে চলতি গম সংগ্রহ মৌসুমের গম ক্রয়ে অনিয়ম দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট বন্ধ এবং মৌসুমের শুরুতে ইরি-বোরো ধানের ন্যয্যমূল্য নিশ্চিত করার ৪ দফার দাবীতে ১১ মে বাংলাদেশ কৃষক সমিতি পীরগঞ্জ উপজেলা শাখা বিক্ষোভ মিছিলসহ ইউএনও’র পক্ষে উপজেলা কৃষি অফিসারের কাছে স্বারকলিপি পেশ করেছে। এদিকে স্থানীয় সংগঠন কুষক পরিবার একই দাবীতে শহরে ব্যাপক পোষ্টারিং করেছে এবং কর্মসূচীর সাথে একাত্বতা প্রকাশ করেছে।

Untitled-1 copy

সরকারী সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৪ হাজার ৩শ’ ৭২ মে.টন গম প্রতিকেজি ২৮ টাকা দরে সরকারী খাদ্য গুদামে সংগ্রহ অভিযান শুরু হয় ৪ মে। সংগ্রহ অভিযানের শুরুতে স্থানীয় ব্যবসায়ী, বিভিন্ন সংগঠন ও সরকারী দলের নেতারা নামে বেনামে ট্রাকে ট্রাকে খাদ্যগুদামে গম সরবরাহ দিতে থাকেন। ঠিক এভাবেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গম সংগ্রহ করতে থাকেন গুদাম কতৃপক্ষ। উৎপাদক কৃষক গুদামের ধারে কাছেও যেতে পারছেননা। তাদের কাছে কৃষিকার্ড থাকলেও তাদের নামের তালিকা নেই গুদাম কর্মকর্তার কাছে। যার প্রেক্ষিতে কৃষকরা গুদামে গম দিতে পারছেনা মর্মে অভিযোগ করে বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টির গণসংগঠন, বাংলাদেশ কৃষক সমিতি, পীরগঞ্জ উপজেলা শাখা বিক্ষোভ মিছিল ও স্বারকলিপি পেশের কর্মসূচী ঘোষনা করে ৭ মে শহরে মাইকিং শুরু করে। প্রায় ঘন্টাব্যাপি মাইক প্রচার চলার পর স্থানীয় পৌরমেয়রের নির্দেশে কৃষক সমিতির প্রচার মাইকটি আটক করা হয়। উভয় পক্ষের আলোচনার পর মাইকটি রাতে ছেড়ে দেয়া হয়। এদিকে ৮ মে সমগ্র শহরে খাদ্যগুদাম কর্মকর্তাদের হুশিয়ারী দিয়ে ব্যাপক পোষ্টারিং করা হয়। পোষ্টারে স্থানীয় সংগঠন ‘কৃষক পরিবার’ এর ব্যানারে “সরাসরি সরকারী খাদ্যগুদামে কৃষকের কাছ থেকে গম ক্রয় করতে হবে, কৃষকের গম নিয়ে তালবাহানা বন্ধ কর করতে হবে, কৃষকের ফসলের ন্যয্যমূল্য দিতে হবে, ফসলের লাভজনক দাম চাই, অবিলম্বে সরকারী ক্রয় কেন্দ্র চালু কর, ভূমি অফিস ও পল্লীবিদ্যুতের অনিযম-হয়রানী বন্ধ কর” ইত্যাদি স্লোগান সম্বলিত বিষয় উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে সংগ্রহ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার কৃষক সমিতি ও কৃষক পরিবারের নেতাকর্মীদের ১০ মে তার অফিসে আলোচনার জন্য ডেকে নিয়ে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা করেন কিন্তু সংগঠনের নেতারা তাদের দাবীতে অনঢ় থাকায় বৈঠকটি ব্যর্থ হয়। শহরে আবারো বের করা হয় মাইকিং। ঘোষিত কর্মসূচী মোতাবেক কৃষক সমিতি সোমবার দুপুরে শহরের ডাকবাংলো থেকে লাল পতাকা ও ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহর প্রদক্ষিন শেষে পূর্ব চৌরাস্তায় আলোচনা সভায় মিলিত হয়। এখানে বক্তব্য রাখেন কৃষক সমিতি কেন্দ্রিয় কমিটির সহ.সভাপতি আলতাফ হোসেন, ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার আহবায়ক ইসমাইল হোসেন, রানীশংকৈল উপজেলা নেতা আব্দুল মান্নান, পীরগঞ্জ উপজেলা সভাপতি অধির রায়, সম্পাদক মর্তুজা আলম, বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টি, পীরগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক এডভোকেট আবু সায়েম প্রমুখ। পরে বিক্ষোভ মিছিল সহ উপজেলা পরিষদে গিয়ে ১.মৌসুমের শুরুতেই অর্থাৎ মার্চ মাসের শুরুতেই গম ক্রয় করতে হবে ২. গম ক্রয়ে অনিয়ম, দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট বন্ধ কর ৩. ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে মৌসুমের শুরুতেই সরকারি ক্রয় কেন্দ্র চালু করে দ্রুত ধান ক্রয় কর ৪.পীরগঞ্জ উপজেলার সাব এলএসডি গোডাউনগুলো দ্রুত চালু করতে হবে দাবী সম্বলিত স্বারকলিপি খাদ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবরে লিখিত স্বারক লিপি পেশ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুপস্থিতিতে উপজেলা কৃষি অফিসারের কাছে।



মন্তব্য চালু নেই