‘টেন্ডারবাজি বন্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ই-টেন্ডার চালু হবে’

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এবং যাতে টেন্ডাবাজি না হয়, সেজন্য এ বছর থেকে ই-টেন্ডার চালু করা হবে।

সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মঙ্গলবার দুপুরে চিকিৎসক ও সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রণালয়ে তদবির বেশি হয় মন্তব্য করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ব্যক্তিগত চাপ কমাতে তদবির ও পদায়নের জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। প্রতি সোমবার এ কমিটি আবেদন ও সুপারিশের ভিত্তিকে পদোন্নতি ও বদলির সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।

সাধারণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সরকারের লক্ষ্য উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কোনোভাবেই উপজেলা পর্যায়ের চিকিৎসকদের প্রত্যাহার করা হবে না।

তিনি আরো বলেন, যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় অনিয়ম বন্ধ করতে একটি কমিটি করা হয়েছে। চলতি অর্থবছর থেকে কমিটি কাজ শুরু করবে। এতে করে অনিয়ম কমে যাবে।

দৈনিক সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার বলেন, ঈদের ছুটিতে যাতে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কমিশনের লোভে দরকার না হলেও অনেক হাসপাতালে যন্ত্র আমদানি করা হয়েছে। যা ওই হাসপাতালে ব্যবহার করা হয় না। এগুলোর বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

পদোন্নতির ব্যাপারে পত্রিকায় অনেক লেখালেখি হয়েছে- স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এদিকে নজর দেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন গোলাম সারওয়ার।

বৈশাখীর টেলিভিশনের সিইও মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, হাসপাতলে দর্শানার্থী টাকা দিয়ে প্রবেশ করানো হলে সমস্যা দূর হবে না। রোগী প্রতি তিন জন দর্শনার্থীর পাস দেওয়ার কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, এক সঙ্গে একজনের বেশি নয়। প্রতি ৮ ঘণ্টায় একজন দর্শনার্থীকে সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অতিরিক্ত দর্শনার্থী নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। হাসপাতালে যন্ত্রপাতি কেনাকাটার ক্ষেত্রে ক্রয় কমিটি মনিটরিং করলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সাধারণের শতভাগ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারবে।

বিএমএ নেতা শরফুদ্দিন আহমেদ দর্শনার্থীদের বিষয়ে বলেন, রোগী প্রতি দুইজন অ্যাটেডেন্ট রাখা যেতে পারে। হাসপাতালে গত তিন মাসে ৮১ জন চিকিৎসককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

হাসপাতালের পরিচালক বা সিভিল সার্জনদের যাতে ঠিকাদাররা চাপ প্রয়োগ না করে, সেজন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। তিনি বলেন, সারা দেশে সাড়ে চার হাজার চিকিৎসক এডহক ভিত্তিকে কাজ করছে। এরমধ্যে দুই হাজার ডাক্তার নিয়মিত হয়েছে। বাকি আড়াই হাজার চাকরি নিয়মিত করা হলে চিকিৎসকদের যে হতাশা আছে, তা দূর হবে।

সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম। লাইসেন্স ছাড়া গজিয়ে ওঠা বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনিস্টক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর আহবান জানান।

বিএমএ নেতা ইকবাল আর্সালান বলেন, নতুন মেডিক্যাল কলেজ সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বন্ধ করতে হবে। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকায় এখানে ডাক্তার তৈরি হচ্ছে না। এতে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। হাসপাতালে নার্স বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্যসচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই