ঝূঁকির মুখে ভোলা শহর
ভোলা সদরের ইলিশা ফেরীঘাট এলাকায় সড়ক প্রায় ৪’শ মিটার নতুন করে বিলীন হয়ে গেছে। এতে আতংকিত হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী, ব্যবসায়ী, পরিবহন মালিক ও শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। সোমবার সকাল থেকে মঙ্গবার দুপুর পর্যন্ত যাত্রী পারাপারঘাট, একটি মসজিদ, শতাধিক ঘরবাড়ি ও ৬০টির অধিক দোকানপাঠ বিলীন হয়ে গেছে।
ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলেই আগামী কয়েক ঘন্টার মধ্যে ভোলা-লক্ষীপুর ফেরীঘাট, দুটি বৃহৎ বাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা বিলীন হয়ে যাবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। অনেকেই আবার ভাঙ্গন আতংকে ঘর বাড়ি ও দোকানপাঠ অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। তবে দরিদ্র মানুষগুলো পড়েছেন বিপাকে।
স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, ঈদের আগের দিন থেকেই ফেরীঘাট এলাকা থেকে ইলিশা চডার মাথা পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়। ভাঙ্গনের খবর শুনে বানিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের পর ওই পয়েন্ট দিয়ে জিও ব্যাগ ফালানোর কাজ শুরু হয়।
কিন্তু রোববার সকাল থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ফেরীঘাটের ৩০০ মিটারেরও বেশি এলাকা জুড়ে ফের ভাঙ্গন শুরু হয়। এতে একটি যাত্রী পারাপার ঘাটসহ ৬০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেঘনা গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সড়ক ভেঙ্গে ভোলা-লক্ষীপুর ফেরী চলাচলের রুট বন্ধ হয়ে গেছে। এতে জেলার সাথে ২১ জেলার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের তীব্রতা বেশী থাকায় অনেকেই দোকানপাঠ অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার সময় পাননি। এ সময় এলাকাবাসীর মধ্যে ফের আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
ভোলা প্রেসক্লাব সম্পাদক সামস উল আলম মিঠু বলেন, নদী ভাঙ্গন পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ আকার ধারন করেছে, ফেরীঘাটের প্রধান সড়ক বিলীন হয়ে গেছে। ফলে মেঘনার ভাঙ্গনে আজ সমগ্র ভোলাবাসী আতংকগ্রস্থ, তাই ইলিশাসহ ভোলাকে রক্ষা করা জন্য সিসি ব্লকসহ সকল প্রযুক্তি ব্যাহার করা জরুরী।
ফেরীঘাট এলাকায় বাসিন্দা রহমান জানান, সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তীব্র ভাঙ্গন অব্যাহত ছিলো। নদী উত্তাল থাকায় পাড় ভেঙ্গে সরু হয়ে যাচ্ছে ফেরীঘাটের সড়ক।
মৎস্য ব্যবসায়ী কামাল বলেন, দুই দিন ভাঙ্গন কম থাকায় হঠাৎ করেই তা বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কোন মুহুর্তে মৎস্য ঘাটসহ বেশীরভাগ এলাকা বিলীন হয়ে যাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা জিয়া বলেন, গত এক সপ্তাহে মেঘনার উত্তর ও পূর্ব পার্শ দিয়ে তীব্র ভাঙ্গন চলছে। এরই মধ্যে নতুন কওে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। নদী ভাঙ্গনের যে ভয়াবহ রুপ ধারন করেছে, এতে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পুরো ইলিশা ইউনিয়ন বিলীন হয়ে যেতে পারে। তাই ভাঙ্গন রোধে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
ভোলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হেকিম বলেন, বিকাল পর্যন্ত প্রায় ২২০ মিটার এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। এ মুহুর্তে বিশ্বরোড এলাকা দিয়ে প্রটেকশন কাজ চলছে, পরবর্তিতে ভাঙ্গন পয়েন্ট দিয়েও জুরুরী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মন্তব্য চালু নেই