জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ দাবী এলাকার অভিভাবক মহলের

ঝিনাইদহে স্কুলের ৫০ লাখ টাকার জমি দখল

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার জিয়ালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উনত্রিশ শতক জমি বেদখল হয়ে গেছে। জিয়ালা গ্রামের প্রভাবশালী আঠারো জন ব্যবসায়ীরা স্কুলের আনুমানিক পঞ্চাশ লাখ টাকার জমি জবর দখল করে পাকা দোকান ঘর তুলে চুটিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই জমি উদ্ধারের চেষ্টা করে উল্টো অপবাদের শিকার হয়েছেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রেজাউল হক।

এদিকে স্কুলের জমিতে বাজার ও পাকা দোকান ঘর তৈরী করায় বিদ্যালয়ের ছেলে মেয়েরা খেলাধুলা করতে পারছে না। সেই সাথে লেখাপড়ার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার জিএম কামাল হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, গত ৯ মার্চ স্কুলের জমি দখলের বিষয়টি তিনি তদন্ত করেন।

তিনি জানান, জিয়ালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাল ৩১১.৩১২.৩১৩ ও ৩১৪ দাগে মোট ৫৭ শতক জমি আছে। এর মধ্যে ৩১১ দাগে ২৯ শতক জমি দখল করে এলাকার প্রভাবশালী ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান সার ও কীটনাশকের দোকান দিয়ে চুটিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া সরকারী জমিতে সোহেল রাণা, আনোয়ার হোসেন, ফজলুর রহমান, ডাক্তার আব্দুর রাজ্জাক, হাফিজুর রহমান, গনেশ চন্দ্র, ওহিদুল ইসলাম মিঠু, আবু বক্কর, ফরিদুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, মিঠু মিয়া, ওয়াহেদ আলী, সবের আলী, ডাক্তার হায়দার আলী, আলমগীর মালিথা, সোহরাব হোসেন ও তরিকুল ইসলাম পাকা দোকান ঘর তুলে স্কুলের জায়গা দখল করে নিয়েছেন।

অভিযোগ উঠেছে সার ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান, জিয়ালা গ্রামের নজরুল ইসলাম ও জিয়ালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমান এই জমি দখলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাদের ইন্ধনে জমি উদ্ধার হচ্ছে না। সাবেক প্রধান শিক্ষক মজিবর স্কুলের জমিতে লাগানো শিমুল গাছের তুলা ভেঙ্গে নিতে চেয়েছিলেন। শিমুল তুলা না পেয়ে তিনি ব্যবসায়ীদের পক্ষ নিয়ে জমি দখলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

এলাকাবাসি তার পেনশন বন্ধের দাবী জানিয়েছেন। স্কুলের সভাপতি আতিয়ার রহমান জানান, প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রনালয় থেকে স্কুলের জমি উদ্ধারের জন্য চিঠি দেয়। চিঠিতে বলা হয় সরকারী জমি উদ্ধারে ব্যার্থ হলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক, উপজেলা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে মোতাবেক স্কুলের পক্ষ থেকে জবর দখলকারী ব্যবসায়ীদের সরকারী জমি ছেড়ে দিতে বলা হয়।

চিঠি পেয়ে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকায় বিশৃংখলা সৃষ্টি ও দলাদলির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মাসুদ করিম বিদ্যালয়ের জমি দখলের বিষয়টি সত্য বলে জানিয়েছেন।

ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান বিষয়টি তদন্ত করে সরকারী জমি থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের ব্যবস্থা করবেন বলে জানান।

তবে এলাকাবাসি স্কুলের জমি উদ্ধারে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মোঃ শফিকুল ইসলামরে তড়িৎ হস্তক্ষেপ কামনা করে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ উন্মুক্ত করার জোর দাবী করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই