রাত গভীর হলেই শহরের রাস্তা দখল করে বেওয়ারিশ কুকুর !

ঝালকাঠিতে বেওয়ারিশ কুকুরে কামড়ানো রোগীর সংখ্যা আশংকাজনক ॥ জানুয়ারী মাসে আড়াইশ জনের টিকা গ্রহন

ঝালকাঠিতে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রুপ ও কামড়ানো রোগীর সংখ্যা আশংকা জনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮/১০ জন বেওয়ারিশ কুকুরের দংশনের শিকার হয়ে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে প্রতিশেধক টিকা গ্রহন করতে হাজির হচ্ছে। চলতি বছরের প্রথম মাসে নারী-শিশু সহ প্রায় আড়াই শতাধিক মানুষ বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ের শিকার হয়ে প্রতিশেধক টিকা নিয়েছে বলে জলাতংক প্রতিশেধক টিকা রেজিষ্টার সূত্রে জানা গেছে।

তবে সরকারী হাসপাতালের বাইরেও জেলার ৪টি উপজেলার প্রায় সমসংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হলেও তারা প্রইভেট ভাবে চিকিৎসা গ্রহন করেছে বলের বেসরকারী একটি সূত্র জানিয়েছে। বেসরকারী ওষূধের দোকানগুলোতে কুকুরে কামড়ানো প্রতিশেধক ভেকসিনের মূল্য অত্যন্ত চড়া হওয়ায় সরকারী ভেকসিনের উপরের মূল চাপ পরছে বলে জানা গেছে।

সরকারী উদ্দোগের অভাব ও পৌরসভার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারনে সাধারন মানুষের বসবাসকৃত জনপদে বেওয়ারিশ কুকুরে সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেছেন চলছে সূত্র জানিয়েছে।

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে জলাতংক প্রতিশেধক টিকা রেজিষ্টার সূত্রে জানা গেছে, জানুয়ারীর ১ তারিখ থেকে কুকুরের কামরের শিকার হয়ে জলাতংক প্রতিশেধক টিকা নিয়েছে ১ জানুয়ারী ৭ জন, ২ তারিখ ৫ জন, ৩ তারিখ ১৪জন, ৪ তারিখ ৪জন, ৫ তারিখ ৯ জন, ৬ তারিখ ৯জন, ৭ তারিখ ৮ জন, ৮ তারিখ ১০ জন, ৯ তারিখ ৭ জন, ১০ তারিখ ৮ জন, ১১তারিখ ১৪ জন, ১২ তারিখ ৭ জন, ১৩ তারিখ ১০ জন, ১৪ তারিখ ৫ জন, ১৫ তারিখ ৮ জন, ১৬ তারিখ ৫ জন, ১৭ তারিখ ১৬ জন, ১৮ তারিখ ৯ জন, ১৯ তারিখ ৮ জন, ২০ তারিখ ৯ জন, ২১ তারিখ ১১ জন, ২২ তারিখ ৯ জন, ২৩ তারিখ ৬ জন, ২৪ তারিখ ৭ জন, ২৫ তারিখ ১৫ জন, ২৬ তারিখ ৮ জন, ২৭ তারিখ ৯ জন, ২৮ তারিখ ১০ জন, ২৯ তারিখ ৮ জন, ৩০ তারিখ ১১ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছে।

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানান, কোন ব্যক্তিকে কুকুর কামড়ালে জলাতংক প্রতিশেধক টিকার প্রথম ডোজ নেয়ার ৩ দিন পর ২য় ডোজ, ৭দিন পর ৩য় ডোজ ও ২৪ দিন পর ৪র্থ ডোজ টিকা নিতে হয়। বর্তমানে সিভিল সার্জন কার্যালয়, সদর হাসপাতাল ও পৌরসভায় পর্যাপ্ত কুকুরে কামড়ানো ও জলাতঙ্ক রোগের প্রতিশেধক ভেকসিনের মজুদ রয়েছে। তাই জেলা যে কোন স্থান থেকে কুকুর কামড়াড়েল রোগীরা সরকার নির্ধারিত ২৪০টাকা মূল্যেই সম্পূর্ন কোর্স ভেকসিন সংগ্রহ করতে পারছে। তবে প্রতিদিন যে হারে কুকুরে কামড়ানো রুগী আসছে তাতে বেওয়ারিশ কুকুর নিধন কার্যক্রম বাস্তবায়ন না করলে অচিরেই মৌজুত হ্রাস পাবে।

ওষুধ ব্যবসায়ীদের একটি সুত্র জানায়, বর্তমানে ওষুধ ব্যবসায়ীদের দোকানে ৩ ধরনের প্রতিশেধক ভেকসিন রয়েছে যার মূল্য খুবই চড়া। এরমধ্যে ভারতের রেবিপুর ৬শ৪০টাকা পিচ হিসাবে কুকুরে কামড়ানো রোগীর ফুল কোর্স ৫টি ভেকসিন ৩হাজার ২শ টাকা, ফ্রান্সের ভেরোরাব ৬শ৪০টাকা পিচ হিসাবে ফুল কোর্স ৩হাজার ২শ টাকা ও দেশী এষ্টিরেভিক্স ৫শ টাকা পিচ হিসাবে ২৫শ টাকা দাম রয়েছে। তাই তাদের কাছে আক্রান্ত রোগীরা আসলে সাধারনত হাসপাতাল থেকে ভেকসিন সংগ্রহের জন্য পাঠিয়ে দেন। আর সামর্থবান কিছু রোগী যারা কোথাও ধর্না দিতে চাননা তারাই তাদের কাছ থেকে ফুল ডোজের টিকা সংগ্রহ করে থাকেন।

বর্তমান পৌরসভার কয়েকজন কাউন্সিলর জানায়, নিয়মানুযায়ী বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রুপ ও কামড়ানো রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে পৌর কর্তৃপক্ষের উদ্দোগে কুকুর নিধন করার বিধান রয়েছে। কিন্তু ঝালকাঠি পৌর এলাকায় দু/এক বছরে কুকুর নিধন অভিযান পরিচালিত না হওয়ায় প্রতিদিন রাত বাড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে শুরু হয় বেওয়ারিশ কুকুরের মহড়া। রাত গভীর হলেই শহরের রাস্তাগুলো চলে যায় কুকুরের দখলে। জরুরী ভিত্তিতে এ বিষয়ে দৃষ্টি দেয়া উচিত।



মন্তব্য চালু নেই