মেয়র গফুর হত্যাকান্ড :

জড়িত সন্দেহে আরও দুজন গ্রপ্তার

রাজশাহী: রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা পৌর মেয়র আব্দুল গফুর সরকারের নিহতের ঘটনায় সন্দেহভাজন আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পবা থানা পুলিশ।

নওহাটা মেয়র আব্দুল গফুর সরকারের খুনের সঙ্গে জড়িত কথিত ডা. মীমের দেয়া তথ্যে গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে পবা থানা পুলিশ দুই জনকে গ্রেপ্তার করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মেয়র গফুরের জন্মস্থান শ্রীপুর গ্রামের মৃত জান মোহাম্মাদের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (২৮) এবং মথুরা গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে রুবেল হোসেন (২৬)।

আজ রোববার আদালতে আটককৃতদের ৫দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত ৩ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন। আসামীদের রোববার আদালতে নিয়ে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। রাজশাহী আদালত ৪ এর বিচারক ছানাউল্লাহ ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পবা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং এ মামলার তদন্তকারী অফিসার আবুল কালাম আজাদ বলেন, শ্রীপুর গ্রামের আশরাফুল ইসলাম নওহাটায় ডা. মীমের ছায়াগ্রাম এনজিও-তে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করতো। ডা. মীমের অনেক ঘটনার সঙ্গে সে জড়িত এবং জানতো। ডা. মীম তার স্বীকারোক্তিতে বলেছেন ঢাকায় আজিমপুর গোরস্থানে আব্দুল গফুরের দাফনের সময় গ্রেপ্তার দুই জন অংশ নেয়।

তিনি আরও বলেন, মীমের দেয়া তথ্য মতে শনিবার রাতে দুই জনকে আটক করা হয়। মেয়র নিখোঁজের ঘটনায় নওহাটায় সভা, সমাবেশ ও মানবববন্ধনসহ সব ধরনের সংবাদ গ্রেপ্তারকৃত দুই জন মীমকে জানাতো। এরা খুনের সঙ্গে জড়িত না থাকলেও লাশ গুমের সাথে জড়িত নিঃসন্দেহে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন মেয়র আব্দুল গফুর। গত ২ জানুয়ারি পর্যন্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগও হয় তার। এরপর আর যোগাযোগ না হওয়ায় চলতি বছর ১৯ জানুয়ারি মেয়রের স্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা পারুল বাদি হয়ে পবা থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন।

মাঝে বিভিন্ন সময় তার ব্যবহৃত মোবাইল থেকে ছেলের মোবাইলে যোগাযোগ করে অজ্ঞাত দুই ব্যক্তি। মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করে ৫০ হাজার টাকা। একই সঙ্গে তার হয়ে চিঠিও পাঠানো হয় পৌরসভায়।

পরে এ ঘটনায় ঢাকা থেকে আটক হন মেয়র কথিত প্রেমিকা ডা. জান্নাতুন সালমা মীম। পরে ৩১ জানুয়ারি ঢাকা ও নওগাঁ থেকে মীমের দু’বোন জান্নাতুন নাইম ও জান্নাতুন ফেরদৌসকে আটক করে পুলিশ।

এর আগে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে ডা. মিম মেয়র আব্দুল গফুরকে হত্যার দায় স্বীকার করেন। পরে ৩ মার্চ দুপুরে তাদের আজিমপুর গোরস্থানে নিয়ে লাশ উত্তোলন করে পুলিশ। দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার সকালে লাশ নওহাটায় নেয়া হয়।

আজিমপুর গোরস্থানের রেজিস্ট্রারে উল্লেখ রয়েছে, গত ৩ জানুয়ারি মারা গেছেন মেয়র গফুর। আর তার লাশ দাফন করা হয় এর তিনদিন পর ৬ জানুয়ারি। এর আগে লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে রাখা ছিলো।

দাফনের সময় ডা. মীম মেয়র গফুরকে তার ভাই হিসেবে পরিচয় দেয়। যদিও বড়বোন ডা. জান্নাতুন সালমা মীমের সঙ্গে মেয়র আবুল গফুরের অনৈতিক সম্পর্ক ছিলো বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আরো পড়ুন :

মেয়রকে হত্যার পর নিজ ভাই পরিচয়ে দাফন



মন্তব্য চালু নেই