জোর করে প্রকাশ্যে স্নান করাতেন ছাত্রীদের, রাত্রে করতেন নিগ্রহ! শিক্ষকের কুকীর্তি ফাঁস

এক জন ছাত্র বা ছাত্রীর জীবনে তার শিক্ষক-শিক্ষিকার ভূমিকা অভিভাবকের তুল্য। কিন্তু কোনও কোনও শিক্ষক নিজের দায়িত্ব ভুলে গিয়ে হয়ে ওঠেন শিক্ষার্খীর সর্বনাশের কারণ। সম্প্রতি সে রকমই এক ভয়াবহ দৃষ্টান্তে প্রকাশ্যে এসেছে। জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের অউরঙ্গাবাদের নিকটবর্তী বিড় জেলার একটি আবাসিক স্কুলে এক শিক্ষকের হাতে নিয়মিত লাঞ্ছিত হতে হতো স্কুলের ছাত্রীদের।

সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এই উচ্চ-প্রাথমিক স্কুলে প্রায় ১২০ জনের মতো ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করে। স্কুলে ছেলে ও মেয়েদের স্বতন্ত্র হোস্টেলের বন্দোবস্ত রয়েছে। আট জন শিক্ষক রয়েছেন স্কুলে, কোনও শিক্ষিকা নেই। শিক্ষকদের মধ্যেই এক জনের হাতে ছাত্রীদের নিয়মিত লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছে।

ঠিক কী ঘটেছে? জানা যাচ্ছে, অভিযুক্ত শিক্ষক বিগত পাঁচ মাস ধরে ছাত্রীদের নিগ্রহ চালাচ্ছিলেন। তিনি প্রতি দিন নাবালিকা শিক্ষার্থীদের জোর করে প্রকাশ্যে এবং তাঁর চোখের সামনে বিবস্ত্র হয়ে স্নান করতে বাধ্য করতেন। কেউ আপত্তি করলে জুটতো মারধর। শুধু তা-ই নয়, প্রতি রাত্রে যৌন নিগ্রহ ঘটাতেন ছাত্রীদের।

অন্যান্য ছাত্রী বিষয়টি মুখ বুঝে সহ্য করে গেলেও ক্লাস সেভেনের এক শিক্ষার্থী ‘লেক লড়কি অভিযান’ নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় চিঠি লিখে ওই শিক্ষকের কুকীর্তি ফাঁস করে দেয়। সেই ছাত্রী আরও জানিয়েছে, সে বিষয়টি বাড়িতে জানিয়েছিল। তাতে তার বাবা-মা তাকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। যদিও তার বিয়ের বয়স হয়নি।

ওই সংস্থা ছাত্রীর চিঠিটি পেয়েই দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। খবর যায় প্রশাসনের কাছে। সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে সংস্থাটির সদস্যরা ওই স্কুলে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে যান। ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা নিশ্চিত হন যে, চিঠি মারফত আসা অভিযোগটি সত্য।

খবর দেওয়া হয় পুলিশেও। শিরুর থানার পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষককে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। শিক্ষকের বিরুদ্ধে পসকো (প্রোটেকশন অফ চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) আইন এবং সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বিড়ের পুলিশ সুপার সংবাদমাধ্যমকে এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা অভিযুক্ত শিক্ষককে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছি। তিনি দোষ স্বীকার করেছেন। আমরা শীঘ্রই তাঁকে গ্রেফতার করব।’



মন্তব্য চালু নেই